সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

কবিতাঃ সন্ধ্যায়, আলো ও আঁধারে



  তোমাকে দেওয়া হ’লো রূপ, স্বর্ণখচিত সৌন্দর্য অবয়বে
                     রঙিন আলোতে ভ’রে এলো আমার আঁখিকোণ, মঞ্চে
                     এসে পড়লো বিচ্ছুরিত আলোককণা তোমার পবিত্রতায়।
                     কতো কীর্তিমান প’ড়ে রইলো তোমার পদতলে, যারা
                     সাহসী, সৌন্দর্যময়ী  আর সফল ব’লে কিংবদন্তী রয়েছে
                     সমাজ সভ্যতায়। গাঢ়সন্ধ্যায় আমি তোমার দিকে এগিয়ে  
                     যাই আগন্তুকের মতো, নিদিষ্ট কোনো গন্তব্য জানা নেই,
                     তোমার আলোকিত আলোয়, ভ’রে এলো আমার মসৃণ
                     শরীর, নিসর্গের মৃদু পদপাতে, কোমল শিশিরের ছোঁয়ায়।
                     নীরবতা ভেঙে চতুর্দিকে ভ’রে গেল সঙ্গীতের করুণ সুর,
                     আমার অমল সন্ধ্যায়, নীলবীথির হৃদপিণ্ডে গেঁথে নিই বিষ,
                     আমি আরো এগিয়ে যাই, সমস্ত জ্যোতির্ময় সৌন্দর্যকে পিছে
                     ফেলে ভাবনার গভীরে। নারীপুরুষের অব্যক্ত সংলাপে ভেসে
                     উ’ঠে চতুর্দিক। লাল নীল সবুজ জ্যোতির্ময় আলোয় মুহূর্তে
                     ভ’রে উ’ঠে জীর্ণ সরু পথ, চারিদিক ভ’রে এলো তরঙ্গরাশি
                     আমার কম্পিত অবয়ব কেঁপে উ’ঠে তার সকল সৌন্দর্যে,
                     তাঁরা তোমার বক্ষে দিল অপার হিরে-মাণিক্য খচিত সৌন্দর্য
                     অবয়বে মসৃণতা, শিল্পীর স্বাধীন ছোঁয়া, তোমার কঠিন রূপ
                     আমাকেও বিহ্বল ক’রে তোলে, জ্যোতির্ময় সৌন্দর্য আমাকেও
                     নিয়ে যায় নিসর্গ ভাবনায়, হারানো স্বপ্নে। ভুলে গেলাম তার
                     অতীত বর্তমান আর ভবিষাৎ, নারীরা গেঁয়ে উঠলো পবিত্র
                     শ্লোক পুণ্যময় প্রাণে হৃদয়ের গভীরে, পুরুষ দিলো অভয়বাণী
                     তার দিকে দিকেপদস্খলে তাদেরই নিলে, একদা যারা
                     তোমারই অনিষ্ঠ কামনা করে হৃদয়ের মর্মে। আমি হেঁটে
                     যাই একাকী, নিঃসঙ্গ মননে। জেগে উ’ঠে তার শ্রুতিতে
                     অপার সঙ্গীত। আমি আরো এগিয়ে যাই, দিক্বিদিক
                     শূন্যলোকে, হারানো অশ্রুতে গেঁথে থাকে সুর। তোমার
                     দিকে দিকে কেঁপে উঠে আমার রক্তিম ঠোঁট, স্পর্শহীন
                     ভাবনায়, শূন্যতার মুখোমুখি, বিশাল ব্যাপক শ্রাবণজল।               
               


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

প্রবন্ধঃ বিষ্ণু দে : ‘উর্বশী ও আর্টেমিস’ থেকে ‘চোরাবালি’

বিষ্ণু দে , তিরিশি কবিদের অন্যতম । কবিতা রচনাই যাঁর কাছে এক এবং অদ্বিতীয় হ ’ য়ে দেখা দেয় । কাব্যে সংখ্যার দিক থেকে অতিক্রম করেছেন সতীর্থদের । বিষ্ণু দে , যাঁর কবিতা রচনার সূচনা পর্বটিও শুরু হয় খুব দ্রুততম সময়ে । কবিতা সৃষ্টির পর্বটি অব্যাহত রেখেছেন সর্বদা । পঁচিশটি কবিতা নিয়ে ‘ উর্বশী ও আর্টেমিস ’- এ নিজেকে প্রকাশ করেন স্ব - মহিমায় । যে কবিতাগুলা বিস্ময়বিমুগ্ধ ক ’ রে অন্যেদেরকেও । ওই কবিতা শুধু বিষ্ণু দে ’ কে নয় , বরং নতুনতর হ ’ য়ে দেখা দেয় বাঙলা কবিতা । বিষ্ণু দে ’ র ‘ উর্বশী ও আর্টেমিস ’ রবীন্দ্রনাথকে পড়তে হয়েছিল দু ’ বার । ‘ উর্বশী ও আর্টেমিস ’- এর কবিতাগুলির রচনাকালের ব্যাপ্তি দেওয়া আছে ( ১৯২৮ - ১৯৩৩ ) সময়ের মধ্যে , এবং গ্রন্থকারে প্রকাশ পায় ওই একই বছরে অর্থাৎ , ১৯৩৩ - এ । কিন্তু রচনাকালের ব্যাপ্তি ১৯২৮ দেওয়া থাকলেও প্রকৃত পক্ষে এ সকল কবিতাগুলো রচনা পর্ব শুরু হয় আরো দু ’ বছর পূর্বে অর্থাৎ , ১৯২৬ - এ । যখন কবি হিশেবে বিষ্ণু দে একেবারেই নতুন এবং নবীন । ১৯৩৩ - এ ...

