সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

কবিতাঃ নিঃসঙ্গতা ও একটি নীল জ্যোৎস্না

                    মনে প’ড়ে না তোমার কথা, খুব বেশী যে চেষ্টা করেছি তাও নয়-

                   ভাবনার সাথে মিশে থাকি একান্ত হ’য়ে, গভীর বু’কে জ’মে থাকে অনেক

                   আবর্জনা শতাব্দীর অমল শিশিরে, সান্ত্বনা দিয়ে তাদের ঘুমিয়ে রাখি

                   আলতো ক’রে মনের কোণে; নিসর্গ সন্ধ্যায় ঝ’রে প’ড়ে নীল জ্যোৎস্না আমার

                   বারান্দায়, রক্তজবা তার ডাল বিছিয়ে দেয় কোমল হাতের নিবিড় স্পর্শে;    

                   হারিয়ে ফেলি সৌন্দর্যের সকল অর্থ কবিতার পাতা থেকে রূপসীর দীপ্ত চোখে,

 

 

 

                   ঘুমহীন সারা রাত কেটে যায় অমল জ্যোৎস্নার সবুজ বাতাসের কোমল ঠোঁটে;

                   আমার দু’চোখ থেকে কেঁপে-কেঁপে ঝ’রে প’ড়ে শ্রাবণের জল শিশিরের ছোঁয়ায়

                   ঘাসের সবুজে তাদের বাঁচিয়ে রাখি গাঢ় অন্ধকারে, অজস্র স্বপ্ন ভেঙে যায়

                   চন্দ্রালোকের জ্যোতির্ময়ে, স্বরহীন আমার সমস্ত বাক্য খুঁজে ফিরে গভীর স্তব্ধতা

 

 

                   তীব্র ভালোবাসায় মিশে যায় গাঢ় উপলব্ধি, সুগভীর ভাবনার সাথে স্মৃতিরা

                   মিশে থাকে বিস্ময়রূপে; সৌন্দর্যের অর্থও যেন বিলীন হ’য়ে যায় মুহূর্তে-  

                                     হৃদয়ের গভীরে শুধুই শূন্যতা, সুনিপুণ হাতের মুঠোয় লুকিয়ে রাখি অলৌকিক

                   স্বপ্নগুলোকে, বিন্দু-বিন্দু আলোক রেখা জ্বলে উ’ঠে উজ্জ্বল সন্ধ্যা নদীর ধারে;

                   তাকিয়ে থাকি সেই সব বিস্ময়ের দিকে, প্রাগৈতিহাসিক নীলিমার ঐশ্বর্যে

                   উজ্জ্বলতা ছড়ায় প্রতিভার স্নিগ্ধ গভীরে, নিবিড় আলিঙ্গনে মিশে থাকে

 

                   শরীরের সুগন্ধ শিল্পকলার কোমল স্পর্শে, জ্যোৎস্নার বাতাসে দুলতে থাকে

                   শব্দহীন আমার অনিন্দ্য গন্ধরাজ, শ্রাবণের ঢেউ তাদের মিশিয়ে দিয়ে যায়

                   শূন্যতার গভীরে, উজ্জ্বল আকাশে উ’ড়ে বেড়ায় নীলিমার নক্ষত্রপুঞ্জের

                   ঐশ্বর্য অবিরত, গভীর সন্ধ্যায় নরম হাত ছুঁয়ে যায় আমার কোমল বু’কে। 

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

প্রবন্ধঃ বিষ্ণু দে : ‘উর্বশী ও আর্টেমিস’ থেকে ‘চোরাবালি’

বিষ্ণু দে , তিরিশি কবিদের অন্যতম । কবিতা রচনাই যাঁর কাছে এক এবং অদ্বিতীয় হ ’ য়ে দেখা দেয় । কাব্যে সংখ্যার দিক থেকে অতিক্রম করেছেন সতীর্থদের । বিষ্ণু দে , যাঁর কবিতা রচনার সূচনা পর্বটিও শুরু হয় খুব দ্রুততম সময়ে । কবিতা সৃষ্টির পর্বটি অব্যাহত রেখেছেন সর্বদা । পঁচিশটি কবিতা নিয়ে ‘ উর্বশী ও আর্টেমিস ’- এ নিজেকে প্রকাশ করেন স্ব - মহিমায় । যে কবিতাগুলা বিস্ময়বিমুগ্ধ ক ’ রে অন্যেদেরকেও । ওই কবিতা শুধু বিষ্ণু দে ’ কে নয় , বরং নতুনতর হ ’ য়ে দেখা দেয় বাঙলা কবিতা । বিষ্ণু দে ’ র ‘ উর্বশী ও আর্টেমিস ’ রবীন্দ্রনাথকে পড়তে হয়েছিল দু ’ বার । ‘ উর্বশী ও আর্টেমিস ’- এর কবিতাগুলির রচনাকালের ব্যাপ্তি দেওয়া আছে ( ১৯২৮ - ১৯৩৩ ) সময়ের মধ্যে , এবং গ্রন্থকারে প্রকাশ পায় ওই একই বছরে অর্থাৎ , ১৯৩৩ - এ । কিন্তু রচনাকালের ব্যাপ্তি ১৯২৮ দেওয়া থাকলেও প্রকৃত পক্ষে এ সকল কবিতাগুলো রচনা পর্ব শুরু হয় আরো দু ’ বছর পূর্বে অর্থাৎ , ১৯২৬ - এ । যখন কবি হিশেবে বিষ্ণু দে একেবারেই নতুন এবং নবীন । ১৯৩৩ - এ ...

