সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

কিশোর গল্পঃ দীপনের পেন্সিল

আমাদের ক্লাসটা কখনও এমন নীরব হয়ে উঠে না, আজ যেভাবে রয়েছে। সবাই খুব চুপচাপ। যেন কারও মুখ দিয়েও শ্বাস-প্রশ্বাস পড়ছে না। এতগুলো ছাত্র, কিন্তু কারও মুখে কোন কথা নেই। ক্লাসের চতুর্দিকে যেন একপ্রকার গভীর নীরবতা বয়ে যাচ্ছে। যদিও ক্লাসের এমন আচরণ কখনও কারও জন্য কাম্য হয়ে উঠে না। স্যার ক্লাসে ঢুকা মাত্রই সবাই যেন আরও বরফ হয়ে উঠল। না জানি কার কপালে আজ কি আছে। একজন আর একজনের মুখের দিকে শুধুই তাকিয়ে আছে। সাথে-সাথে সকলের বুকটা কেঁপে উঠছে। কিন্ত কোন কথা মুখ দিয়ে বের হচ্ছে না। স্যার অন্যদিনের তুলনায় খুবই গম্ভীর হয়ে আছেন। চেয়ারে বসে আবার একটু চুপ করে রয়েছেন। এবার ডাকলেন,

‘সুমন, তুই এদিকে আয় ?’

তাকে ডাকা মাত্রই সে উত্তর দেয়,

স্যার, ‘আমি তো কিছু করিনি?’, 

স্যার বলে, ‘আমি তো তোকে কিছু করার কথা বলিনি। তোকে এদিকে আসতে বলেছি।‘

‘সুমন বলে, ‘স্যার, কাজটা কে করেছে তাও আমি জানি না।‘

স্যার বলে, ‘আমি তোর কাছে এত কথা শুনতে চায়নি। তুই এদিকে আয়।’

সুমন ভয়ে-ভয়ে ডেস্ক ছেড়ে স্যারের দিকে এগিয়ে যায়। 

কিছু বুঝার আগেই, তার যে ডাক পড়বে সে কখনও তা ভাবেনি।

মনে মনে সুমন ভাবতে থাকে, না জানি কি কপালে আছে! হোক না একটা কিছু, হয় ভাল না-হয় মন্দ। একটা কিছু তো হবে। মনে-মনে সে আরও ভাবতে থাকে, এখন আমাকে গরম-গরম কটা রসগোল্লা খেতে হবে। কিন্তু কটা খেতে হবে তা জানি না। ভাগ্য ভাল হলে কমের উপর দিয়ে চলে যেতে পারে। যদি খারাপই হয় তাহলে আজ আর রক্ষা নাই, তা আমি স্পষ্ট বুঝতে পারছি। আর রসগোল্লা যদি খেতেই হয়, তাহলে হাতটা একদম শক্ত করে পাতবো যেন রসগোল্লার স্বাদটা একটু কম লাগে। রসগোল্লা দেওয়ার সময় তেমন ব্যথা লাগে না। ব্যথাটা টের পাওয়া যায় তার অনেকক্ষণ পরে।   

স্যার বলে, ‘তুই সত্যি করে বলতো, দীপনের পেন্সিলটা কই?’                          

সুমন বলে, ‘স্যার সত্যি করে বলছি, ওর পেন্সিলটা আমি দেখিনি।’

স্যার বলে, ‘তুই ওর পেন্সিলটা দেখিসনি?’   

সুমন বলে, ‘স্যার আমি একশোবার সত্যি করে বলতে পারি ওর পেন্সিলটা আমি দেখিনি!’

স্যার বলে, ‘কাছে আয়, হাত পাত! হাতটা একদম সোজা কর !’

কোন কিছু বোঝার আগেই হাতের উপর কয়েকটা ঠাস-ঠাস পরে যায়। কিন্তু আগেই বুঝেছিলাম বলে হাতটা অনেক শক্ত করে রেখেছিলাম। তাই কতটা লেগেছে, তা এখনও টের পাচ্ছি না। টের পাওয়ার জন্য একটু সময় দিতে হবে আমাকে, সেটা আবার কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত হতে পারে। আবার তা হতে পারে কয়েকদিন পর্যন্ত। ঠিক সময় হলেই বুঝতে পারবো।