প্রবন্ধঃ অমিয় চক্রবর্তী : ‘বৃষ্টি’ নিয়ে তিনটি কবিতা

রবীন্দ্রনাথ, মেঘ-বরষা বৃষ্টি নিয়ে এতো সংখ্যক কবিতা লিখেছেন যে তাঁর সমান বা সমসংখ্যক কবিতা বাঙলায় কেউ লিখেনি। রবীন্দ্রনাথ, যাঁর কবিতায় বার বার এবং বহুবার ফিরে ফিরে এসেছে মেঘ, বরষা, বৃষ্টি। বৃষ্টি নামটি নিলেই মনে পড়ে কৈশোর পেড়িয়ে আসা রবীন্দ্রনাথের ওই কবিতাটির কথা। ‘দিনের আলো নিবে এল সূর্য্যি ডোবে ডোবে আকাশ ঘিরে মেঘ জুটেছে চাঁদের লোভে লোভে।’ বৃষ্টি নিয়ে কবিতা পড়ার কথা মনে পড়লে এটাই চলে আসে আমার মনে। অমিয় চক্রবর্তী বৃষ্টি নিয়ে লিখেছেন বেশ কিছু কবিতা। বাঙলায় বৃষ্টি নিয়ে কবিতা লিখেনি এমন কবির সংখ্যা খুব কম বা নেই বললেই চলে। অমিয় চক্রবর্তী, যাঁর কবিতায় পাই ‘বৃষ্টি’ নামক কিছু সৌন্দর্যময় কবিতা। যে কবিতাগুলো আমাকে বিস্ময় বিমুগ্ধ ক’রে। ওই কবিদের কারো কারো কবিতা দ্রুত নিঃশ্বাসে পড়া সম্ভবপর হয়ে উঠে না। বৃষ্টি নামক প্রথম কবিতাটি পাওয়া যাবে অমিয় চক্রবর্তীর ‘একমুঠোতে’। উন্নিশটি কবিতা নিয়ে গ’ড়ে উঠে ‘একমুঠো’ নামক কাব্য গ্রন্থটি। যেখান থেকে শ্রেষ্ঠ কবিতায় তুলে নেওয়া হয় চারটি কবিতা। আমার আরো ভালোলাগে ‘বৃষ্টি’ কবিতাটি ওই তালিকায় উঠে আসে। শ্রেষ্ঠ কবিতায় না আসলে আমার যে খুব খারাপ লাগতে তা-ও নয়। ওই কবিতা...

প্রবন্ধঃ বুদ্ধদেব বসু ও ‘কঙ্কাবতী’

বুদ্ধদেব বসু প্রেমের অজস্র কবিতা রচনা করেছেন । অন্য অনেকের মতো তিনিও বেছে নেন একজন প্রেমিকাকে , যে হ ’ য়ে উঠে বুদ্ধদেবের অতুল্য প্রেমিকা হিশেবে । ‘ কঙ্কাবতী ’ অনিন্দ্য প্রেমিকা হ ’ য়ে বুদ্ধদেবের কাব্যতে বিচরণ ক ’ রে স্বচ্ছন্দে । স্থির হয়ে বসে পড়ে কঙ্কাবতী ’ কাব্যগ্রন্থে । যে কাব্যগ্রন্থে ‘ কঙ্কাবতী ’ দেখা দেয় অনৈসর্গিক হয়ে । ‘ কঙ্কাবতী ’ কাব্য রচনার পূর্বে ‘ কঙ্কাবতীকে ’ দেখা দেয় অনৈসর্গিক হয়ে । ‘ কঙ্কাবতী ’ কাব্য রচনার পূর্বে কঙ্কাবতীকে আমরা দেখতে পাই অন্য কোনো কবিতায় । যেখানে সে প্রেমিকার কাছে হয়ে ওঠে কুৎসিত কঙ্কাল ব্যতীত অন্য কিছু নয় । প্রগাঢ় ভাবে প্রাপ্তির জন্যে সমস্ত কবিতা জুঁড়ে দেখতে পাই কবির অপরিবর্তনীয় আবেদন । কঙ্কাবতী , যাঁর সাথে কিছু বাক্য বিনিময়ের জন্যে রক্তের হিমবাহে দেখা দেয় চঞ্চলতা । সুপ্রিয়া প্রেমিকা মুখ তোলা মাত্র কবি হাঁরিয়ে ফেলেন ওই সৌন্দর্যময় বাক্যগুলো , যা বলার জন্যে অপেক্ষায় ছিলেন কবি দীর্ঘদিন । প্রেমিকা যখন খুব কাছাকাছি হয়ে এগিয়ে আসেন , ওই ব্যর্থ ...