চৈত্রের বাতাসে কেঁপে-কেঁপে
ধরা দেয় আমার মসৃণ দেহে, জীবনের রঙে,
সে বড় হাওয়ার রাত, কল্পনায় বেজে উ’ঠে পুরাতন
ঢেউ দিগন্তের শেষে-
মাটির দেয়ালে লেপে দিই কঠিন চিত্র, শিল্পীর
তুলিতে, হারানো গল্প বলি
মনের শূন্য বুক থেকে, ফিরে আয় আমার হারানো
স্মৃতি- যা নিভে গেছে
কয়েক দশক পূর্বে বুকের গভীর থেকে, অথচ অনেক
আবর্জনা জ’মে গেছে
কোমল আর শুভ্র বেষ্টিত সবুজ অরণ্যেয়; আমার দীর্ঘশ্বাস,
তাদের খুঁজে ফিরি
জ্যোৎস্না আর রাশি-রাশি রৌদ্রজ্জ্বল দিনের
শেষে, কোমল বাহুতে ধরা দাও;
স্তব্ধ প্রতীক্ষার অবসান ঘুচে যাক অগ্নিগিরির উত্তাপে
পার্থিব জ্যোতির্ময়ে,
আশ্রয় পাক আমার অলৌকিক হৃদয়ের নক্ষত্রে,
শ্রাবণের অমল শিশিরে-
আকাঙ্ক্ষা আর স্বপ্নের
সিঁড়িতে পা রাখ, নিশ্চয়তা দাও সকল সৌন্দর্যের
শব্দ গেঁথে থাকবে অতল বু’কে; শিশিরের
মতো শব্দ ক’রে
ঝ’রে প’ড়ে
আমার গাঢ় অশ্রুকণা, স্লিগ্ধ চোখের কোণে ঘুরে ফিরে আলো ও আঁধারে,
হাওয়ার রাতে ধরা দেয় শাদা হাত,
শ্রাবণের সন্ধ্যায়, আমি জ্বেলে দিই
উজ্জ্বল আলো আমার চতুর্দিকে; সোনালি
হৃদয়ে, নক্ষত্রের সুপ্ত প্রান্তরে,
শালবন আর দেবদারুর ছায়া একাকার
হ’য়ে মিশে যায় বিবর্ণ সংলাপে,
আমার বাগানে গন্ধ ছড়ায়
চন্দ্রমল্লিকা, হাসনাহেনা, কামিনী আর গন্ধরাজ
হাওয়ার রাত, তুমি ফিরে আসো হালকা
ছায়া মেখে ঝিরঝিরে বাতাসে
আমার বিষণ্ণতা আর ছুঁয়ে যাওয়া
গোলাপ পাপড়িতে, দীপাবলির আলোয়,
পলিমাটির বু’কে জমে উ’ঠে সবুজ
ফসল, উজ্জ্বল-সোনালি কারুকার্যময়
ভালোবাসার হাতে, বিস্ময়কর আমার আশ্চর্যজনক সৌন্দর্যের
লীলাভূমি,
শোভাময় তার রচিত দিনলিপি,
নিসর্গের ভাবনার স্বপ্নজলে, দিগন্তপ্রলুব্ধ
অলৌকিক বাতাসে, শিশির ফোঁটায়
ভ’রে উ’ঠে আমার হলদে সর্ষেক্ষেত,
হাওয়ার রাত, তুমি ফিরে আসো
চাঁদজ্বলা আলো নিয়ে কিশোরের বুকে।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন