সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

কবিতাঃ একজন পথচারিনী এবং তাঁর সাথে পথ চলা



                   এক সাথেই হাঁটতে শুরু করেছিলাম আমরা অজস্র জ্যোৎস্না
                   আর মেঘকে সাথে করে। নিয়েছি পথে দীপ্তিময় চাঁদ, অদ্ভুত আর
                   বিস্ময়কর গাঢ় অন্ধকারকে। দীপ্তিময় আমার বিকশিত উদ্যান;
                   তুমি হাঁটতে ছিলে, আর আমি তোমার পথ ধ’রে নিবিড় পথে
                   তোমার সাথেই এগিয়ে যাচ্ছি, সবুজ ডালপালা আর
                 
                   দীর্ঘ সরোবরে জলপ্রবাহের তরঙ্গমাখা ঢেউয়ে আর
                   বার বার উজ্জ্বল দৃষ্টি তোমার দিকে, এ যেনো আমার হারানো
                   নিঃসঙ্গ একাকী সুধাময় কোনো সুর, যা আমার হৃদপিণ্ডে হিমবাহ;  
                    কিন্তু কখন যেন তোমার থেকে চোখ ফিরিয়ে হারানো মনে
                    অন্যদিকে দিলাম, চেয়ে দেখি তুমি নেই ! আমি হারিয়ে ফেলি
                   
                    আমার রচিত স্বপ্ন। আমি হাটতে থাকি অন্ধ পথিকের মতো,
                    কোনো পথ আমার জানা নেই গৃহহীন, রাজপথ যার আপন
                    আলয়। নিকটেই হয়তো সৌন্দর্য ছড়াবে; নাকে তু’লে নেবো
                    চন্দনের সুবাস। আমার নিঃসঙ্গ আর করুন মন ভাবে নিকটে  
                    হয়তো তোমাকে পেয়ে যাবো; যে আমার শ্রাবণের সুনিবিড় সুর 
                   
                     আমি পাই না আঁধারে হারিয়ে যাওয়া আমার উজ্জ্বল নক্ষত্রকে;
                    হঠাৎ কোনো নিসর্গমালা আমাকে জানিয়ে দেয় তুমি আর বেশি
                    দূরে নও, জ্যোতির্ময় শোভায় আমার নিঃসঙ্গ প্রেমময় ভালোবাসা,                 
                    আমি দ্রুত এগোতে থাকি জ্যোৎস্না থেকে নিবিড় ঘন অরণ্যেয়; 
                    তোমার ওপথই যেনো আমার নীল মেঘের আকাশ জড়ানো আপন
                   
                    গন্তব্য আমি আবার দেখা পাই আমার অপার্থিব স্বপ্নের প্রসারিত
                    নিবিড় পল্লবেমনে মনে প্রতিজ্ঞায় অনড় আমার গভীর মন।
                    নীলপদ্মা আমার; তোমাকে দেখে দেখেই পথ চলবো অন্ধ যেমন
                    অনুসরণ ক’রে তাঁর চন্দ্রলোকের বিচ্ছুরিত সুনিবিড় গাঢ় অরণ্যকে।  
                    ঐ পথেই হঠাৎ আবার জেগে উ’ঠে পুরনো গাঢ় দুঃখের বিষাদময়তা,   
                   
                    যে একদা আমার কাছে ছিল আশ্চর্য গোলাপ, নিসর্গ পদ্যের করুন
                    সুর। আলোকিত প্রজ্বলিত ফেলে আসা অম্লান স্মৃতি; আবার ফিরে  
                    তাকাই তরঙ্গে জেগে উঠা আমার মাতাল স্বপ্নের দিকে; মৌলিক
                    স্বরে রচিত স্মৃতি আর গভীর দুঃখের দিকেঅতীন্দ্রিয় নিসর্গ শাদা
                    স্বপ্নে আমি ভুলে যাই সঙ্গীতময়, কেঁপে উঠা নৌকার ঢেউ, সবুজ
                   
                  
                    পল্লবে আবার হারিয়ে ফেলি তোমাকেমায়াবী, ব’য়ে চলা পথে
                    জ্যোৎস্নাময় আলোর জন্য আবার হাঁটতে থাকিশূন্যতার শরীরে
                    তোমার খোঁপা থেকে কখন যেন একটি চুল আমার শরীরে এসে
                    লাগে, দীর্ঘ শ্বাস ফেলি, কেঁপে উঠি মনে মনে হয়তো নিকটে পেয়ে
                    যাবো তোমাকেযে আমার হারানো সৌন্দর্য, অশ্রুতে গেঁথে থাকা
                   
                    অম্লান স্মৃতি। আমি আর তোমার দেখা পাই না, চুলটি বুক পকেটে
                    নিয়ে আমি হাঁটতে থাকি গভীর মেঘ আর আলো আঁধারের মাঝে,
                    রোদনের স্মৃতি ধারণ করে ব্যাকুল চিত্রে ফিরে আসি আপন আলয়ে;
                    তোমার ঐ চুলটি আমার জন্য হ’য়ে উঠে অপার্থিব অমল সৌন্দর্য


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

প্রবন্ধঃ বিষ্ণু দে : ‘উর্বশী ও আর্টেমিস’ থেকে ‘চোরাবালি’

বিষ্ণু দে , তিরিশি কবিদের অন্যতম । কবিতা রচনাই যাঁর কাছে এক এবং অদ্বিতীয় হ ’ য়ে দেখা দেয় । কাব্যে সংখ্যার দিক থেকে অতিক্রম করেছেন সতীর্থদের । বিষ্ণু দে , যাঁর কবিতা রচনার সূচনা পর্বটিও শুরু হয় খুব দ্রুততম সময়ে । কবিতা সৃষ্টির পর্বটি অব্যাহত রেখেছেন সর্বদা । পঁচিশটি কবিতা নিয়ে ‘ উর্বশী ও আর্টেমিস ’- এ নিজেকে প্রকাশ করেন স্ব - মহিমায় । যে কবিতাগুলা বিস্ময়বিমুগ্ধ ক ’ রে অন্যেদেরকেও । ওই কবিতা শুধু বিষ্ণু দে ’ কে নয় , বরং নতুনতর হ ’ য়ে দেখা দেয় বাঙলা কবিতা । বিষ্ণু দে ’ র ‘ উর্বশী ও আর্টেমিস ’ রবীন্দ্রনাথকে পড়তে হয়েছিল দু ’ বার । ‘ উর্বশী ও আর্টেমিস ’- এর কবিতাগুলির রচনাকালের ব্যাপ্তি দেওয়া আছে ( ১৯২৮ - ১৯৩৩ ) সময়ের মধ্যে , এবং গ্রন্থকারে প্রকাশ পায় ওই একই বছরে অর্থাৎ , ১৯৩৩ - এ । কিন্তু রচনাকালের ব্যাপ্তি ১৯২৮ দেওয়া থাকলেও প্রকৃত পক্ষে এ সকল কবিতাগুলো রচনা পর্ব শুরু হয় আরো দু ’ বছর পূর্বে অর্থাৎ , ১৯২৬ - এ । যখন কবি হিশেবে বিষ্ণু দে একেবারেই নতুন এবং নবীন । ১৯৩৩ - এ ...