স্যার আর কাউকে কিছু না বলে সোজা আমাকে ডেস্কে যেতে বলে। আমিও সুবোধ বালকের মত আমার জায়গায় এসে বসে পড়ি। অন্যদিনের তুলনায় আজকে কিছুটা সময় বেশী লাগে স্যারের ক্লাস নিতে। যার মধ্যে আমি একটি কারণ। কিন্তু আমি এ কাজটি করিনি। তবে আমার নামে বিচার দিল কে? তা আমি জানি না। ওঁদের তুলনায় দুষ্ট বলে সব ঝড় আমার উপর দিয়ে যায়। এটা আমি জানি। কিন্তু আমি তো জানতাম, সবাই আমাকে অনেক বন্ধুভাবে। তবে, তারাও কি আমার নামে স্যারের কাছে বিচার দিবে। এটা আমি কখনও ভাবি না। কিন্তু কাজটা তো আমি করিনি। তাহলে ক্লাসের কে করলো? আর নাম পড়লো আমার। কিছু বুঝতে পারছি না, স্যারের কাছে ক্লাসের এই সব খবর দিল কে? কে-এমন একজন আছে, যে আমাদের সব কথা স্যারের কাছে গিয়ে বলে দেয়। তাকে আগে ক্লাসে খুঁজে বের করতে হবে। কিন্তু আমি একা কী পারবো এ কাজটি, আমার সাথে অন্য কাউকে নিতে হবে বলে মনে করি। আমি কি রাশেদকে ব্যাপারটি বলবো। ওতো সেদিক আর স্কুলে আসেনি, যে ব্যাপারটি সম্পর্কে তার ভালভাবে জানা থাকবে। তাকেই আগে বলি। ক্লাসের আজ যা কিছু ঘটেছে শুধু আমি একা বললেই হবে না। আমার সাথে রানাকে সবকিছু তাকে খুলে বলতে হবে। আজ সামান্য একটি পেন্সিল নিয়ে ক্লাসে যা কিছু ঘটেছে এটা ভুলার নয়। আমি সহজেই এটা ভুলতে পারছি না। আমার খুব খারাপ লাগছে। কিন্তু আমি তো দীপনের পেন্সিলটা নেইনি। দীপনের যে পেন্সিলটা হারিয়েছে ওতো ক্লাসের কাউকে বলেনি। সোজাসুজি ভাবে স্যারের কানে চলে গেল। তাহলে ওকি স্যারকে জানালো। ওকে যদি জিজ্ঞাসা করি, ও বলবে আমি কিছুই বলিনি। তাহলে ক্লাসে কে আছে, যে আমাদের সমস্ত কথা স্যারের কানে দিয়ে দেয়। এটা আমাকে বের করতেই হবে। আমি, রাশেদের সাথে এ ব্যাপারটি নিয়ে অনেক কথা বলি। আমাদের অন্যান্য যে বন্ধু আছে তাদের সাথে মিলে কঠিন একটি বুদ্ধি বের করার চেষ্টা করি। যে কোন ভাবেই হোক এর শেষটা দেখতেই হবে। আমরা কয়েক বন্ধু মিলে এটা নিয়ে আর কোন কথা না বলে চুপচাপ করে থাকি। এমন একটা ভাব আমরা করতে থাকি যে, ব্যাপারটি আমাদের মগজ থেকে মুছে গেছে। তার কোন অস্তিত্ব আমাদের মগজে নেই। দেখতে-দেখতে এভাবে কয়কটি দিন কেটে যায়। কিন্তু আমরা কয়েক বন্ধু মিলে ভিতরে-ভিতরে খুঁজতে থাকি তাঁকে, যে আমাদের সমস্ত কথা স্যারের কানে পৌঁছে দেয়। ব্যাপারটি নিয়ে আমরা দীপনের সাথেও কথা বলি। দীপনকে আমি বলি, তোর পেন্সিল হারিয়েছে আমরা কয়েক বন্ধু জানি-ই না, অথচ স্যারের কানে গেল কিভাবে ! তুই কি স্যারকে কিছু বলেছিস ?

‘দীপন বলে, আমার পেন্সিল হারিয়েছে আমি কাউকে কিছু বলিনি। স্যার তো দূরের কথা।’  

‘তুই কাউকে কিছু বলিসনি বুঝলাম, কিন্তু স্যার জানলো কিভাবে।’  

তাহলে কি ভুত এসে স্যারের কানে-কানে বলে গেছে যে, স্যার, দীপনের পেন্সিল হারিয়েছে ক্লাস থেকে আপনি একটু উদ্ধার করে দিন। আমি কি বলি জানিস দীপন। আমার মনে হয় এটা তোর কাজ। তুই এখন আর কিছুই বলবি না। কিছুক্ষণ চুপ করে থাকার পর, দীপন আবার বলে, তোরা কি আমার বন্ধু না। তোদের বাদ দিয়ে আমি কোন কথা স্যারের কানে আগে দিব, এটা তোরা ভাবলি কিভাবে। এর মধ্যে রাশেদ বলে উঠে, ভাবা-ভাবির কোন কিছুই নেই। তুই বলছিস কিনা সেটা আগে বল। বলে থাকলে বল, না বলে থাকলে বল বলিসনি, কথাতো এখানেই শেষ হয়ে যায়। সেই কথাকে আবার এত টানাটানি কী দরকার। যাক আমি ধরে নিলাম তোরা কেউই কিছু বলিসনি, ভুত এসে স্যারের কানে-কানে বলে গেছে। এর মধ্যে দীপন বলে উঠল, আমার মনে হচ্ছে তোরা আমার উপর রাগ করলি। এই শোন, রাগ কি, রাগ আবার কি ! তুই জানিস এটা নিয়ে আমি তৃতীয় যুদ্ধ পর্যন্ত লাগিয়ে দিতে পারি। আবার বলছিস, রাগ-রাগ। এই বলে  রাশেদ আর কোন কথা বলল না। কী দীপন বা অন্য কারও সাথে। কিন্তু এর শেষটা কোথায়, তা বের করতেই হবে। হয় কাল বা এক বছর পর হলেও। পরের দিন রাশেদ খূব বুদ্ধি করে সবার আগে স্কুলে চলে আসে। সে খুব ভাল ভাবে খেয়াল করে টিচার রুমের সামনে দিয়ে কারা বেশি যাতায়াত করে। এটা ও খুব নিবিড় ভাবে পর্যবেক্ষণ করতে থাকে। কিন্তু কারও সাথে সেই কথাগুলো ভাগাভাগি করে না। নিজের মধ্যেই তা লুকিয়ে রাখে। এভাবে কয়েকটি দিন কেটে যায়, কিন্তু ও তার কোন কূলকিনারা পায় না। চেষ্টাও করতে থাকে মন প্রাণ দিয়ে। সবার সাথে কথা বলে ঠিকই; কিন্তু মনে- মনে তার সেই প্রস্তুতি চলতে থাকে। দীপনের পেন্সিলের কথা সে কোন ভাবেই ভুলতে পারে না। কিন্তু কে নিল তার পেন্সিল। আবার এটাও ও মনে-মনে ভাবতে থাকে আসলে কি ওর কোন পেন্সিল ছিল, না শুধু-শুধু আমাদের সাথে মজা করে যাচ্ছে। এ-ব্যাপারটিও ওর মাথায় ঘুরতে থাকে। কিন্তু কারও সাথে কিছু বলে না। এত কিছু থাকতে একটি পেন্সিল নিয়ে ক্লাস রুমে যা ঘটে গেল তা আর ভুলার নয়। যে মনে হয় কোন স্বর্ণের টুকরো হারিয়ে গেছে। ভাবতেই ওর খুব কষ্ট লাগে। রাশেদ নিজে-নিজে একটি বুদ্ধি পাকাতে থাকে। কিভাবে সেই পেন্সিলের হদিস পাওয়া যাবে। দীপনের সাথে খুব ভাল হয়ে কয়েকদিন মিশতে হবে। যেন ও কোন ভাবেই বুঝতে না পারে যে, সেই পেন্সিলের খোঁজ বের করার জন্যই আমি এই সব করে যাচ্ছি। এভাবে আরও কিছু দিন কেটে যায়। কিন্তু না, কিছুতেই যেন কিছু হচ্ছে না। পরের দিন রাশেদ ক্লাসে এসে বলতে থাকে, ওর মামা ওকে একটি বিদেশী পেন্সিল উপহার দিয়েছে। কিন্তু তার চেয়েও মজার ব্যাপার হল পেন্সিলটি শূন্যেয় ভেসে থাকতে পারে অনেকক্ষণ ধরে। তার স্পর্শ অন্য কোন পেন্সিল পেলে সেই পেন্সিলও একই কাজ করবে। তোদের পেন্সিলগুলো নিয়ে একদিন আমাদের বাসায় চলে আয়। পেন্সিলটি আমি কখনও স্কুলে আনবো না। যদি এটি হারিয়ে যায়। ওরা ঠিক করে কয়েকদিনদের মধ্যে রাশেদদের বাসায় যাবে। ওর ওই জাদুর পেন্সিল না দেখলে ওদের যেন ঘুমই হচ্ছে না। তাই ঠিক করি আগামী পরশু স্কুল যেহেতু বন্ধ আছে, ওইদিন ওদের বাসায় যাওয়া যাবে। ঠিক তাই হল। ওরা সবাই সময় মত রাশেদদের বাসায় এসে উপস্থিত। রাশেদ এর মধ্যে বলতে থাকে, তোরা