সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

প্রবন্ধঃ বুদ্ধদেব বসু ও ‘কঙ্কাবতী’


বুদ্ধদেব বসু প্রেমের অজস্র কবিতা রচনা করেছেন অন্য অনেকের মতো তিনিও বেছে নেন একজন প্রেমিকাকে, যে য়ে উঠে বুদ্ধদেবের অতুল্য প্রেমিকা হিশেবেকঙ্কাবতীঅনিন্দ্য প্রেমিকা য়ে বুদ্ধদেবের কাব্যতে বিচরণ রে স্বচ্ছন্দে স্থির হয়ে বসে পড়ে কঙ্কাবতীকাব্যগ্রন্থে যে কাব্যগ্রন্থেকঙ্কাবতীদেখা দেয় অনৈসর্গিক হয়েকঙ্কাবতীকাব্য রচনার পূর্বেকঙ্কাবতীকেদেখা দেয় অনৈসর্গিক হয়েকঙ্কাবতীকাব্য রচনার পূর্বে কঙ্কাবতীকে আমরা দেখতে পাই অন্য কোনো কবিতায় যেখানে সে প্রেমিকার কাছে হয়ে ওঠে কুৎসিত কঙ্কাল ব্যতীত অন্য কিছু নয় প্রগাঢ় ভাবে প্রাপ্তির জন্যে সমস্ত কবিতা জুঁড়ে দেখতে পাই কবির অপরিবর্তনীয় আবেদন কঙ্কাবতী, যাঁর সাথে কিছু বাক্য বিনিময়ের জন্যে রক্তের হিমবাহে দেখা দেয় চঞ্চলতা সুপ্রিয়া প্রেমিকা মুখ তোলা মাত্র কবি হাঁরিয়ে ফেলেন ওই সৌন্দর্যময় বাক্যগুলো, যা বলার জন্যে অপেক্ষায় ছিলেন কবি দীর্ঘদিন প্রেমিকা যখন খুব কাছাকাছি হয়ে এগিয়ে আসেন, ওই ব্যর্থ ভারাক্রান্ত মনকে কিছুটা হলেও নির্মল আনন্দদানের জন্য আর তখনই দেখতে পাই: ‘মোরে প্রেম দিতে চাও?/ প্রেমে মোর ভুলাইবে মন?/ তুমি নারী, কঙ্কাবতী, প্রেম কোথা পাবে?/আমারে কোরো না দান, তোমার নিজের যাহা নয়/ধার করা বিত্তে মোর লোভ নাই, সে ঋণের বোঝা বাড়িয়া চলিবে প্রতিদিন/যতক্ষণ সেই ভার সর্বনাশ না করে তোমার/সে ঋণ করিতে শোধ দ্রৌপদীর সবগুলি শাড়ি খুলিয়া ফেলিতে হবেকবি তাঁকে পেতে চান কাছ থেকে কাছে এবং আরো কাছে যে কবির কাছে দেখা দিবে না শুধুই রহস্যের অতীন্দ্রিয় ইন্দ্রজাল য়ে কবি বারবার এবং বহুবার একই চিত্তে প্রকাশ করেছেন ওই ননীর মতো তব তনুখানি প্রাপ্তির জন্য কবি, ‘কঙ্কাবতী ওই দেহখানি ভালোবেসেছেন দূর থেকে, যেমন শিশির বেঁছে নেয় তার কোমল শুভ্রতাকে কবি দূর থেকে দেখে মুগ্ধ হতে চান তাঁর দেহ এবং খুব বেশী প্রয়োজন বোধ করেন না প্রেমের আবার যখন লে উঠেন বরং প্রেমের ভান করবো না সেই হবে ভালো: দূর থেকে মুগ্ধ হবো/ তবু মুগ্ধ হবো/নাই-বা চিনিলে মোরে/আমি যদি ভালোবেসে থাকি,/আমিই বেসেছি,/সে কথা তোমার কানে নানা, সুরে জপিতে চাহি না;-/ আমার সে ভালোবাসা-তুমি তারে পারিবে না কখনো বুঝিতেকবি এবার আর তনুর স্তব গান না সৌন্দর্যের সমস্ত দিকগুলো ঘুরে ফিরে উপস্থিত হন আবার অন্যে সৌন্দর্যের খোঁজে সম্ভবত, কবি আর বলতে চান না যে, ‘দূর থেকে দেখে তাই ফিরে যাই কবি যতোই ভালোবেসেছেন, ততো- যেন কাছে বা নিকটবর্তী হয়েছে কঙ্কাবতীর কবি কোনো ইন্দ্রিয়- বাদ দেননি, যে ইন্দ্রিয় দিয়ে নিজের অভ্যন্তরে প্রবেশ করাননি