সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

কবিতাঃ শোকার্ত মধ্যেদিনের গান


                আশ্চর্য সুন্দরের সাথে, পায়ে পা মেলে আমিও এগিয়ে গেলাম, মেঘের নরম
                ভাজে, গেঁথে থাকলো জীবনের জটিল আহ্বান, স্তব্ধ মুহূর্তে মুছে গেল রচিত
                সকল অমর কাব্য শোকার্ত দিনে, চাঁদের সৌন্দর্য আর জ্যোতির্ময় আলোয় ম্লান
                হ’য়ে ঝ’রে প’ড়ে প্রোজ্জ্বল ভাবনার চোখে-গাঢ় তিতিক্ষায়; সেই সাথে তার
                আকাঙ্ক্ষার সব চিহ্ন ঝ’রে প’ড়ে বসন্তের হাওয়ায়, ব্যাকুল নিবিড়তায়-
                           ঔদার্যহীনতা ভেসে যায় অতীতের উত্তরাধিকারে চৈত্রের কোমল বাতাসে,
                রচিত সুর আত্মপ্রেমে ভুলে যায় চাপা কান্নার দীর্ঘশ্বাসে, পাণ্ডুলিপির অক্ষর

                হারিয়ে যায় শুভ্র আঙুলের ছোঁয়ায়; রুপালী নীল স্রোতের ঢেউয়ের বু’কে-
                নির্মল সম্পর্ক মুহূর্তে ধোঁয়াশা ছড়িয়ে দেয় অতীতের টুকরো-টুকরো স্পর্শে,
                স্তব্ধ আর বিশাল রাত্রির জ্বলন্ত অগ্নিতে, নিঃশেষে মিশে যায় মনের অন্তর্দাহ,
                           অদৃশ্য আমার গান, ক্লান্তির অপরূপে, মৃত্যুর সৌন্দর্যে, প্রতিধ্বনির শরীরে-
                বু’কের ঐশ্বর্যে, কঠিন চুম্বনের মধুরতায়; আমার হৃদপিণ্ড গ’লে প’ড়ে হিমে-

                শিউলির বোঁটায় জ’মে উ’ঠে সবুজ সম্পর্ক হিমস্পর্শে; বিমুগ্ধ সকল প্রকাশ
                ভাবনার আড়ালে, শূন্যতায় উ’ড়ে গেল, শিশিরের ছোঁয়া রাত্রির গাঢ় অন্ধকারে-
                অশ্রুকণা জ’মে উ’ঠে হারানো অন্তরের গভীরে; বিস্ময়ে স্মৃতির অম্লান মুহূর্তে,
আপন ক’রে ডুব দিই শ্রাবণজলে; স্মৃতির পাতায় জ’মে উ’ঠে লাল-নীল দীপাবলি
অলৌকিক অন্ধকারে; আমার হারানো সুর হারিয়ে ফেলি মাঘের রাতে-সৌন্দর্যে,  
তাঁদের কণ্ঠে সুর রাখি শোকার্ত মিছিলে, যেখানে জ’মে উ’ঠে নগরের কোলাহল,
চন্দনের সুঘ্রাণ ব’য়ে যায় আমার চতুর্দিকে, গভীর রাতে ফিরে আসি কোমল
আলিঙ্গনে, তীব্র চুম্বনে গেঁথে দিই লাবণ্যধারা নীলবনে; ঠোঁটে ব’য়ে মায়ানদী,  
পলিমাটির বু’কে রোপণ করি সবুজ ঘাস আমার নির্দিষ্ট ভৌগোলিক সীমানায়,
বিষাক্ত ক্ষতে জমা হয় হলুদ পুঁজ, নিসর্গনীলিমার শুভ্র শরীরে অতীন্দ্রিয় তুষারে

