সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

কবিতাঃ অসমাপ্ত, একটি ব্যর্থ সংলাপ


সমবেত সকলে পদধ্বনি দিবেন !
আপনাদের পদধ্বনি আজ একান্তই কাম্য উদ্বেল আবেগে,  
অনেক কথাই বলা হবে, মার্ক্স-লেলিন আর রবীন্দ্রনাথ থেকে 
সমাজ, রাষ্ট্র, সভ্যতা আর তাঁদের আগামী দিনের স্বপ্নগুলো কত গভীরে যাবে;  
               তা আজ এখান থেকেই নির্ধারিত হবে,  
যে স্বপ্নগুলো বেঁচে থাকবে তাঁদের বু’কের গভীরে, আপন সত্ত্বায়-
তাঁদের জ্যোতির্ময় পথে আমরা আলো জ্বালিয়ে দিব অনন্তকালের জন্য,
নাকি গোলাপ ফুলের পথ বিছিয়ে দিব তাও নির্ধারিত হবে কঠিন শপথে;   
সমস্ত কিছু ভেঙে চুরমার ক’রে আবার নতুন কিছু হবে কিনা তাও বলা হবে
সহস্র স্বপ্ন নাকি আমাদের জীবনে সংগীত হ’য়ে ফু’টে উঠবে নিত্য
             দিনের সাথে আজ ও আগামীতে চন্দ্রমল্লিকার বনে-বনে,   
প্রাজ্ঞজন বলে উঠলেন- কেউ কোন উত্তর করলো না, নীরবে শুনে গেলেন  
ক্ষণে-ক্ষণে স্বপ্ন ভাঙে আবার বিকালের আগেই তা মিশে যায় ভাবনার
সাথে নীল হ’য়ে প্রতিমুহূর্তে, কেউ একজন এ-রকম বললেন মনে হলো,   
আমি তাকিয়ে থাকি স্বার্থপর কিছু মানুষের দিকে, যারা শুধু
               শব্দই করতে জানে অদ্ভুত চিৎকারে, দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে-ছেড়ে,
যারা সুন্দরের কোনো অর্থই জানে না, মৌলিক কোনো ভাবনা জেগে উ’ঠে না
তাঁদের আপন জগতে শিশিরের বাতাসে, ধ্বংসস্তূপে জমা হয় নষ্ট ভবিষাৎ
                   যাঁদের কাছে সকাল আর সন্ধ্যার ব্যবধান একই রকম;    
উৎকৃষ্ট কিছু আছে বলে তা ভুলে গেছে মন থেকে, হৃদয়ের গভীর নীলে
        নষ্ট চোখে গেঁথে থাকে নিঃস্বার্থ অতীন্দ্রিয় সম্পর্ক প্রোজ্জ্বল দৃঢ় বিশ্বাসে,
হঠাৎ কে একজন কথার ঐন্দ্রজালিক ছড়ালেন একশো কোটি আলো শিখার মতো-   
মুক্তি, শান্তি আর পরাধীনতার কথা বলে উপস্থিত সকলের দৃষ্টি নিলেন
আপন সার্থকতায়, উচ্ছ্বাসের ছড়াছড়িতে যেন ভ’রে উঠলো চতুর্দিক,
বিশ্বের সমস্ত নিষ্ঠুরতা যেন কেঁপে কেঁপে ধরা দেয় তাঁর অমল আঙুলে  
শত শতাব্দীর অনেক ঘটনা তিনি একাই প্রকাশ করলেন বিদ্রোহের সুরে;
দু’চোখের ভেতর গেঁথে থাকলো অগ্নিশিখা, নিবিড় সন্ধ্যায়
চৈতন্যের সমস্ত কিছু জ্যোতির্ময় আলোতে ফু’টে উঠলো প্রাগৈতিহাসিক গর্ভে;  
সবচেয়ে নির্বাচিত যিনি, অনুপস্থিত আজ, নীল সন্ধ্যায় সুচতুরভাবে
সমস্ত আয়োজন ব্যর্থতায় পর্যবসিত হ’য়ে উঠে যুক্তিহীনভাবে, দীর্ঘশ্বাসে।  
     


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

প্রবন্ধঃ বুদ্ধদেব বসু ও ‘কঙ্কাবতী’

বুদ্ধদেব বসু প্রেমের অজস্র কবিতা রচনা করেছেন । অন্য অনেকের মতো তিনিও বেছে নেন একজন প্রেমিকাকে , যে হ ’ য়ে উঠে বুদ্ধদেবের অতুল্য প্রেমিকা হিশেবে । ‘ কঙ্কাবতী ’ অনিন্দ্য প্রেমিকা হ ’ য়ে বুদ্ধদেবের কাব্যতে বিচরণ ক ’ রে স্বচ্ছন্দে । স্থির হয়ে বসে পড়ে কঙ্কাবতী ’ কাব্যগ্রন্থে । যে কাব্যগ্রন্থে ‘ কঙ্কাবতী ’ দেখা দেয় অনৈসর্গিক হয়ে । ‘ কঙ্কাবতী ’ কাব্য রচনার পূর্বে ‘ কঙ্কাবতীকে ’ দেখা দেয় অনৈসর্গিক হয়ে । ‘ কঙ্কাবতী ’ কাব্য রচনার পূর্বে কঙ্কাবতীকে আমরা দেখতে পাই অন্য কোনো কবিতায় । যেখানে সে প্রেমিকার কাছে হয়ে ওঠে কুৎসিত কঙ্কাল ব্যতীত অন্য কিছু নয় । প্রগাঢ় ভাবে প্রাপ্তির জন্যে সমস্ত কবিতা জুঁড়ে দেখতে পাই কবির অপরিবর্তনীয় আবেদন । কঙ্কাবতী , যাঁর সাথে কিছু বাক্য বিনিময়ের জন্যে রক্তের হিমবাহে দেখা দেয় চঞ্চলতা । সুপ্রিয়া প্রেমিকা মুখ তোলা মাত্র কবি হাঁরিয়ে ফেলেন ওই সৌন্দর্যময় বাক্যগুলো , যা বলার জন্যে অপেক্ষায় ছিলেন কবি দীর্ঘদিন । প্রেমিকা যখন খুব কাছাকাছি হয়ে এগিয়ে আসেন , ওই ব্যর্থ ...

