বাংলাদেশ, আজ এমন এক সময় অতিক্রম করছে, যেখানে বাতাসের ভেতরেও অস্থিরতার গন্ধ, তার ভিতরে মিশে থাকে গভীর আঁধার, আর রাস্তার নীরবতার মধ্যেও অদৃশ্য উত্তাপের স্রোত। বাংলাদেশ যেন এক দীর্ঘশ্বাস; দীর্ঘদিনের ক্লান্তি, আবার নতুন ভোরের ক্ষীণ আলো। রাজনৈতিক পালাবদল, জনমনের ক্ষোভ, অপ্রকাশিত ভয়, সব মিলিয়ে বাংলাদেশ এখন অভ্যন্তরীণ এক পুনর্গঠনের অদ্ভুত যাত্রায় এগোনো, কোন এক নতুন আগন্তুক। এ-যাত্রায় আশা আছে, কিন্তু উদ্বেগের ছায়াও তার সমান সঙ্গী। বাংলাদেশ, আজ এমন এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে, যেখানে প্রতিটি সকাল নতুন এক অনিশ্চয়তার রেখা টেনে দেয় আকাশে, আর প্রতিটি সন্ধ্যা পেছনে ফেলে যায় এক মুঠো জ্যোৎস্না, ক্ষত-বিক্ষত দেহ, তবু আশাবাদী একটি জনগোষ্ঠীর দীর্ঘশ্বাস। বাংলাদেশকে; এখন বিশ্লেষণ করতে গেলে কেবল রাজনৈতিক পরিভাষা তার জন্য যথেষ্ট নয়, অর্থনৈতিক পরিসংখ্যানও নয়; সমাজের ভিতরে ভিতরে জমে থাকা আকাঙ্ক্ষা, ভয়, ক্ষোভ, আশা-প্রত্যাশা, মায়া, তার প্রেম-ভালবাসা, এসব মিলিয়েই আজকের বাংলাদেশের প্রকৃতি নির্ধারণ করতে হয়। যেন বিশাল এক নদী, যার উপরিভাগে প্রসারিত অশান্ত ঢেউ; ভিতরে নরম স্রোত, দোদুল্যমান,...
মামুনুর রহমান, সমকালীন বাংলা সাহিত্যের এক অদ্বিতীয় সংবেদনশীল কণ্ঠ। তাঁর লেখায় জীবনের সাধারণ মুহূর্তগুলোও নতুন এক আলোর আভায় ফু’টে ওঠে। তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন, কবিতা কেবল শব্দের খেলায় সীমাবদ্ধ নয়; এটি সেই নীরব ভাষা, যা অন্তরের গভীরে বাস ক’রে, পাঠকের অভ্যন্তরীণ অনুভূতির সঙ্গে মিশে এক অনন্য প্রতিধ্বনি সৃষ্টি ক’রে। তেমনি তাঁর গদ্য রচনা পাঠককে শুধু ভাবায় না, বরং অনুভব করায়, জীবনের ক্ষুদ্রতম ছোঁয়ায়ও গভীর মানসিক ধ্বনিতে স্পন্দিত ক’রে। তিনি খেয়াল রাখেন পাঠকের মন ও মননশীল দিকটি।