সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

গভীরে যাও, আরো গভীরে

              তুমি ব্যর্থ নও, তোমার হাতে চালানো নৌকা তো সোজাই যাওয়ার কথা,               আমি তো অনেক কিংবদন্তীর মুখে শুনেছি এই কাজে তুমি খুব’ই দক্ষ,               তবে কেন বার-বার ব্যর্থ হচ্ছ, শক্ত ক’রে ধর, আরও শক্ত করে,              তুমি কি দক্ষ নও এই গভীর সমুদ্রের জলে নৌকা চালানোতে?              বাতাস-সে তো থাকবেই, তারপর আর কি, বলো?              ঢেউ-তার গভীর শব্দমালা কী তুমি শুনতে পাও না?              তার চিহ্নগুলো এখনও সুস্পষ্ট-চতুর্দিকে, যা কেঁপে উ’ঠে মুহূর্তে,                স্তব্ধতা-তার অর্থ তুমি কিছুই বোঝ না, ...
সাম্প্রতিক পোস্টগুলি

সম্পর্ক

  আমরা আমাদের মতো; আমরা বেঁচে থাকি জটিল সম্পর্কে, গাঢ় আর গভীর সম্পর্কে, মানুষের মধ্যে সম্পর্ক ছাড়া অন্য কোন পরিচয় নেই, সম্পর্ক-ই সব কিছুর মুল, সম্পর্ক ছাড়া কোথাও দাঁড়াবার কোনো জায়গা নেই, এই যে নাড়ীর টান, তাও কোন এক সম্পর্কে মধ্যে আটকা   পড়ে আছি, সব জায়গায় বিস্তার সম্পর্কের এক গভীর ছায়া,     আমরা আমাদের মতো বেঁচে থাকি, বেঁচে থাকি মানবিক সম্পর্কে, আলো ও অন্ধকারের মধ্যে বেঁচে থাকে আমাদের দীর্ঘদিনের লালিত সম্পর্ক, নিবিড় ভালবাসা তাও দীর্ঘ হ’তে থাকে আমাদের হৃদয়ে, রক্তের শিরায়-শিরায় প্রবাহিত হ’তে থাকে, দীপ্ত চোখের আলোয়. বিধস্ত আমার সব কিছু-চতুর্দিকে নেমে আসে কোনো এক গভীর অন্ধকার, ভালোবাসার রঙে ছায়া লাগে,   সম্পর্কের আঁচলে মুখ লুকাই, চাঁদের আলো ছায়া ফেলে যায় আমার কঠিন আঙুলে, অবসরে গান গায় ব্যর্থ মানুষ, তাঁর অতীত স্মৃতিতে-কাকে যেন ভালবেসেছিল আপন করে? হারানোর সব চিহ্ন আজ মুছে গেছে চোখের কোণ থেকে, জ্যোতির্ময় সেই স্মৃতি, প্রেমের ব্যর্থ উল্লাস এই তপ্ত বুকে, নিরুদ্ধেশ আমার সকল যাত্রা, চৈত্রের বাতাসে গেঁথে রাখি আমার সকল সম্পর্ক গভীর স্পর্শে।...

ভালোবাসি তোমাকে

  তোমাকে অনেক-অনেক ভালোবাসি, মুখ দিয়ে কখনও বলিনি, গভীর এক নীরবতার মধ্যে দিয়ে তোমার সামনে দাঁড়িয়েছি, আর বলেছি. পৃথিবীর সবচেয়ে ব্যর্থ মানুষ আমি, যে তোমার সামনে দাঁড়িয়ে আছে. তুমি সফল সমাজ- রাষ্ট্র ও সভ্যতায়, যেন বিপরীত মুখি দাঁড়ানো দুই সভ্যতার সৃষ্টি তুমি আর আমি, ভুলে যাও আজ অনেক কিছু, যা সামান্য বা অসামান্য, এটাই নিয়ম, সফলতা আমাদের অনেক কিছু ভুলে যেতে সাহায্য করে, সেই কণ্ঠস্বর, বুকের কোণে জমানো গাঢ় বিষাদ মাখা কাব্যকথা, শূন্য-ব্যর্থতা আর নিরর্থক আজ আমার দিকে, তুমি সফলতার   কিংবদন্তী, দিকে-দিকে স্লোগান মুখোর আমার চতুর্দিক ভ’রে উ’ঠে তোমার উচ্চারিত নামে, ব্যর্থ মানুষের মত পড়ে রই, যা কিছু নিস্তব্ধ-স্বরহীন গাঢ় অন্ধকার তা আমার প্রিয় হ’য়ে উ’ঠে মানবিক সম্পর্কে, তাৎপর্য নেই সেই সব কিছুতে যা ভরে উ’ঠে প্রগতিশীল সমাজে, মননশীলতা কাকে বলে তা হয়তো ভুলে গেছি, ভাবনার মত কিছু পাই না, যেখানে বেঁচে আছি সেখানে এর কোন প্রয়োজন নেই, মূল্যহীন সব কিছু, কোন একদা আমাদের আঙুলে গেঁথে ছিল নীল পদ্মের কোমল ছোঁয়া; তুমি সবুজ অরণ্য, আমি প্রসারিত বহমান নদী, বেঁচে থাকি একই ধারায় পু...