বিলীন হ’য়ে উ’ঠে কারুকার্যময় সৌন্দর্য জল ও বাতাসে, ঝ’রে প’ড়ে পবিত্র
সম্পর্ক আমার সহস্র নিটোল জ্যোতির্ময় প্রেমে, গাঢ় বৃষ্টির ফোঁটায় ধু’য়ে যায়
কবিতার নিরর্থক পঙক্তি; শতাব্দীর প্রোজ্জ্বল আলোয় নিভে আসে আমার দীর্ঘ
কাল্পনিক স্বপ্ন, একফোঁটা উজ্জ্বল আভাসে, ঢেউয়ের সঙ্গে মিশে যায় আঙুলের
কোমলধারা, মায়াবী টেবিল জু’ড়ে পড়ে থাকে পুস্পপল্লব, নীল আলোয় জন্ম
নেয় সংগীতের অমর সুর স্বপ্নের লাল ঠোঁটে; নীলছোঁয়া ডানা আমি মেলে দিই
দিক্বিদিক দৃশ্যের গভীরে, নৈসর্গিক দীপ্ত চেতনায় বেড়ে উ’ঠে নিজস্ব অপরূপ
ধারা, যে মণি-মাণিক্য ছেড়ে পরিশুদ্ধ বু’কে লালন ক’রে আশ্চর্যজনক শূন্যতা;
  

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

প্রবন্ধঃ বুদ্ধদেব বসু ও ‘কঙ্কাবতী’

বুদ্ধদেব বসু প্রেমের অজস্র কবিতা রচনা করেছেন । অন্য অনেকের মতো তিনিও বেছে নেন একজন প্রেমিকাকে , যে হ ’ য়ে উঠে বুদ্ধদেবের অতুল্য প্রেমিকা হিশেবে । ‘ কঙ্কাবতী ’ অনিন্দ্য প্রেমিকা হ ’ য়ে বুদ্ধদেবের কাব্যতে বিচরণ ক ’ রে স্বচ্ছন্দে । স্থির হয়ে বসে পড়ে কঙ্কাবতী ’ কাব্যগ্রন্থে । যে কাব্যগ্রন্থে ‘ কঙ্কাবতী ’ দেখা দেয় অনৈসর্গিক হয়ে । ‘ কঙ্কাবতী ’ কাব্য রচনার পূর্বে ‘ কঙ্কাবতীকে ’ দেখা দেয় অনৈসর্গিক হয়ে । ‘ কঙ্কাবতী ’ কাব্য রচনার পূর্বে কঙ্কাবতীকে আমরা দেখতে পাই অন্য কোনো কবিতায় । যেখানে সে প্রেমিকার কাছে হয়ে ওঠে কুৎসিত কঙ্কাল ব্যতীত অন্য কিছু নয় । প্রগাঢ় ভাবে প্রাপ্তির জন্যে সমস্ত কবিতা জুঁড়ে দেখতে পাই কবির অপরিবর্তনীয় আবেদন । কঙ্কাবতী , যাঁর সাথে কিছু বাক্য বিনিময়ের জন্যে রক্তের হিমবাহে দেখা দেয় চঞ্চলতা । সুপ্রিয়া প্রেমিকা মুখ তোলা মাত্র কবি হাঁরিয়ে ফেলেন ওই সৌন্দর্যময় বাক্যগুলো , যা বলার জন্যে অপেক্ষায় ছিলেন কবি দীর্ঘদিন । প্রেমিকা যখন খুব কাছাকাছি হয়ে এগিয়ে আসেন , ওই ব্যর্থ ...

