সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

কবিতাঃ প্রেয়সীর জন্য এলিজি


                     
                     প্রেয়সী, কোমল রক্তলাল হৃদপিণ্ডে গেঁথে থাকো
                     যার থেকে ঝ’রে পড়ে করুণ অশ্রুবিন্দু, প্রবাহিত
                     স্রোতে মিশে যায় সবুজ অরণ্যেয়, অবিরল ধারায়
                     আমার হিংস্র গোলাপ কেঁপে উঠে নীল পদ্মদীঘিতে; 
                     নদীর অবিরল স্রোত ছুটে যায় নীলিমার পুণ্যজলে;
                     ভাবনার মৃদু স্পর্শে যারা হৃদয়কে নিয়ে যায় গভীর
                     গহ্বরে; জলতরঙ্গের সাথে তা মিশে থাকে উজ্জ্বল,
                     ব্যাপক, স্পর্শহীন, তরঙ্গরাশি, মৌলিক ভাবনায় কেঁপে
                     উঠা গভীর শূন্যলোকেতুষারের ন্যায় শুভ্র নদী ব’য়ে  
                     যায় হিরণ্ময় দিগন্তে, অফুরান তার শোভাময় শ্রুতি
                     আমার অলৌকিক স্বপ্নজলে, অন্তরঙ্গ, অবিস্মরণীয়,
                     একরাশ নীল আলোয় ঝ’রে প’ড়ে মুগ্ধময় প্লাবনে
                     তোমার রক্তিম সৌন্দর্যে, অমলিন পুষ্পপল্লবে পাখির
                     কণ্ঠস্বর হৃদয় স্পন্দনে, স্বপ্ন, স্মৃতি ভাবনা, জ্যোতির্ময়
                     আঙুলে খেলে যায় পূর্ণসুর, নিঃস্বর্গ অপার্থিব নীল ছোঁয়ায়
                     তা মিশে থাকে দীর্ঘ সরোবরের লাল নীল ঢেউয়ে;
                     রৌদ্রকণা ঝ’রে পড়ে অকস্মাৎ অন্তহীন জীবনের
                     নিবিড়তায়, গভীর জলে তার পরিত্যক্ত ছায়া, অন্তহীন
                     পাতালের অস্তিত্বহীনতায়অমল, উজ্জ্বল, স্নিগ্ধ, বিহ্বল
                     মৃদুময় জ্যোতির্ময় দিগন্তে নেমে আসে নীলিময় অতীন্দ্রিয়;
                     জলরেখার গভীর অতলে প্রেয়সীর প্রতিশ্রুতি মিশে যায়
                     বিস্ময় আবেগে, নির্জন টলোমলো পূর্ণিমার জলে শিশিরের
                     চিহ্ন মিশে থাকে বুকের গভীরে, প্লাবনে তা আবার
                     বিষাদময় বিধ্বস্ত সম্পর্কে; জোনাকিরা জ্বেলে যায় নীল
                     আলো আমার বিষাদময় আঁখিকোণে, সৌন্দর্যের গভীরে
                     লুকিয়ে থাকে জমানো বিস্ময়ে নির্বাক কণ্ঠস্বর, অদ্ভুত সব
                     আকাঙ্ক্ষা মর্মরিত সহিষ্ণু আমার ছুঁয়ে যাওয়া গভীর নিঃশব্দে।
              

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

প্রবন্ধঃ বিষ্ণু দে : ‘উর্বশী ও আর্টেমিস’ থেকে ‘চোরাবালি’

বিষ্ণু দে , তিরিশি কবিদের অন্যতম । কবিতা রচনাই যাঁর কাছে এক এবং অদ্বিতীয় হ ’ য়ে দেখা দেয় । কাব্যে সংখ্যার দিক থেকে অতিক্রম করেছেন সতীর্থদের । বিষ্ণু দে , যাঁর কবিতা রচনার সূচনা পর্বটিও শুরু হয় খুব দ্রুততম সময়ে । কবিতা সৃষ্টির পর্বটি অব্যাহত রেখেছেন সর্বদা । পঁচিশটি কবিতা নিয়ে ‘ উর্বশী ও আর্টেমিস ’- এ নিজেকে প্রকাশ করেন স্ব - মহিমায় । যে কবিতাগুলা বিস্ময়বিমুগ্ধ ক ’ রে অন্যেদেরকেও । ওই কবিতা শুধু বিষ্ণু দে ’ কে নয় , বরং নতুনতর হ ’ য়ে দেখা দেয় বাঙলা কবিতা । বিষ্ণু দে ’ র ‘ উর্বশী ও আর্টেমিস ’ রবীন্দ্রনাথকে পড়তে হয়েছিল দু ’ বার । ‘ উর্বশী ও আর্টেমিস ’- এর কবিতাগুলির রচনাকালের ব্যাপ্তি দেওয়া আছে ( ১৯২৮ - ১৯৩৩ ) সময়ের মধ্যে , এবং গ্রন্থকারে প্রকাশ পায় ওই একই বছরে অর্থাৎ , ১৯৩৩ - এ । কিন্তু রচনাকালের ব্যাপ্তি ১৯২৮ দেওয়া থাকলেও প্রকৃত পক্ষে এ সকল কবিতাগুলো রচনা পর্ব শুরু হয় আরো দু ’ বছর পূর্বে অর্থাৎ , ১৯২৬ - এ । যখন কবি হিশেবে বিষ্ণু দে একেবারেই নতুন এবং নবীন । ১৯৩৩ - এ ...