কবিতা- মূল্যহীন ব্যর্থ সময়

  মূল্যহীন সব কিছু, আমার দু’চোখ দিয়ে যা দেখতে পাই, মূল্যহীন হ’য়ে প’ড়ে রয় অন্য সব কিছু থেকে, আমার হাতে লুকিয়ে থাকে নীল পদ্ম, তাও মূল্যহীন   আজ অনেক কিছুই মূল্যহীন, আমার সময়, স্পর্শ, সম্পর্ক- সব কিছু যেন মূল্যহীন তালিকায় দীর্ঘ হ’তে থাকে, ব্যর্থ সময় জড়ো হয় আমার কোমল শিশিরে, নিরর্থক তীব্র সম্পর্ক, গভীর শরীরে, মাঘের বাতাসে লুকিয়ে থাকে আমার সকল সম্পর্ক, রোদের ঝিলিক দিয়ে ফাগুন বাতাসে হারিয়ে যায় আমার সকল স্তব্ধতা, চুপচাপ আমার চতুর্দিক, লুকিয়ে থাকে বিশাল সরোবরে আপন হ’য়ে শব্দহীন বাতাসে, কেঁপে উঠি মধ্যরাতে কঠিন দুঃস্বপ্নে, কাঁপতে থাকে হৃদপিণ্ড থেমে-থেমে, আমার ব্যর্থ সময় মিশে যায় উত্তাল আশ্বিনে, টলমলে শিশিরে,

কবিতা-মধ্যদুপুর

             সব আলো ভেঙ্গে সেই দিনের আলো শেষ হ’য়ে আসে, তারপরও অবশিষ্ট থেকে যায়,   তার সামান্য কিছু আলো, যা দিয়ে হয়তো সারা             দিনের অবশিষ্ট আলো পূর্ণ হ’য়ে উঠে না, তারপরও থেমে গেছে, থেমে গেছে পরিপূর্ণময় উজ্জ্বল আলো তার চতুর্দিকে পৃথিবীর দিকে, সম্ভাবনাময় যা কিছু ক্ষনিকের জন্য আলোর বিচ্ছুরণের দ্রুতি,   তাও নিভে আসে আমার চতুর্দিকে উদ্ভাসিত সৌন্দর্য ছিঁড়ে যেন হারিয়ে যায় চোখের কোণ থেকে; আমি তাকিয়ে থাকি, ভাবতে থাকি অনেক কিছু, অম্লান চোখে প্রস্ফুটিত তার অবারিত ধারা যেন আমার দিকেই এগিয়ে আসে,   সব কিছু পিছে ফেলে-মধ্যদুপুর গড়িয়ে ধাবিত হ’তে থাকে অজানা কোনো এক   গাঢ় অন্ধকার আমার আপন সৌন্দর্যে-নির্দিষ্ট আবর্তে, ক্ষণে-ক্ষণে উড়ে যায় রচিত নষ্ট স্বপ্ন, কি সকাল বা সন্ধ্যায়, বুকের কোণ থেকে চিরদিনের মতো হারিয়ে যায় চেনা কণ্ঠস্বর, সব চেনা রাস্তাও আমার জন্য হ’য়ে   উ’ঠে বড় অচেনা, আপন ভেবে যেখানে পা রেখেছি কোমল হয়ে, ম্লান সুরে, তাদের পথে তো আমি যাইনি, যারা আমার সৌন্দ...