প্রবন্ধঃ অমিয় চক্রবর্তী : ‘বৃষ্টি’ নিয়ে তিনটি কবিতা

রবীন্দ্রনাথ, মেঘ-বরষা বৃষ্টি নিয়ে এতো সংখ্যক কবিতা লিখেছেন যে তাঁর সমান বা সমসংখ্যক কবিতা বাঙলায় কেউ লিখেনি। রবীন্দ্রনাথ, যাঁর কবিতায় বার বার এবং বহুবার ফিরে ফিরে এসেছে মেঘ, বরষা, বৃষ্টি। বৃষ্টি নামটি নিলেই মনে পড়ে কৈশোর পেড়িয়ে আসা রবীন্দ্রনাথের ওই কবিতাটির কথা। ‘দিনের আলো নিবে এল সূর্য্যি ডোবে ডোবে আকাশ ঘিরে মেঘ জুটেছে চাঁদের লোভে লোভে।’ বৃষ্টি নিয়ে কবিতা পড়ার কথা মনে পড়লে এটাই চলে আসে আমার মনে। অমিয় চক্রবর্তী বৃষ্টি নিয়ে লিখেছেন বেশ কিছু কবিতা। বাঙলায় বৃষ্টি নিয়ে কবিতা লিখেনি এমন কবির সংখ্যা খুব কম বা নেই বললেই চলে। অমিয় চক্রবর্তী, যাঁর কবিতায় পাই ‘বৃষ্টি’ নামক কিছু সৌন্দর্যময় কবিতা। যে কবিতাগুলো আমাকে বিস্ময় বিমুগ্ধ ক’রে। ওই কবিদের কারো কারো কবিতা দ্রুত নিঃশ্বাসে পড়া সম্ভবপর হয়ে উঠে না। বৃষ্টি নামক প্রথম কবিতাটি পাওয়া যাবে অমিয় চক্রবর্তীর ‘একমুঠোতে’। উন্নিশটি কবিতা নিয়ে গ’ড়ে উঠে ‘একমুঠো’ নামক কাব্য গ্রন্থটি। যেখান থেকে শ্রেষ্ঠ কবিতায় তুলে নেওয়া হয় চারটি কবিতা। আমার আরো ভালোলাগে ‘বৃষ্টি’ কবিতাটি ওই তালিকায় উঠে আসে। শ্রেষ্ঠ কবিতায় না আসলে আমার যে খুব খারাপ লাগতে তা-ও নয়। ওই কবিতা...

প্রবন্ধঃ সুধীন্দ্রনাথ দত্তের প্রবন্ধ সংগ্রহ

সুধীন্দ্রনাথ , সাতটি কাব্যগ্রন্থের মতো সাতটি প্রবন্ধের গ্রন্থ লিখলে খারাপ হতো না , বেশ ভালোই হতো । সুধীন্দ্রনাথের প্রবন্ধগুলো হালকা মানের নয় , যদিও তাঁর কোন রচনাই হালকা নয় । সাহিত্যে বিচারে তা অনেক উঁচুমানের । তার উপর ভাষার ব্যাপারটি তো রয়েছেই । সুধীন্দ্রনাথ মাত্র দুটি প্রবন্ধ গ্রন্থ রচনা করেছেন । গ্রন্থ দুটো ‘ স্বগত ’ ( ১৩৪৫ ঃ ১৯৩৮ ), অপরটি ‘ কুলায় ও কালপুরুষ ’ ( ১৩৬৪ : ১৯৫৭ ) । ‘ স্বগত ’- তে রয়েছে ষোলটি প্রবন্ধ । গ্রন্থ দুটি তিনি রচনা করেছেন দু ’ ভাগে । লরেন্স বা এলিয়ট এর প্রবন্ধ যেমন পাওয়া যাবে না ‘ কুলায় ও কালপুরুষ ’- এ ; তেমনি রবীন্দ্র সম্পর্কিত প্রবন্ধ নেওয়া হয়নি ‘ স্বগত ’- এ । প্রকাশ কাল অনুযায়ী ‘ স্বগত ’- এর প্রবন্ধসমূহ : ‘ কাব্যের মুক্তি ’ ( ১৯৩০ ); ‘ ধ্রুপদ পদ - খেয়াল ’ ( ১৯৩২ ), ‘ ফরাসীর হাদ্য পরিবর্তন ’ ( ১৯৩২ ), ‘ লিটনস্ট্রেচি ’ ( ১৯৩২ ), ‘ লরেন্স ও ভার্জনিয়া উল্ফ্ ’ ( ১৯৩২ ), ‘ উপন্যাস তত্ত্ব ও তথ্য ’ ( ১৯৩৩ ), ‘ উইলিয়ম ফকনর ’ ( ১৯৩৪ ), ‘ ঐতিহ্য ও টি , এস , এলিয়ট ’ ( ১৯৩৪ ), ...