প্রবন্ধঃ অমিয় চক্রবর্তী : ‘বৃষ্টি’ নিয়ে তিনটি কবিতা

রবীন্দ্রনাথ, মেঘ-বরষা বৃষ্টি নিয়ে এতো সংখ্যক কবিতা লিখেছেন যে তাঁর সমান বা সমসংখ্যক কবিতা বাঙলায় কেউ লিখেনি। রবীন্দ্রনাথ, যাঁর কবিতায় বার বার এবং বহুবার ফিরে ফিরে এসেছে মেঘ, বরষা, বৃষ্টি। বৃষ্টি নামটি নিলেই মনে পড়ে কৈশোর পেড়িয়ে আসা রবীন্দ্রনাথের ওই কবিতাটির কথা। ‘দিনের আলো নিবে এল সূর্য্যি ডোবে ডোবে আকাশ ঘিরে মেঘ জুটেছে চাঁদের লোভে লোভে।’ বৃষ্টি নিয়ে কবিতা পড়ার কথা মনে পড়লে এটাই চলে আসে আমার মনে। অমিয় চক্রবর্তী বৃষ্টি নিয়ে লিখেছেন বেশ কিছু কবিতা। বাঙলায় বৃষ্টি নিয়ে কবিতা লিখেনি এমন কবির সংখ্যা খুব কম বা নেই বললেই চলে। অমিয় চক্রবর্তী, যাঁর কবিতায় পাই ‘বৃষ্টি’ নামক কিছু সৌন্দর্যময় কবিতা। যে কবিতাগুলো আমাকে বিস্ময় বিমুগ্ধ ক’রে। ওই কবিদের কারো কারো কবিতা দ্রুত নিঃশ্বাসে পড়া সম্ভবপর হয়ে উঠে না। বৃষ্টি নামক প্রথম কবিতাটি পাওয়া যাবে অমিয় চক্রবর্তীর ‘একমুঠোতে’। উন্নিশটি কবিতা নিয়ে গ’ড়ে উঠে ‘একমুঠো’ নামক কাব্য গ্রন্থটি। যেখান থেকে শ্রেষ্ঠ কবিতায় তুলে নেওয়া হয় চারটি কবিতা। আমার আরো ভালোলাগে ‘বৃষ্টি’ কবিতাটি ওই তালিকায় উঠে আসে। শ্রেষ্ঠ কবিতায় না আসলে আমার যে খুব খারাপ লাগতে তা-ও নয়। ওই কবিতা...

প্রবন্ধঃ সুধীন্দ্রনাথ দত্তের প্রবন্ধ সংগ্রহ

সুধীন্দ্রনাথ , সাতটি কাব্যগ্রন্থের মতো সাতটি প্রবন্ধের গ্রন্থ লিখলে খারাপ হতো না , বেশ ভালোই হতো । সুধীন্দ্রনাথের প্রবন্ধগুলো হালকা মানের নয় , যদিও তাঁর কোন রচনাই হালকা নয় । সাহিত্যে বিচারে তা অনেক উঁচুমানের । তার উপর ভাষার ব্যাপারটি তো রয়েছেই । সুধীন্দ্রনাথ মাত্র দুটি প্রবন্ধ গ্রন্থ রচনা করেছেন । গ্রন্থ দুটো ‘ স্বগত ’ ( ১৩৪৫ ঃ ১৯৩৮ ), অপরটি ‘ কুলায় ও কালপুরুষ ’ ( ১৩৬৪ : ১৯৫৭ ) । ‘ স্বগত ’- তে রয়েছে ষোলটি প্রবন্ধ । গ্রন্থ দুটি তিনি রচনা করেছেন দু ’ ভাগে । লরেন্স বা এলিয়ট এর প্রবন্ধ যেমন পাওয়া যাবে না ‘ কুলায় ও কালপুরুষ ’- এ ; তেমনি রবীন্দ্র সম্পর্কিত প্রবন্ধ নেওয়া হয়নি ‘ স্বগত ’- এ । প্রকাশ কাল অনুযায়ী ‘ স্বগত ’- এর প্রবন্ধসমূহ : ‘ কাব্যের মুক্তি ’ ( ১৯৩০ ); ‘ ধ্রুপদ পদ - খেয়াল ’ ( ১৯৩২ ), ‘ ফরাসীর হাদ্য পরিবর্তন ’ ( ১৯৩২ ), ‘ লিটনস্ট্রেচি ’ ( ১৯৩২ ), ‘ লরেন্স ও ভার্জনিয়া উল্ফ্ ’ ( ১৯৩২ ), ‘ উপন্যাস তত্ত্ব ও তথ্য ’ ( ১৯৩৩ ), ‘ উইলিয়ম ফকনর ’ ( ১৯৩৪ ), ‘ ঐতিহ্য ও টি , এস , এলিয়ট ’ ( ১৯৩৪ ), ...