বস, আমি সেই পেন্সিলটা নিয়ে আসছি। তোদের পেন্সিলগুলো হাতের কাছে রাখিস, যেন কোন ভাবে উড়ে না যায়, সবাই এক সাথে হেসে উঠে। সত্যি-সত্যি সে পাশের রুম থেকে একটি পেন্সিল হাতে করে অন্য বন্ধুদের সামনে চলে আসে। আর বলতে থাকে, তোরা দেখ, এটি আমার সেই জাদুর পেন্সিল। এটি কিচ্ছুক্ষণ পর উড়তে থাকবে। কিন্তু উড়ার আগে। তোদের হাতের পেনসিলগুলো শক্ত করে ধরে রাখিস। যেন দৌড় না দেয়। এই বলে রাশেদ সবার পেন্সিলগুলো দেখতে থাকে। এক- এক করে খুব ভালভাবে সবার পেন্সিল ও খেয়াল করতে থাকে। যখন দীপনের সামনে আসে, তখন একটু চুপ করে দাঁড়িয়ে পড়ে। রাশেদ বলতে থাকে, দেখি তো দীপন তোর পেন্সিলটি। সবার আগে, আমার পেন্সিলের সাথে তোর পেন্সিলের ঘষা দিব যেন সবার আগে তোর পেন্সিলটি উড়ে যেতে পারে। দীপন বলতে থাকে, সবার আগে আমারটিই নিবি। অন্যদেরটি নিবি না। রাশেদ বলে, সবারটি নিব। কিন্তু আমার কাছে তোর পেন্সিলটি অনেক ভাল লাগছে। শক্ত করে ধরে রাখিস। দেখিস যেন তা আবার যেন উড়ে না যায়। এই বলে দীপনের পেন্সিলটি সে হাতের মধ্যে নিয়ে নেয়। সমস্ত কাজ যেন কয়েক মুহূর্তে রাশেদ শেষ করে উঠে। অন্য কারও কোন পেন্সিলের প্রতি রাশেদ আর হাত বাড়ায় না। সে খুব ভাল করেই বুঝে গেছে, সেদিন ক্লাসে যে ঘটনা ঘটে গেছে তার দীপনের বানানো ছাড়া আর কিছু না। কিন্তু সবার সামনে তাঁদের এভাবে অপমান না করলেই হত। দীপন, এখন ব্যাপারটি অনেক ভাল করেই বুঝে উঠতে পারে। কেন তাঁদের এখানে আনা হয়েছে। আর, ওই যে বলল, মামার দেওয়া পেন্সিল ! এসবই বানানো গল্প ছাড়া আর কিছুই না। দীপন অনেক নীরব হয়ে উঠে। তার মাথা যেন আর উপড়ে উঠছে না। সে কি বলবে, তার সকল বন্ধুদের সামনে। লজ্জায় যেন তার মরে যেতে ইচ্ছে করছে। যেন একপ্রকার কান্না পাচ্ছে। তারপরও সে কিছু বলছে না। অনেকটা সময় চুপ করে থাকে। দীপন আর রাশেদ তাঁদের মধ্যে একটু তাকানো হয়ে উঠে। দীপন যেমন ব্যাপারটি বুঝতে পারে, রাশেদ ও একই ভাবে তা বুঝতে পারে। এতক্ষণ শুধু তাঁরা দু’জন বুঝেছিল। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে সেই রুমের সবাই জেনে গেছে সেদিনের ক্লাসের সেই ঘটনার সত্যটি কোথায় লুকায় ছিল। অনেকক্ষণ রাশেদ চুপ করে থাকার পর শুধু বলল, পেন্সিলটি পকেটে নিয়ে নে। কিন্তু আমি খুবই কষ্ট পেলাম তোর এই আচরণে। তোর মত বন্ধুর কাছ থেকে আমি এমনটি কখনও আশা করিনি। অন্তত পক্ষে তুই আমাকে বলতে পারতি। আমি ব্যাপারটি অন্যদিকে নিতে পারতাম। তুই সেটিও করলি না। দীপনকে দেখে মনে হচ্ছে সে যেন কয়েক হাত মাটির তলে ডুবে যাচ্ছে। সে শুধু সবার মুখের দিকে তাকিয়ে বলল, তোরা আমাকে ক্ষমা করে দিস। আমি আসলে ব্যাপারটি বুঝতে পারিনি যে, সামান্য এ-রকম শয়তানি ফল কত ব্যাপক হতে পারে। বা তার ক্ষতির মাত্রাটি কত হতে পারে। তোরা আমাকে ক্ষমা করে দিস। আমি আর কখনও এ-রকম করবো না। সবাই যেন এক সাথে হেঁসে উঠে। যেন আনন্দের কোন বন্যা যেন তাঁদের সামনে দিয়ে বয়ে যাচ্ছে। সবাইকে এটাও জানিয়ে দেওয়া হলো যে, আজকের পর থেকে এ ঘটনা যেন কেউ আর মনে না করে। বা, এ-ঘটনার জন্য দীপনকে যেন কোন প্রকার কথা শুনতে না হয়। সবাই যেন একই সুরে বলে উঠে, ঠিক আছে আমরা কেউ এ ব্যাপার নিয়ে কোন কথা দীপনকে আর বলব না। ও আমাদের একজন ভাল বন্ধু। আমরা সবাই চাই, ও আমাদের ভাল বন্ধু হয়ে আমাদের মাঝে যেন টিকে থাকে।   

  

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

প্রবন্ধঃ বুদ্ধদেব বসু ও ‘কঙ্কাবতী’

বুদ্ধদেব বসু প্রেমের অজস্র কবিতা রচনা করেছেন । অন্য অনেকের মতো তিনিও বেছে নেন একজন প্রেমিকাকে , যে হ ’ য়ে উঠে বুদ্ধদেবের অতুল্য প্রেমিকা হিশেবে । ‘ কঙ্কাবতী ’ অনিন্দ্য প্রেমিকা হ ’ য়ে বুদ্ধদেবের কাব্যতে বিচরণ ক ’ রে স্বচ্ছন্দে । স্থির হয়ে বসে পড়ে কঙ্কাবতী ’ কাব্যগ্রন্থে । যে কাব্যগ্রন্থে ‘ কঙ্কাবতী ’ দেখা দেয় অনৈসর্গিক হয়ে । ‘ কঙ্কাবতী ’ কাব্য রচনার পূর্বে ‘ কঙ্কাবতীকে ’ দেখা দেয় অনৈসর্গিক হয়ে । ‘ কঙ্কাবতী ’ কাব্য রচনার পূর্বে কঙ্কাবতীকে আমরা দেখতে পাই অন্য কোনো কবিতায় । যেখানে সে প্রেমিকার কাছে হয়ে ওঠে কুৎসিত কঙ্কাল ব্যতীত অন্য কিছু নয় । প্রগাঢ় ভাবে প্রাপ্তির জন্যে সমস্ত কবিতা জুঁড়ে দেখতে পাই কবির অপরিবর্তনীয় আবেদন । কঙ্কাবতী , যাঁর সাথে কিছু বাক্য বিনিময়ের জন্যে রক্তের হিমবাহে দেখা দেয় চঞ্চলতা । সুপ্রিয়া প্রেমিকা মুখ তোলা মাত্র কবি হাঁরিয়ে ফেলেন ওই সৌন্দর্যময় বাক্যগুলো , যা বলার জন্যে অপেক্ষায় ছিলেন কবি দীর্ঘদিন । প্রেমিকা যখন খুব কাছাকাছি হয়ে এগিয়ে আসেন , ওই ব্যর্থ

প্রবন্ধঃ বিষ্ণু দে : ‘উর্বশী ও আর্টেমিস’ থেকে ‘চোরাবালি’

