সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

জুন, ২০২০ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

প্রবন্ধঃ ব্যক্তিগত মৃত্যুশোক ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

‘মরণ রে, তুঁহুঁ মম শ্যামসমান                                          মেঘবরণ তুঝ, মেঘজটাজূট, রক্তকমলকর, রক্ত-অধরপুট, তাপবিমোচন করুণ কোর তব   মৃত্যু-অমৃত করে দান’।                         [ মরণ: কড়ি ও কোমল ] মৃত্যু, সর্বজনবিদিত সত্য। সব মিথ্যা হলেও, এর থেকে চরম আর কোনো সত্য থাকতে পারে না। কিন্তু এ-কথার ভার বহন করা অত্যন্ত জটিল। মানুষ যেমন জন্মগ্রহণ করেছে; ঠিক তদ্রুপ তাকে আবার বিদায় নিতে হবে। মৃত্যুর রূপ তারপরও মানুষের চিত্রে এসে ফু’টে উ’ঠে; সৌন্দর্য বিকাশ যেন তার মননে গেঁথে থাকে আপন সুরে। মানুষ যে জীবন নিয়ে মগ্ন থেকেছে তা কিন্তু নয়। মৃত্যু যে তার ভাবনাতে কখনও ছায়া ফেলেনি; তা কিন্তু বলা যাবে না। আলো ও রৌদ্র ছায়ার মতো তার সাথে মিশে ছিল ভাবনার জগতে। জন্মগ্রহণের পর থেকে সেও নিরন্তর এগোতে   থাকে সেই কোমল ছায়ার দিকে; যা একদিন তাকে ছুঁয়ে যাবে উজ্জ্বল দিন বা মাঘের হিমশীতলে বা নির্জন দুপুরে। আমাদের মানবজীবনের মৃত্যুচিন্তা থেকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৬১-১৯৪১) যে, খুব বেশী দূরে ছিলেন তা কিন্তু নয়। রবীন্দ্রনাথের ভাবনায়, কল্পনায়, চিন্তায় মৃত্যু যে বিলাসিতার রূপ হ’য়ে এসেছে তা কিন্তু নয়

কবিতাঃ নিঃসঙ্গ হৃদয়

  ফিরে ফিরে বাতাসের কানে আসে কোমল সুর, যা কিছু আমার আপন ব’লে   মনে হয়, দু’চোখে গেঁথে থাকে উজ্জ্বল সৌন্দর্য, আমার মৌলিক ভাবনায়,   শুভ্র শ্রাবণ জলে কেঁপে উ’ঠে হারানো উষ্ণতা, অবিরত সময়ের সাথে আমাকে   নিয়ে যায় স্বপ্নজলে-ভাবনার একান্ত গভীরে; শোভাময় আমার নিসর্গের প্রবাহিত   ধারা অনন্ত চিন্তায় তাকে বাঁচিয়ে রাখি উজ্জ্বল সবুজে; প্রত্যহ হারিয়ে যাই অস্ত   দিগন্তের শেষ সীমায়, যেখানে অলৌকিক ব’লে কিছু নেই শূন্য অতীন্দ্রিয়   পবিত্র বাস্তবতায়, যাকে আমি রোপণ করি অত্যন্ত আদরে, আঙুলের ছোঁয়ায়   সেও মিশে থাকে শব্দের আদি ও অন্তে, গভীর আলিঙ্গনে ব্যক্তিগত সৌন্দর্য   বিছিয়ে দিই নিসর্গের মায়াবী টেবিলে, নীল স্মৃতি খেলে যায় পলিমাটির বু’কে;   বিষাক্ত হৃদয়ে বেড়ে উ’ঠে লাল-নীল-সবুজ স্বপ্ন আমার কারুকার্যময় কবিতার   পঙক্তিতে, শতাব্দীর তীব্র আবেগে হাহাকার ক’রে উ’ঠে আমার শিল্পকলার   সৌন্দর্যমণ্ডিত সমস্ত শ্লোক রূপান্তরিত বাস্তবতায়, রক্তগোলাপে ছড়িয়ে প’ড়ে       মুহূর্তেই পাঁচ আঙুল ভেদ ক’রে স্পর্শের প্রোজ্জ্বলে, সমস্ত কোমলতা বিছিয়ে   দিই নীল আকাশে, ভেঙে যাচ্ছে বসন্তের সম্পর্ক লাল আগুনের মত বিবর