প্রবন্ধঃ অমিয় চক্রবর্তী : ‘বৃষ্টি’ নিয়ে তিনটি কবিতা

রবীন্দ্রনাথ, মেঘ-বরষা বৃষ্টি নিয়ে এতো সংখ্যক কবিতা লিখেছেন যে তাঁর সমান বা সমসংখ্যক কবিতা বাঙলায় কেউ লিখেনি। রবীন্দ্রনাথ, যাঁর কবিতায় বার বার এবং বহুবার ফিরে ফিরে এসেছে মেঘ, বরষা, বৃষ্টি। বৃষ্টি নামটি নিলেই মনে পড়ে কৈশোর পেড়িয়ে আসা রবীন্দ্রনাথের ওই কবিতাটির কথা। ‘দিনের আলো নিবে এল সূর্য্যি ডোবে ডোবে আকাশ ঘিরে মেঘ জুটেছে চাঁদের লোভে লোভে।’ বৃষ্টি নিয়ে কবিতা পড়ার কথা মনে পড়লে এটাই চলে আসে আমার মনে। অমিয় চক্রবর্তী বৃষ্টি নিয়ে লিখেছেন বেশ কিছু কবিতা। বাঙলায় বৃষ্টি নিয়ে কবিতা লিখেনি এমন কবির সংখ্যা খুব কম বা নেই বললেই চলে। অমিয় চক্রবর্তী, যাঁর কবিতায় পাই ‘বৃষ্টি’ নামক কিছু সৌন্দর্যময় কবিতা। যে কবিতাগুলো আমাকে বিস্ময় বিমুগ্ধ ক’রে। ওই কবিদের কারো কারো কবিতা দ্রুত নিঃশ্বাসে পড়া সম্ভবপর হয়ে উঠে না। বৃষ্টি নামক প্রথম কবিতাটি পাওয়া যাবে অমিয় চক্রবর্তীর ‘একমুঠোতে’। উন্নিশটি কবিতা নিয়ে গ’ড়ে উঠে ‘একমুঠো’ নামক কাব্য গ্রন্থটি। যেখান থেকে শ্রেষ্ঠ কবিতায় তুলে নেওয়া হয় চারটি কবিতা। আমার আরো ভালোলাগে ‘বৃষ্টি’ কবিতাটি ওই তালিকায় উঠে আসে। শ্রেষ্ঠ কবিতায় না আসলে আমার যে খুব খারাপ লাগতে তা-ও নয়। ওই কবিতা...

প্রবন্ধঃ বুদ্ধদেব বসু ও ‘কঙ্কাবতী’

বুদ্ধদেব বসু প্রেমের অজস্র কবিতা রচনা করেছেন । অন্য অনেকের মতো তিনিও বেছে নেন একজন প্রেমিকাকে , যে হ ’ য়ে উঠে বুদ্ধদেবের অতুল্য প্রেমিকা হিশেবে । ‘ কঙ্কাবতী ’ অনিন্দ্য প্রেমিকা হ ’ য়ে বুদ্ধদেবের কাব্যতে বিচরণ ক ’ রে স্বচ্ছন্দে । স্থির হয়ে বসে পড়ে কঙ্কাবতী ’ কাব্যগ্রন্থে । যে কাব্যগ্রন্থে ‘ কঙ্কাবতী ’ দেখা দেয় অনৈসর্গিক হয়ে । ‘ কঙ্কাবতী ’ কাব্য রচনার পূর্বে ‘ কঙ্কাবতীকে ’ দেখা দেয় অনৈসর্গিক হয়ে । ‘ কঙ্কাবতী ’ কাব্য রচনার পূর্বে কঙ্কাবতীকে আমরা দেখতে পাই অন্য কোনো কবিতায় । যেখানে সে প্রেমিকার কাছে হয়ে ওঠে কুৎসিত কঙ্কাল ব্যতীত অন্য কিছু নয় । প্রগাঢ় ভাবে প্রাপ্তির জন্যে সমস্ত কবিতা জুঁড়ে দেখতে পাই কবির অপরিবর্তনীয় আবেদন । কঙ্কাবতী , যাঁর সাথে কিছু বাক্য বিনিময়ের জন্যে রক্তের হিমবাহে দেখা দেয় চঞ্চলতা । সুপ্রিয়া প্রেমিকা মুখ তোলা মাত্র কবি হাঁরিয়ে ফেলেন ওই সৌন্দর্যময় বাক্যগুলো , যা বলার জন্যে অপেক্ষায় ছিলেন কবি দীর্ঘদিন । প্রেমিকা যখন খুব কাছাকাছি হয়ে এগিয়ে আসেন , ওই ব্যর্থ ...