বিষ্ণু দে , তিরিশি কবিদের অন্যতম । কবিতা রচনাই যাঁর কাছে এক এবং অদ্বিতীয় হ ’ য়ে দেখা দেয় । কাব্যে সংখ্যার দিক থেকে অতিক্রম করেছেন সতীর্থদের । বিষ্ণু দে , যাঁর কবিতা রচনার সূচনা পর্বটিও শুরু হয় খুব দ্রুততম সময়ে । কবিতা সৃষ্টির পর্বটি অব্যাহত রেখেছেন সর্বদা । পঁচিশটি কবিতা নিয়ে ‘ উর্বশী ও আর্টেমিস ’- এ নিজেকে প্রকাশ করেন স্ব - মহিমায় । যে কবিতাগুলা বিস্ময়বিমুগ্ধ ক ’ রে অন্যেদেরকেও । ওই কবিতা শুধু বিষ্ণু দে ’ কে নয় , বরং নতুনতর হ ’ য়ে দেখা দেয় বাঙলা কবিতা । বিষ্ণু দে ’ র ‘ উর্বশী ও আর্টেমিস ’ রবীন্দ্রনাথকে পড়তে হয়েছিল দু ’ বার । ‘ উর্বশী ও আর্টেমিস ’- এর কবিতাগুলির রচনাকালের ব্যাপ্তি দেওয়া আছে ( ১৯২৮ - ১৯৩৩ ) সময়ের মধ্যে , এবং গ্রন্থকারে প্রকাশ পায় ওই একই বছরে অর্থাৎ , ১৯৩৩ - এ । কিন্তু রচনাকালের ব্যাপ্তি ১৯২৮ দেওয়া থাকলেও প্রকৃত পক্ষে এ সকল কবিতাগুলো রচনা পর্ব শুরু হয় আরো দু ’ বছর পূর্বে অর্থাৎ , ১৯২৬ - এ । যখন কবি হিশেবে বিষ্ণু দে একেবারেই নতুন এবং নবীন । ১৯৩৩ - এ

প্রবন্ধঃ অমিয় চক্রবর্তী : ‘বৃষ্টি’ নিয়ে তিনটি কবিতা

রবীন্দ্রনাথ, মেঘ-বরষা বৃষ্টি নিয়ে এতো সংখ্যক কবিতা লিখেছেন যে তাঁর সমান বা সমসংখ্যক কবিতা বাঙলায় কেউ লিখেনি। রবীন্দ্রনাথ, যাঁর কবিতায় বার বার এবং বহুবার ফিরে ফিরে এসেছে মেঘ, বরষা, বৃষ্টি। বৃষ্টি নামটি নিলেই মনে পড়ে কৈশোর পেড়িয়ে আসা রবীন্দ্রনাথের ওই কবিতাটির কথা। ‘দিনের আলো নিবে এল সূর্য্যি ডোবে ডোবে আকাশ ঘিরে মেঘ জুটেছে চাঁদের লোভে লোভে।’ বৃষ্টি নিয়ে কবিতা পড়ার কথা মনে পড়লে এটাই চলে আসে আমার মনে। অমিয় চক্রবর্তী বৃষ্টি নিয়ে লিখেছেন বেশ কিছু কবিতা। বাঙলায় বৃষ্টি নিয়ে কবিতা লিখেনি এমন কবির সংখ্যা খুব কম বা নেই বললেই চলে। অমিয় চক্রবর্তী, যাঁর কবিতায় পাই ‘বৃষ্টি’ নামক কিছু সৌন্দর্যময় কবিতা। যে কবিতাগুলো আমাকে বিস্ময় বিমুগ্ধ ক’রে। ওই কবিদের কারো কারো কবিতা দ্রুত নিঃশ্বাসে পড়া সম্ভবপর হয়ে উঠে না। বৃষ্টি নামক প্রথম কবিতাটি পাওয়া যাবে অমিয় চক্রবর্তীর ‘একমুঠোতে’। উন্নিশটি কবিতা নিয়ে গ’ড়ে উঠে ‘একমুঠো’ নামক কাব্য গ্রন্থটি। যেখান থেকে শ্রেষ্ঠ কবিতায় তুলে নেওয়া হয় চারটি কবিতা। আমার আরো ভালোলাগে ‘বৃষ্টি’ কবিতাটি ওই তালিকায় উঠে আসে। শ্রেষ্ঠ কবিতায় না আসলে আমার যে খুব খারাপ লাগতে তা-ও নয়। ওই কবিতা