আমরা কতিপয় ব্যক্তি;
তোমাদের শহরে এসেছি, এসেছি আমরা, অনেক দুঃখ
আর কষ্ট বু’কে ধারণ ক’রে; আমরা সকলে একে অন্যের আত্মার
আত্মীয়; বন্ধু
থেকেও বেশি। একই অঞ্চল থেকে আমাদের আগমন,
বিখ্যাত তা তোমাদের
মতো, যেখানে রচিত হয়েছিল দুঃখ আর বিষাদের কাব্যগাঁথা।
কয়েকটি পঙক্তি
ধারণ করেছি বুকের মাঝে; বলেছি তা মিলে
মিশে উচ্চস্বরে। পুরোহিত নই, সব
পারবো তাও বলিনি, বলেছি শুধু
হৃদয়ের জমানো গাঢ় শোকময় শ্লোকগুলো, যা
শুনেছিলাম আমাদের পিতামহদের নিকট থেকে। তাকে
আমরা দিয়েছি অমর সুর;
আর যন্ত্রণাময় বাণী। একা একা বলিনি সবকথা; বলেছি
থেমে থেমে, দলবদ্ধ ভাবে,
সুরে সুরে। যদি তা মিথ্যা হয়;
তা আমাদের জানা নেই, বাস্তবিক কোনো প্রতিকার
নেই; যা বলেছি বা বলিনি তোমাদের নিকট, হয়তো, সাদা
মেঘে উ’ড়ে যাবে শূন্যলোকে;
আমাদের প্রকাশিত বাণী, বিষাদ যন্ত্রণাময়
উচ্ছ্বাস; জোর করিনি তোমাদের, যা রয়েছে
আমাদের নিকট নেওয়ার জন্য। আমরা
এসেছি অনেক অনেক পথ অতিক্রম ক’রে; এই
সভ্যনগরে। যেখানে তোমাদের আলো আর ছায়া মিশে থাকে;
প্রতি কংক্রিটে আপন হ’য়ে।
আমরা অল্প সময়ের আগুন্তুক মাত্র, এই শহরে,
যেখানে নাকি রচিত হয় সফল আর
কিংবদন্তিদের স্বপ্নগাঁথা; তার জগত জু’ড়ে। অনেক
অনেক আপন মনে তাকিয়েছি;
তোমাদের মুখ আর ছায়ার দিকে, যারা বহন ক’রে প্রস্ফুটিত
ভাবনার করুণ চিহ্ন; সমস্ত
শরীর জুড়ে স্থিতে। আমাদের কণ্ঠের সুর থেকে জেগে
উঠেছে; কষ্টের কথা অনেক
বেশি; আজ যেন সব সুর হারিয়েছে আমাদের হারানো
লৌকিক ভাবনার কল্পলোকে;
বিষাদের সুরে কেঁপে কেঁপে, মর্মরিত সকল ভাবনা যা বেঁচে ছিল হৃদয়ের গভীরে,
সমস্ত স্তব্ধতা যেনো খেলা ক’রে আপন শরীরে, সমবেত
কণ্ঠে, বিবর্ণ পূর্ণিমার চাঁদে।
আমরা থাকতে আসিনি; তোমাদের জড়াজীর্ণ এই শহরে,
যাকে অনেক অনেক আপন
ক’রে তোলো বুকের গভীরে, অদ্ভুত আর আশ্চর্য
সুন্দর ক’রে। সন্ধ্যা আর মধ্যেরাতের
স্তব্ধতা কোমল সুরে; জড়ো হয় রক্তের গভীরে, ধীরে
ধীরে, কম্পিত ধারায় আমার দিকে
দিকে। তোমাদের শহর, রাত্রি আর দিনকে এক ক’রে
ফেলে, আমাদের মৌনতায়, তার
সুরে সুরে। হারিয়েছি আমরা তোমাদের শহরে জ্যোৎস্না
আর শ্রাবণ ধারার বিগলিত হিম;
শিশির, মেঘ, সুর, কম্পন আর বৈশাখের ঊর্মিল হাওয়া;
রৌদ্রমাখা বিস্ময় আর প্রাজ্ঞতায়,
যেখানে তোমরা ব’লো নিসর্গ নেমে আসে দু’চোখের
একান্ত গভীরে; নীল ছোঁয়ায় স্তরে;
সৌন্দর্যকে পিছে ফেলে আমরা চলে যাবো, সন্ধ্যার
ঘন কুয়াশায় গেঁথে থাকা আদিম দিনে।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন