সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

নভেম্বর, ২০২১ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

বনফুলের কিশোর গল্প

রবীন্দ্রনাথের হাতে বাংলা ছোটগল্পের যে বিস্তৃত পরিবর্তনের ছোঁয়া লাগলো, তার উজ্জ্বল সৌন্দর্য যেন আজও আমাদের বিমোহিত ক’রে তোলে। তার পরবর্তীতে; যে কজন সেই আলোর পথে এগিয়েছেন তাঁদের কথামালা নিয়ে, বনফুল তাঁদের মধ্যে অন্যতম। ছোটগল্প সৃষ্টির ক্ষেত্রে, তিনি নিজস্ব এক জীবন দৃষ্টির পরিচয় দিয়েছেন। বাক্যের সংক্ষিপ্ততা,  ভাবানুষঙ্গে অনির্বচনীয় রহস্যকরতা, পরিহাস-রসিকতা তাঁর রচিত ছোটগল্পের প্রাণ বলে আমরা মনে করি। এখানে আমরা আরও বলে নিতে পারি, বাক্যের সংক্ষিপ্ততা এবং অনুষঙ্গ জীবনদৃষ্টির কারণে তাঁর রচনাকে হঠাৎ ক’রে অকিঞ্চিৎকর বলে মনে হতে পারে। সাম্প্রতিককালে, বাংলাসাহিত্য সম্পর্কিত আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গির সাহিত্য সমালোচনায় বনফুলের সাহিত্য কিছুটা ম্লান মনে হ’তে পারে। শ্রীকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো প্রাজ্ঞ সমালোচকও একই ধরনের ভ্রান্তির ভুক্তভোগী হয়ে লিখেছিলেন, ‘ তিনি ছোটগল্পের শিল্পরূপ ও ঘটনা বিন্যাসের যথার্থতা লইয়া বিশেষ মাথা ঘামান নাই। স্বল্পতম পরিসরের মধ্যে ইহার অন্তর্নিহিত পরিহাসটুকু ব্যক্ত করিয়া, অতর্কিতের ধাক্কায় পাঠককে খানিকটা চকিত করিয়া, গল্প শেষ করিয়াছেন। কথামালা, হিতোপদেশ প্রভৃতি প্রাচীন গল্প সংগ্রহ

বনফুলের সাহিত্যঃ সহজ ভাবনার সংমিশ্রণ

  বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায় (১৮৯৯-১৯৭৯) একজন বাঙা লি   কবি , কথাশিল্পী , নাট্যকার , প্রবন্ধকার। সাহিত্য জগতে তিনি  ‘বনফুল’ ছদ্মনামে বেশি পরিচিত। তাঁর জন্ম ১৮৯৯ সালের ১৯ জুলাই বিহারের পূর্ণিয়া জেলার মণিহারী গ্রামে। বলাইচাঁদের পূর্বপুরুষদের আদি নিবাস ছিল হুগলি জেলার শিয়ালখালায়। পিতা সত্যচরণ মুখোপাধ্যায় ছিলেন পূর্ণিয়া জেলার মণিহারী ডিস্ট্রিক্ট বোর্ড হাসপাতালের ডাক্তার। মাতা মৃণালিনী দেবী। বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায় পূর্ণিয়ার সাহেবগঞ্জ স্কুল থেকে ১৯১৮-তে ম্যাট্রিক এবং হাজারিবাগের সেন্ট কলম্বাস কলেজ থেকে ১৯২০-এ আইএসসি পাশ করেন। একই বছরে তিনি কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হন। তবে তিনি যখন   ষষ্ঠ বার্ষিক শ্রেণিতে পড়েন , তখন বিহারের পাটনায় মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। বিহার থেকে আসা ছাত্র হিসেবে তিনি এ নব প্রতিষ্ঠিত কলেজে স্থানান্তরিত হন এবং সেখান থেকে এমবিবিএস পাস করেন ১৯২৮-এ। বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায় কর্মজীবন শুরু করেন কলকাতার একটি বেসরকারি ল্যাবরেটরিতে নিয়োগ লাভের মধ্য দিয়ে। পরে মুর্শিদাবাদের আজিমগঞ্জের মিউনিসিপ্যালিটি হাসপাতালে মেডিক্যাল অফিসার পদে কিছুকাল দায়িত্ব পালন করেন। তবে তিনি ভাগলপু

প্রেমেন্দ্র মিত্রঃ ছোট গল্পের ছোট কথা

  প্রেমেন্দ্র মিত্রের বাংলা কথাসাহিত্যে প্রবেশ যেমন নাটকীয়, তেমনি আকস্মিক ও বলা যায়। প্রেমেন্দ্র মিত্রের জীবনীকার শ্রীমতী সুমিতা চক্রবর্তীর আলোচনা থেকে জানা যায়, তিনি ঢাকায় জগন্নাথ কলেজে ইন্টারমিডিয়েট সায়েন্স পড়ার সময় কলকাতা এসে ‘২৮নং গোবিন্দ ঘোষাল লেনের’ মেস বাড়িতে থাকেন। সেই সময় সমস্ত বর্ডাররাই ছুটিতে বাড়িতে চলে গেছেন। খালি মেঘের ঘরের জানালায় গোঁজা একটি পোস্টকার্ড লেখকের হাতে আসে। চিঠির বিষয়বস্তু এক নববিবাহিতা নারীর প্রবাসী স্বামীকে লেখা সামান্য কয়েকটি কথা, যা পাথেয় করে রাতারাতি প্রেমেন্দ্র লিখে ফেলেন দু’টি ছোটগল্প ‘শুধু কেরানী’ ও ‘ গোপনচারিণী ’। এর পরবর্তী অধ্যায় এক প্রসারিত জীবনের। একের পর এক ছোটগল্পের সংকলন যেমন প্রকাশিত হয়েছে; তেমনি কাব্যগ্রন্থ ও উপন্যাস রচনাতেও তিনি রেখেছেন মৌলিকতার স্বাক্ষর। কল্লোলে’ র নতুন ধারায় রচনা শৈলীর তিনি ছিলেন এক অগ্রগণ্য কারিগর। অভিনব বিষয়বস্তু, সুক্ষ্ম ভাবাবেগ, নাটকীয়তা ও স্বাভাবিক সুলভ উপস্থাপনা-এ সবই তাঁর রচনার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হ’য়ে ধরা পড়ল। প্রবাহিত এক জীবনে বহু রকমের জীবিকার সঙ্গে পরিচিতির সুত্রে কখনও তিনি স্কুল মাস্টার, বিজ্ঞাপন লেখক, পত্রিকা স