প্রবন্ধঃ অমিয় চক্রবর্তী : ‘বৃষ্টি’ নিয়ে তিনটি কবিতা

রবীন্দ্রনাথ, মেঘ-বরষা বৃষ্টি নিয়ে এতো সংখ্যক কবিতা লিখেছেন যে তাঁর সমান বা সমসংখ্যক কবিতা বাঙলায় কেউ লিখেনি। রবীন্দ্রনাথ, যাঁর কবিতায় বার বার এবং বহুবার ফিরে ফিরে এসেছে মেঘ, বরষা, বৃষ্টি। বৃষ্টি নামটি নিলেই মনে পড়ে কৈশোর পেড়িয়ে আসা রবীন্দ্রনাথের ওই কবিতাটির কথা। ‘দিনের আলো নিবে এল সূর্য্যি ডোবে ডোবে আকাশ ঘিরে মেঘ জুটেছে চাঁদের লোভে লোভে।’ বৃষ্টি নিয়ে কবিতা পড়ার কথা মনে পড়লে এটাই চলে আসে আমার মনে। অমিয় চক্রবর্তী বৃষ্টি নিয়ে লিখেছেন বেশ কিছু কবিতা। বাঙলায় বৃষ্টি নিয়ে কবিতা লিখেনি এমন কবির সংখ্যা খুব কম বা নেই বললেই চলে। অমিয় চক্রবর্তী, যাঁর কবিতায় পাই ‘বৃষ্টি’ নামক কিছু সৌন্দর্যময় কবিতা। যে কবিতাগুলো আমাকে বিস্ময় বিমুগ্ধ ক’রে। ওই কবিদের কারো কারো কবিতা দ্রুত নিঃশ্বাসে পড়া সম্ভবপর হয়ে উঠে না। বৃষ্টি নামক প্রথম কবিতাটি পাওয়া যাবে অমিয় চক্রবর্তীর ‘একমুঠোতে’। উন্নিশটি কবিতা নিয়ে গ’ড়ে উঠে ‘একমুঠো’ নামক কাব্য গ্রন্থটি। যেখান থেকে শ্রেষ্ঠ কবিতায় তুলে নেওয়া হয় চারটি কবিতা। আমার আরো ভালোলাগে ‘বৃষ্টি’ কবিতাটি ওই তালিকায় উঠে আসে। শ্রেষ্ঠ কবিতায় না আসলে আমার যে খুব খারাপ লাগতে তা-ও নয়। ওই কবিতা...

প্রবন্ধঃ বুদ্ধদেব বসু ও ‘কঙ্কাবতী’

বুদ্ধদেব বসু প্রেমের অজস্র কবিতা রচনা করেছেন । অন্য অনেকের মতো তিনিও বেছে নেন একজন প্রেমিকাকে , যে হ ’ য়ে উঠে বুদ্ধদেবের অতুল্য প্রেমিকা হিশেবে । ‘ কঙ্কাবতী ’ অনিন্দ্য প্রেমিকা হ ’ য়ে বুদ্ধদেবের কাব্যতে বিচরণ ক ’ রে স্বচ্ছন্দে । স্থির হয়ে বসে পড়ে কঙ্কাবতী ’ কাব্যগ্রন্থে । যে কাব্যগ্রন্থে ‘ কঙ্কাবতী ’ দেখা দেয় অনৈসর্গিক হয়ে । ‘ কঙ্কাবতী ’ কাব্য রচনার পূর্বে ‘ কঙ্কাবতীকে ’ দেখা দেয় অনৈসর্গিক হয়ে । ‘ কঙ্কাবতী ’ কাব্য রচনার পূর্বে কঙ্কাবতীকে আমরা দেখতে পাই অন্য কোনো কবিতায় । যেখানে সে প্রেমিকার কাছে হয়ে ওঠে কুৎসিত কঙ্কাল ব্যতীত অন্য কিছু নয় । প্রগাঢ় ভাবে প্রাপ্তির জন্যে সমস্ত কবিতা জুঁড়ে দেখতে পাই কবির অপরিবর্তনীয় আবেদন । কঙ্কাবতী , যাঁর সাথে কিছু বাক্য বিনিময়ের জন্যে রক্তের হিমবাহে দেখা দেয় চঞ্চলতা । সুপ্রিয়া প্রেমিকা মুখ তোলা মাত্র কবি হাঁরিয়ে ফেলেন ওই সৌন্দর্যময় বাক্যগুলো , যা বলার জন্যে অপেক্ষায় ছিলেন কবি দীর্ঘদিন । প্রেমিকা যখন খুব কাছাকাছি হয়ে এগিয়ে আসেন , ওই ব্যর্থ ...