প্রবন্ধ ঃ নিষিদ্ধ কবিতা

সাহিত্যের বিভিন্ন ধারার মধ্যে থেকে কবিতা-গান আর নাটকেই স্বদেশ চেতনার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে সযেন সবচেয়ে বেশি। রবীন্দ্রনাথ আর নজরুলের দিকে চোখ রাখলে সেটা যেন আরও অনেক বেশী স্পষ্ট হয়ে উঠে। গল্প ও উপন্যাসে সেই চেতনার প্রভাব রয়েছে খুবই কম। আবার এটাও দেখতে পাই যে, প্রবন্ধে তার কোন ছায়া নেই বললেই চলে। তবে অনেক সময় দেখা যায়, সেই সব প্রবন্ধে, অনেকটাই রাজনৈতিক আলোচনা নির্ভর। যেভাবে স্বদেশ চেতনার কোন উপস্থিতি নেই। আবার এটাও সত্য যে, নাটকের চেয়ে দেশাত্মবোধক গানে, সেই চেতনার প্রকাশ ঘটেছে বিভিন্ন ভাবে, বৈচিত্র্যময় রূপে। যা অতি সহজে পৌঁছে যেতে পারে মানুষের একদম মনের গভীরে। যেন ফিরে আসা কোন সুর অতি সহজে বেঁধে দিয়ে যায় তার মননে। এ-কথা বলে নিতে পারি যে, স্বদেশী আন্দোলনের যুগে, এবং তার পরবর্তী সময়ে, স্বাধীনতা সংগ্রামে প্রচারিত সেই সঙ্গীত ও কবিতায় তার প্রভাব রয়েছে অনেক বেশী। নবীন সেনের পলাশী যুদ্ধের যুগ থেকে আধুনিক কালের নজরুল, প্রেমেন্দ্র, সুকান্ত পর্যন্ত এই ধারা মিশে রয়েছে নিরবিচ্ছিন্নভাবে, বয়ে চলা কোন এক নির্দিষ্ট দিকে। নিষিদ্ধ ধারার দিক থেকে কেউ-ই যেন বাদ পড়েনি। কি কবিতা, কি গান বা উপন্যাস। সেই শুরু থেকে ...

কিশোর গল্পঃ দীপনের পেন্সিল

আমাদের ক্লাসটা কখনও এমন নীরব হয়ে উঠে না, আজ যেভাবে রয়েছে। সবাই খুব চুপচাপ। যেন কারও মুখ দিয়েও শ্বাস-প্রশ্বাস পড়ছে না। এতগুলো ছাত্র, কিন্তু কারও মুখে কোন কথা নেই। ক্লাসের চতুর্দিকে যেন একপ্রকার গভীর নীরবতা বয়ে যাচ্ছে। যদিও ক্লাসের এমন আচরণ কখনও কারও জন্য কাম্য হয়ে উঠে না। স্যার ক্লাসে ঢুকা মাত্রই সবাই যেন আরও বরফ হয়ে উঠল। না জানি কার কপালে আজ কি আছে। একজন আর একজনের মুখের দিকে শুধুই তাকিয়ে আছে। সাথে-সাথে সকলের বুকটা কেঁপে উঠছে। কিন্ত কোন কথা মুখ দিয়ে বের হচ্ছে না। স্যার অন্যদিনের তুলনায় খুবই গম্ভীর হয়ে আছেন। চেয়ারে বসে আবার একটু চুপ করে রয়েছেন। এবার ডাকলেন, ‘সুমন, তুই এদিকে আয় ?’ তাকে ডাকা মাত্রই সে উত্তর দেয়, স্যার, ‘আমি তো কিছু করিনি?’,  স্যার বলে, ‘আমি তো তোকে কিছু করার কথা বলিনি। তোকে এদিকে আসতে বলেছি।‘ ‘সুমন বলে, ‘স্যার, কাজটা কে করেছে তাও আমি জানি না।‘ স্যার বলে, ‘আমি তোর কাছে এত কথা শুনতে চায়নি। তুই এদিকে আয়।’ সুমন ভয়ে-ভয়ে ডেস্ক ছেড়ে স্যারের দিকে এগিয়ে যায়।  কিছু বুঝার আগেই, তার যে ডাক পড়বে সে কখনও তা ভাবেনি। মনে মনে সুমন ভাবতে থাকে, না জানি কি কপালে আছে...