কঙ্কাবতীকে বরং তা ঘুরে ঘুরে প্রবেশ রে কবির অবয়বে তাই আমরা যখন বলতে দেখি : ‘আঁখি দিয়ে প্রাণ দিয়ে আত্মা দিয়ে, মৃত্যুর কল্পনা দিয়ে/সেই শোভা পান করি/ তোমার বাদামি চোখ-চকচকে, হালকা, হালকা চটুল/তাই ভালোবাসি/ তোমার ললচে চুল,-এলোমেলো, শুকনো, নরম তাই ভালোবাসি/ সেই চুল, সেই চোখ, তাহারা আমার কাছে অরণ্য গভীর,/সেথা আমি পথ খুঁজে নাহি পাই,/নিজেরে হারায়ে ফেলি সেই চোখে, সেই চুলে-লালচে-বাদামি/ নিজেরে ভুলিয়া যাই, আমারে হারাই-তাই ভালোবাসিবুদ্ধদেব বসু, তাঁর কবিতায় তিনি চুলকে প্রবেশ করান ব্যাপক এবং বিস্তৃত ভাবে যে চুলকে আমরা আবার দেখতে পাই কঙ্কাবতী কাব্য গ্রন্থেরচুলনামক কবিতায় যার শুরুটা এরকম খুলে দাও চুল বা আমার দৃষ্টির পরে ঢেলে দাও ঠান্ডা অন্ধকার; চুলগুলি খুলে দাও খুলে ঢেলে দাও মোর নয়নে আঢুল বা তোমার সে চুলে/জড়ানো সুতোর মতো নিশীথের মেঘের মতন,/ তোমার সে-কালো চুল, এলোমেলো, অগোছালো চুল,/ঘুমের মত ঠাণ্ডা, এক মুঠো জমানো আঁধার-/তোমার সে চুলগুলি ঢেলে দাও মোর মুখে-চোখে আবার একই কাব্য গ্রন্থেঅমিতা রমানামক কবিতায় সে দিন বলিয়াছিলে, আমাদের প্রেমের সন্ধ্যায়/ (ঘর-ভরা অন্ধকার তোমার চুলের মতো কালো/জানালায় দু-চারিটি তারা)’ কিংবাকিছুই প্রেমের মতো নয়কবিতায় লাল ঠোঁট, কালো চুল, তুষারে মতো শাদা বাহু
একত্রিশটি কবিতা নিয়ে বুদ্ধদেবেরকঙ্কাবতীকাব্যগ্রন্থটি যে কাব্যস্থটিকে কঙ্কাবতী কবিতার স্বর্গভূমি বলা যেতে পারে কঙ্কাবতী নিয়ে গ্রন্থে রয়েছে একাধিক প্রেমের কবিতা যে কবিতাগুলো চিরকালীন প্রেমের কবিতা য়ে দেখা দিতে পারে বুদ্ধদেব বসুরকঙ্কাবতীকাব্য সম্পর্কেকবিতাপত্রিকায় জীবনানন্দ দাশ বলেনঃবুদ্ধদেব বসুর কঙ্কাবতী প্রেমের কাব্য -সব কবিতা পড়তে সে এগুলো কোন বিদ্রোহের কবিতা নয়, সবের ভিতর ম্লান মানুষের বেদনার কথা নেই কেন, কিংবা হাড়ের থেকে সৌন্দর্য রে ড়ে সব কবিতায় কঙ্কালমুত্তের টিটকারী উড়ছে না কেন- রকম সব গূঢ় জিজ্ঞাসা আমার কাছে অত্যন্ত অবান্তর লে মনে হয়...প্রেমের কবিতাগুলো এই বইয়ের ভিতর কতদূর কবিতা হয়েছে বা অপ্রাসঙ্গিক জিনিস হয়েছে তাই নিয়ে এই কাব্যের বিচার...এই কবিতাগুলোর মধ্যে তিনি বরং জীবনকে স্বীকার করে নিয়েছেন....কোনো কোনো কবিতায় পুনরুক্তি বেশি, কথার অজস্র ডালপালার ভিড়ে আবেগ চাপা পড়ে পাখা মেলতে পারেনি-যাঁরা বলেন কঙ্কাবতীর কবিতাগুলো আধুনিক সময়ের উপযোগী নয়-তাঁরা সময় বা আধুনিক সময় বলতে কোনো একটা কৃত্রিম কিছু তৈরি রে নিয়েছেনএকখানা হাত’, চিরকালই একখানা হাতের রহস্যঅন্ধকার সিঁড়িআজকের কোনো এক্সরের আলোতেই অন্ধকার সিঁড়ি ছাড়া আর কিছু হয়ে উঠবে না-এবং সেই জন্যই তা সব সময়ের...যাঁরা সময় সৃষ্টিকে টুকরো টুকরো রে ছিঁড়ে তবুও আরো ভগ্নাংশে পরিণত করতে চান, সময় সৃজনের মুখের রূপ তা-না লে দেখতে পারবে না লে, তাঁদের প্রীতির জন্য সৃষ্টি সময় নিজেদের ব্যবহার ভুলে যায় না- মানুষের পৃথিবীর কোনো একটা তুচ্ছতম শতাব্দীর কোনো একটা তুচ্ছতম দিনকে তুচ্ছতম শতাব্দীর তুচ্ছতম দিন দিন বলেই মনে রে শুধু সেই সব দারুন মাস্তলের কর্ণধারগণ,-যতক্ষণ পর্যন্ত না কোনো কোনো মানুষের মন এককনা বালির-ভিতর সমস্ত পৃথিবীকে আবিষ্কার করে, স্বর্গ খুঁজে পায় একটি ঘাসফুলের ভিতর হাতের তেলোর ভিতরই যেন পায় সীমাহীনতাকে এবং অনুপলের ভিতরেই সময়হীনের আস্বাদ পায় আমাদের মুখ্যতম কবিদের সঙ্গে বুদ্ধদেব সেই কবি যিনি এই আস্বাদ পেয়েছেন,..সময় মৃত্তিকার ভিতর বাসা বেঁধেকঙ্কাবতীমৃত্তিকা সময়োত্তর কাব্য
কঙ্কাবতীকাব্যগ্রন্থে কঙ্কাবতীকে নিয়ে প্রথম যে কবিতাটি উপস্থিত হয় সেটি হলআরশি’ -যদিও এই নামটি প্রথমে পাওয়া যায়বন্দীর বন্দনায়প্রেমিককবিতায় একাদশী-শশীতে আকাশ-পারে যখন কঙ্কাবতী এক ঘুমে বিভোর আবার সেই পূর্বের মতো কবি চুল নিয়ে বলেন: ‘কঙ্কাবতী সে চুল এলো রে দিয়েছে-/আহা লাল চুল, রেশমি-নরম, লাল সে চুল! ’ আবার একই কবিতায় যখন বলেন: ‘বাইরে কে আসে? কেউ নয়, ভাসে বাতাস খালি,/দুয়ার খোলে কে? কিছু না, হাওয়ার হাতের তালি/জানালায় টোকা? ভয় নেই, ঝরে ফোঁটা শেফালি কঙ্কাবতী সে চুল এলো রে দিয়েছে-/ আহা, লাল চুল মুঠি-মুঠি আলো লাল সে চুল)সেরেনাদকঙ্কাবতীকে নিয়ে দ্বিতীয় কবিতা যার অর্থ বোঝার জন্যে বুদ্ধদেব জুঁড়ে দিয়েছেন একটি দীর্ঘ টীকা যার ফলে অনেক সহজ য়ে যায় অর্থটি বোঝার জন্য এই কবিতার আবার যখন দেখিঘুম কি ভাঙ্গল? শুনবে কি গান? শুনবে কথা?/ জোছনা জড়ানো ঝাপসা ছায়ার চঞ্চলতা?/ কঙ্কা জাগো পূর্বের কবিতায় কঙ্কাবতী যে রজনী বাড়ছিল তাঁর দীর্ঘতা কী রয়েছে এই কবিতা পর্যন্ত? ‘কঙ্কাবতীকাব্যগ্রন্থে কঙ্কাবতী নাম ধারণ করে একটি কবিতার নামটি কবি উচ্চারণ করলেও এই প্রথম নামটি তাঁর কাছে কী রকম লাগে তা ব্যক্ত করেন সমস্ত কবিতা জুঁড়ে তোমার নামের শব্দ আমার কানে আর প্রাণে গানের মতো-/মর্মের মাঝে মর্মরি বাজে, কঙ্কা কঙ্কা! কঙ্কাবতী- (কঙ্কাবতী গো) কবি যেন নামটি উচ্চারণের সাথে সাথে বার বারই আবেগাপ্লুত হয়ে ভেঙ্গে পড়ছেনরূপকথাঘুমের মতো এই কবিতাওকঙ্কাবতীদেখা দেয় স্বপ্ন য়ে যার স্বপ্ন কবি পূর্ব থেকেই দেখে আসছেন তাই আবারকঙ্কাতোমার স্বপ্ন দেখি,/ কঙ্কা তোমার স্বপ্ন দেখি./ রাত্রির মতো তোমার চুল,/ হৃদয়ে তাহার স্বপ্ন দেখিশেষের রাত্রিকবিতায় কবি কঙ্কাকে আহবান করেন কবির হাত রে চলে আসার জন্য প্রিয় প্রেমিকার জন্য কবি যেন য়ে উঠেন প্রেমিকরূপে

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

প্রবন্ধঃ অমিয় চক্রবর্তী : ‘বৃষ্টি’ নিয়ে তিনটি কবিতা

রবীন্দ্রনাথ, মেঘ-বরষা বৃষ্টি নিয়ে এতো সংখ্যক কবিতা লিখেছেন যে তাঁর সমান বা সমসংখ্যক কবিতা বাঙলায় কেউ লিখেনি। রবীন্দ্রনাথ, যাঁর কবিতায় বার বার এবং বহুবার ফিরে ফিরে এসেছে মেঘ, বরষা, বৃষ্টি। বৃষ্টি নামটি নিলেই মনে পড়ে কৈশোর পেড়িয়ে আসা রবীন্দ্রনাথের ওই কবিতাটির কথা। ‘দিনের আলো নিবে এল সূর্য্যি ডোবে ডোবে আকাশ ঘিরে মেঘ জুটেছে চাঁদের লোভে লোভে।’ বৃষ্টি নিয়ে কবিতা পড়ার কথা মনে পড়লে এটাই চলে আসে আমার মনে। অমিয় চক্রবর্তী বৃষ্টি নিয়ে লিখেছেন বেশ কিছু কবিতা। বাঙলায় বৃষ্টি নিয়ে কবিতা লিখেনি এমন কবির সংখ্যা খুব কম বা নেই বললেই চলে। অমিয় চক্রবর্তী, যাঁর কবিতায় পাই ‘বৃষ্টি’ নামক কিছু সৌন্দর্যময় কবিতা। যে কবিতাগুলো আমাকে বিস্ময় বিমুগ্ধ ক’রে। ওই কবিদের কারো কারো কবিতা দ্রুত নিঃশ্বাসে পড়া সম্ভবপর হয়ে উঠে না। বৃষ্টি নামক প্রথম কবিতাটি পাওয়া যাবে অমিয় চক্রবর্তীর ‘একমুঠোতে’। উন্নিশটি কবিতা নিয়ে গ’ড়ে উঠে ‘একমুঠো’ নামক কাব্য গ্রন্থটি। যেখান থেকে শ্রেষ্ঠ কবিতায় তুলে নেওয়া হয় চারটি কবিতা। আমার আরো ভালোলাগে ‘বৃষ্টি’ কবিতাটি ওই তালিকায় উঠে আসে। শ্রেষ্ঠ কবিতায় না আসলে আমার যে খুব খারাপ লাগতে তা-ও নয়। ওই কবিতা...

প্রবন্ধঃ সুধীন্দ্রনাথ দত্তের প্রবন্ধ সংগ্রহ

সুধীন্দ্রনাথ , সাতটি কাব্যগ্রন্থের মতো সাতটি প্রবন্ধের গ্রন্থ লিখলে খারাপ হতো না , বেশ ভালোই হতো । সুধীন্দ্রনাথের প্রবন্ধগুলো হালকা মানের নয় , যদিও তাঁর কোন রচনাই হালকা নয় । সাহিত্যে বিচারে তা অনেক উঁচুমানের । তার উপর ভাষার ব্যাপারটি তো রয়েছেই । সুধীন্দ্রনাথ মাত্র দুটি প্রবন্ধ গ্রন্থ রচনা করেছেন । গ্রন্থ দুটো ‘ স্বগত ’ ( ১৩৪৫ ঃ ১৯৩৮ ), অপরটি ‘ কুলায় ও কালপুরুষ ’ ( ১৩৬৪ : ১৯৫৭ ) । ‘ স্বগত ’- তে রয়েছে ষোলটি প্রবন্ধ । গ্রন্থ দুটি তিনি রচনা করেছেন দু ’ ভাগে । লরেন্স বা এলিয়ট এর প্রবন্ধ যেমন পাওয়া যাবে না ‘ কুলায় ও কালপুরুষ ’- এ ; তেমনি রবীন্দ্র সম্পর্কিত প্রবন্ধ নেওয়া হয়নি ‘ স্বগত ’- এ । প্রকাশ কাল অনুযায়ী ‘ স্বগত ’- এর প্রবন্ধসমূহ : ‘ কাব্যের মুক্তি ’ ( ১৯৩০ ); ‘ ধ্রুপদ পদ - খেয়াল ’ ( ১৯৩২ ), ‘ ফরাসীর হাদ্য পরিবর্তন ’ ( ১৯৩২ ), ‘ লিটনস্ট্রেচি ’ ( ১৯৩২ ), ‘ লরেন্স ও ভার্জনিয়া উল্ফ্ ’ ( ১৯৩২ ), ‘ উপন্যাস তত্ত্ব ও তথ্য ’ ( ১৯৩৩ ), ‘ উইলিয়ম ফকনর ’ ( ১৯৩৪ ), ‘ ঐতিহ্য ও টি , এস , এলিয়ট ’ ( ১৯৩৪ ), ...