কবিতাঃ অসমাপ্ত, একটি ব্যর্থ সংলাপ

সমবেত সকলে পদধ্বনি দিবেন ! আপনাদের পদধ্বনি আজ একান্তই কাম্য উদ্বেল আবেগে,   অনেক কথাই বলা হবে, মার্ক্স-লেলিন আর রবীন্দ্রনাথ থেকে   সমাজ, রাষ্ট্র, সভ্যতা আর তাঁদের আগামী দিনের স্বপ্নগুলো কত গভীরে যাবে;                   তা আজ এখান থেকেই নির্ধারিত হবে,   যে স্বপ্নগুলো বেঁচে থাকবে তাঁদের বু’কের গভীরে, আপন সত্ত্বায়- তাঁদের জ্যোতির্ময় পথে আমরা আলো জ্বালিয়ে দিব অনন্তকালের জন্য, নাকি গোলাপ ফুলের পথ বিছিয়ে দিব তাও নির্ধারিত হবে কঠিন শপথে;     সমস্ত কিছু ভেঙে চুরমার ক’রে আবার নতুন কিছু হবে কিনা তাও বলা হবে সহস্র স্বপ্ন নাকি আমাদের জীবনে সংগীত হ’য়ে ফু’টে উঠবে নিত্য              দিনের সাথে আজ ও আগামীতে চন্দ্রমল্লিকার বনে-বনে,     প্রাজ্ঞজন বলে উঠলেন- কেউ কোন উত্তর করলো না, নীরবে শুনে গেলেন   ক্ষণে-ক্ষণে স্বপ্ন ভাঙে আবার বিকালের আগেই তা মিশে যায় ভাবনার সাথে নীল হ’য়ে প্রতিমুহূর্তে, কেউ একজন এ-রকম বললেন মনে হলো,     আমি তাকিয়ে থাকি স্বার্থপর কিছু মানুষের দিকে, যারা শুধু                 শব্দই করতে জানে অদ্ভুত চিৎকারে, দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে-ছেড়ে, যারা সুন্দরের কোনো অর্থই জ

কবিতাঃ কিছুই ভাবিনি তোমাকে নিয়ে

কিছুই ভাবিনি তোমাকে নিয়ে, অন্যরা যেভাবে ভেবে থাকে রক্তের গভীরে                       আমি তাঁদের মতো ক’রে ভাবিনি স্বপ্ন ও বাস্তবতায়;       আমার ভাবনার জগতে তোমাকে আমি গেঁথে রাখি গভীর ক’রে-   আপন আর পরম সম্পর্কে, উষ্ণ ভালোবাসা জমা থাক তাঁদের জন্য যারা আমার রক্তে মিশিয়ে দিয়েছে বিচ্ছেদের করুণ সুর, স্পর্শময় আঙুলে গেঁথে থাকে               নীলবীথি গভীর শূন্যলোকে নিসর্গের বিষাক্ত ছোঁয়ায় তীব্রভাবে; আমার সবুজ বু’কে ব’য়ে চলে পালতোলা নৌকা তার আপন গন্তব্যেয়-         কালমেঘ আর শিশিরের স্তব অনেক গেয়েছি আমার সমস্ত কবিতায়,       গলিত চাঁদের সৌন্দর্য খ’সে গেছে অনেকবার তোমাকে ভালোবেসে   কবিতার পঙক্তি থেকে, গাঢ় মেঘমালার মায়াবী সেই জ্যোতির্ময় আঁখিতাঁরায় তোমাকেই তো নিসর্গমালা বিছিয়ে দিলাম দু’চোখের ভিতর, চন্দনের সুবাতাস         ব’য়ে গেল পলিমাটি ভেদ ক’রে গভীর রাত্রিতে নক্ষত্রপুঞ্জের দিগন্তে; রোদনরূপসী তুমি আমার হৃদয়স্পন্দনে, উজ্জ্বল রৌদ্রে ঝ’রে প’ড়ে সবুজ পাতা               স্মৃতির ঐশ্বর্যে লুকিয়ে থাকে বিস্ময় আমার উজ্জ্বল সমতলে;   বিস্ময় জাগায় ভাবনার চিত্তে, উজ্জ্বল আঙুলে মিশে থা

কবিতাঃ বৃষ্টির শব্দ

আকাশ ভেঙে বৃষ্টি নামলো বাঙলার সবুজ অরণ্যেয় সারাদিন ধ’রে ভেসে গেল সমস্ত আবর্জনা রাস্তার মসৃণ-নির্জন কোণ থেকে সবুজ-শ্যামল মাঠ ফোঁটায় ফোঁটায় ভ’রে গেল অঝোর ধারায়; সমস্ত সংগীতের সুর পিছে ফেলে, বৃষ্টির শব্দ ধরা দেয় আমার স্মৃতির নক্ষত্রের কানে, নিবিড় ঘন অন্ধকারে আমার মন ছুঁয়ে যায় তার শব্দে; দীর্ঘ সরোবর ভ’রে উ’ঠে কোমল ফোঁটায়, বু’কের কোণে জমানো   আবেগে রেখে যায় তার ছোঁয়া রিমঝিম শব্দে, গভীর জলাধারে অবিরত             ঝ’রে প’ড়ে বৃষ্টির ফোঁটা, নিবিড় সন্ধ্যায় আমার দৃষ্টিতে দেখি তাকে অশ্রুর কোণে ফিরে-ফিরে, চন্দ্রমল্লিকার বনে আজও ফু’টে উ’ঠে সেই ফুল নিটোল ফোঁটায় শ্রাবণ মাসে, কালো বৃষ্টি, নীল বৃষ্টির শব্দে ভ’রে উ’ঠে     বাঙলার মাঠ, সব নদনদী আর টলোমলো ঢেউ, আমার হৃদপিণ্ডে বেড়ে উ’ঠে উজ্জ্বল সোনালী আভা তার কারুকার্যময় শব্দে, নিসর্গের অলৌকিক            চিত্রে ফু’টে উ’ঠে দু’চোখ ভ’রে সেই শব্দ মৌলিক ভাবনায়, নিদ্রাহীন   রাত কেটে যায় শব্দের গভীরে, জ্যোৎস্নার সাথে আপন হ’য়ে মিশে থাকে   গভীর বৃষ্টির শব্দ, রাত্রি নামে, নিবিড় ঘুম ভর ক’রে ঝরা বৃষ্টির শব্দে।