‘মরণ রে, তুঁহুঁ মম শ্যামসমান মেঘবরণ তুঝ, মেঘজটাজূট, রক্তকমলকর, রক্ত-অধরপুট, তাপবিমোচন করুণ কোর তব মৃত্যু-অমৃত করে দান’। [ মরণ: কড়ি ও কোমল ] মৃত্যু, সর্বজনবিদিত সত্য। সব মিথ্যা হলেও, এর থেকে চরম আর কোনো সত্য থাকতে পারে না। কিন্তু এ-কথার ভার বহন করা অত্যন্ত জটিল। মানুষ যেমন জন্মগ্রহণ করেছে; ঠিক তদ্রুপ তাকে আবার বিদায় নিতে হবে। মৃত্যুর রূপ তারপরও মানুষের চিত্রে এসে ফু’টে উ’ঠে; সৌন্দর্য বিকাশ যেন তার মননে গেঁথে থাকে আপন সুরে। মানুষ যে জীবন নিয়ে মগ্ন থেকেছে তা কিন্তু নয়। মৃত্যু যে তার ভাবনাতে কখনও ছায়া ফেলেনি; তা কিন্তু বলা যাবে না। আলো ও রৌদ্র ছায়ার মতো তার সাথে মিশে ছিল ভাবনার জগতে। জন্মগ্রহণের পর থেকে সেও নিরন্তর এগোতে থাকে সেই কোমল ছায়ার দিকে; যা একদিন তাকে ছুঁয়ে যাবে উজ্জ্বল দিন বা মাঘের হিমশীতলে বা নির্জন দুপুরে। আমাদের মানবজীবনের মৃত্যুচিন্তা থেকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৬১-১৯৪১) যে, খুব বেশী দূরে ছিলেন তা কিন্তু নয়। রবীন্দ্রনাথের ভাবনায়, কল্পনায়, চিন্তায় মৃত্যু যে বিলাসিতার রূপ হ’য়ে এসেছে তা কিন্তু নয়