প্রবন্ধঃ অমিয় চক্রবর্তী : ‘বৃষ্টি’ নিয়ে তিনটি কবিতা

রবীন্দ্রনাথ, মেঘ-বরষা বৃষ্টি নিয়ে এতো সংখ্যক কবিতা লিখেছেন যে তাঁর সমান বা সমসংখ্যক কবিতা বাঙলায় কেউ লিখেনি। রবীন্দ্রনাথ, যাঁর কবিতায় বার বার এবং বহুবার ফিরে ফিরে এসেছে মেঘ, বরষা, বৃষ্টি। বৃষ্টি নামটি নিলেই মনে পড়ে কৈশোর পেড়িয়ে আসা রবীন্দ্রনাথের ওই কবিতাটির কথা। ‘দিনের আলো নিবে এল সূর্য্যি ডোবে ডোবে আকাশ ঘিরে মেঘ জুটেছে চাঁদের লোভে লোভে।’ বৃষ্টি নিয়ে কবিতা পড়ার কথা মনে পড়লে এটাই চলে আসে আমার মনে। অমিয় চক্রবর্তী বৃষ্টি নিয়ে লিখেছেন বেশ কিছু কবিতা। বাঙলায় বৃষ্টি নিয়ে কবিতা লিখেনি এমন কবির সংখ্যা খুব কম বা নেই বললেই চলে। অমিয় চক্রবর্তী, যাঁর কবিতায় পাই ‘বৃষ্টি’ নামক কিছু সৌন্দর্যময় কবিতা। যে কবিতাগুলো আমাকে বিস্ময় বিমুগ্ধ ক’রে। ওই কবিদের কারো কারো কবিতা দ্রুত নিঃশ্বাসে পড়া সম্ভবপর হয়ে উঠে না। বৃষ্টি নামক প্রথম কবিতাটি পাওয়া যাবে অমিয় চক্রবর্তীর ‘একমুঠোতে’। উন্নিশটি কবিতা নিয়ে গ’ড়ে উঠে ‘একমুঠো’ নামক কাব্য গ্রন্থটি। যেখান থেকে শ্রেষ্ঠ কবিতায় তুলে নেওয়া হয় চারটি কবিতা। আমার আরো ভালোলাগে ‘বৃষ্টি’ কবিতাটি ওই তালিকায় উঠে আসে। শ্রেষ্ঠ কবিতায় না আসলে আমার যে খুব খারাপ লাগতে তা-ও নয়। ওই কবিতা...

প্রবন্ধঃ বুদ্ধদেব বসু ও ‘কঙ্কাবতী’

বুদ্ধদেব বসু প্রেমের অজস্র কবিতা রচনা করেছেন । অন্য অনেকের মতো তিনিও বেছে নেন একজন প্রেমিকাকে , যে হ ’ য়ে উঠে বুদ্ধদেবের অতুল্য প্রেমিকা হিশেবে । ‘ কঙ্কাবতী ’ অনিন্দ্য প্রেমিকা হ ’ য়ে বুদ্ধদেবের কাব্যতে বিচরণ ক ’ রে স্বচ্ছন্দে । স্থির হয়ে বসে পড়ে কঙ্কাবতী ’ কাব্যগ্রন্থে । যে কাব্যগ্রন্থে ‘ কঙ্কাবতী ’ দেখা দেয় অনৈসর্গিক হয়ে । ‘ কঙ্কাবতী ’ কাব্য রচনার পূর্বে ‘ কঙ্কাবতীকে ’ দেখা দেয় অনৈসর্গিক হয়ে । ‘ কঙ্কাবতী ’ কাব্য রচনার পূর্বে কঙ্কাবতীকে আমরা দেখতে পাই অন্য কোনো কবিতায় । যেখানে সে প্রেমিকার কাছে হয়ে ওঠে কুৎসিত কঙ্কাল ব্যতীত অন্য কিছু নয় । প্রগাঢ় ভাবে প্রাপ্তির জন্যে সমস্ত কবিতা জুঁড়ে দেখতে পাই কবির অপরিবর্তনীয় আবেদন । কঙ্কাবতী , যাঁর সাথে কিছু বাক্য বিনিময়ের জন্যে রক্তের হিমবাহে দেখা দেয় চঞ্চলতা । সুপ্রিয়া প্রেমিকা মুখ তোলা মাত্র কবি হাঁরিয়ে ফেলেন ওই সৌন্দর্যময় বাক্যগুলো , যা বলার জন্যে অপেক্ষায় ছিলেন কবি দীর্ঘদিন । প্রেমিকা যখন খুব কাছাকাছি হয়ে এগিয়ে আসেন , ওই ব্যর্থ ...