সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

বসন্তের হাওয়া উত্তরের সুর

 

                  বিস্মৃতির কণ্ঠে, হাওয়ার শব্দে কেঁপে উ’ঠে আমার নিস্তব্ধতার কোমল সুর,

                  ভাবনার গভীর থেকে কৃষ্ণচূড়ার গাঢ়রঙে চাঁদও কেঁপে উ’ঠে কয়েক মুহূর্তে

                  ভালোবাসার হলুদরঙে, ম্লান হ’য়ে জেগে রই শব্দহীন সবুজ শিশিরে;

                  দিগন্তের শেষ সীমানায় রেখে যাই ব্যর্থ সুখ, আপন ব’লে মনের কোণে

                  যাকে লুকিয়ে রেখেছি শতাব্দীর পর শতাব্দী ধ’রে; আমি যেন

                  বেঁচে থাকি স্বপ্নের গভীরে তাকে ভালোবেসে,

                  হৃদয়ের সমস্ত দুঃখ মুছে গেছে নীল হাওয়ার মাতাল তরঙ্গে;

                  টুকরো স্মৃতির আড়ালে গেঁথে দেই রূপ ও সৌন্দর্যের কঠিন অর্থ উজ্জ্বল সুরে-  

                  নিঃশব্দ সরোবরে ঢেউ ফেলে-ফেলে এগিয়ে যাই তীব্র বিষাদের দিকে,

                  বিবর্ণময় আমার দিনগুলো, ভেঙে পড়ে সমস্ত সৌন্দর্য বুকের কোণ থেকে মুহূর্তে,

                  আঙুলে গেঁথে রাখি বিষাদের কঠিন চিহ্ন, সমস্ত শরীরে নেমে আসে গাঢ় ক্লান্তি;

                  বাদামী রঙের দিনের আলোয় তাদের লুকিয়ে রাখি নরম ঘাসের বুকে; 

                  নিবিড় সন্ধ্যায় অলৌকিক বিস্ময়ে উ’ড়ে যায় শ্রাবণের কোমল হাওয়া-

                  অশ্রুবিন্দু ঝ’রে প’ড়ে বৃষ্টির ফোঁটায়, মানুষের মুখ থেকেও অনেক বেশী

                  সুখ পাই কারুকর্যময় জ্যোতির্ময় অমল সৌন্দর্যে,  

                  নিজেকে লুকিয়ে রাখি নক্ষত্রের নিচে জ্যোতির্ময় সীমাহীন প্রোজ্জ্বলে,

                  আদিম সৌন্দর্য মিশে যায় প্রতি মুহূর্তে মেঘের আড়ালে

                  কৃষ্ণপক্ষের সকল অর্থ ফিরে পায় রৌদ্রময় দিগন্তের সোনালী সীমাহীন বিস্ময়ে;   

                  আবেগের সমস্ত কষ্ট শরীর থেকে ঝ’রে প’ড়ে চন্দ্রালোকের আভাসে,   

                  আশ্বিনের বাতাসে ভেসে যায় আমার রঙ্গিন স্বপ্নগুলি শেফালির বনে;

                  কোমল শিশিরে পৃথিবীর সমস্ত সুখ প’ড়ে রয় সবুজ ঘাসের গন্ধ মেখে রূপালি ডানায়;

                  স্বপ্নের ভেতর খুঁজি, জ্যোৎস্নার আলো বিছিয়ে ফাল্গুনের হাওয়ায় লেগে থাকে তার

                  মুখের কঠিন গভীরতা আমার রচিত কাব্যের শব্দের শেষে,

                  বসন্তের হাওয়া গেয়ে উ’ঠে গান আদিম সৌন্দর্যে অরণ্যের নিস্তব্ধতায়

                  জীবনের সমস্ত দিনগুলি দুঃস্বপ্নের মধ্যে কেটে গেল নদীর স্রোতের মত।     

 

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

প্রবন্ধঃ বিষ্ণু দে : ‘উর্বশী ও আর্টেমিস’ থেকে ‘চোরাবালি’

বিষ্ণু দে , তিরিশি কবিদের অন্যতম । কবিতা রচনাই যাঁর কাছে এক এবং অদ্বিতীয় হ ’ য়ে দেখা দেয় । কাব্যে সংখ্যার দিক থেকে অতিক্রম করেছেন সতীর্থদের । বিষ্ণু দে , যাঁর কবিতা রচনার সূচনা পর্বটিও শুরু হয় খুব দ্রুততম সময়ে । কবিতা সৃষ্টির পর্বটি অব্যাহত রেখেছেন সর্বদা । পঁচিশটি কবিতা নিয়ে ‘ উর্বশী ও আর্টেমিস ’- এ নিজেকে প্রকাশ করেন স্ব - মহিমায় । যে কবিতাগুলা বিস্ময়বিমুগ্ধ ক ’ রে অন্যেদেরকেও । ওই কবিতা শুধু বিষ্ণু দে ’ কে নয় , বরং নতুনতর হ ’ য়ে দেখা দেয় বাঙলা কবিতা । বিষ্ণু দে ’ র ‘ উর্বশী ও আর্টেমিস ’ রবীন্দ্রনাথকে পড়তে হয়েছিল দু ’ বার । ‘ উর্বশী ও আর্টেমিস ’- এর কবিতাগুলির রচনাকালের ব্যাপ্তি দেওয়া আছে ( ১৯২৮ - ১৯৩৩ ) সময়ের মধ্যে , এবং গ্রন্থকারে প্রকাশ পায় ওই একই বছরে অর্থাৎ , ১৯৩৩ - এ । কিন্তু রচনাকালের ব্যাপ্তি ১৯২৮ দেওয়া থাকলেও প্রকৃত পক্ষে এ সকল কবিতাগুলো রচনা পর্ব শুরু হয় আরো দু ’ বছর পূর্বে অর্থাৎ , ১৯২৬ - এ । যখন কবি হিশেবে বিষ্ণু দে একেবারেই নতুন এবং নবীন । ১৯৩৩ - এ ...

প্রবন্ধঃ অমিয় চক্রবর্তী : ‘বৃষ্টি’ নিয়ে তিনটি কবিতা

রবীন্দ্রনাথ, মেঘ-বরষা বৃষ্টি নিয়ে এতো সংখ্যক কবিতা লিখেছেন যে তাঁর সমান বা সমসংখ্যক কবিতা বাঙলায় কেউ লিখেনি। রবীন্দ্রনাথ, যাঁর কবিতায় বার বার এবং বহুবার ফিরে ফিরে এসেছে মেঘ, বরষা, বৃষ্টি। বৃষ্টি নামটি নিলেই মনে পড়ে কৈশোর পেড়িয়ে আসা রবীন্দ্রনাথের ওই কবিতাটির কথা। ‘দিনের আলো নিবে এল সূর্য্যি ডোবে ডোবে আকাশ ঘিরে মেঘ জুটেছে চাঁদের লোভে লোভে।’ বৃষ্টি নিয়ে কবিতা পড়ার কথা মনে পড়লে এটাই চলে আসে আমার মনে। অমিয় চক্রবর্তী বৃষ্টি নিয়ে লিখেছেন বেশ কিছু কবিতা। বাঙলায় বৃষ্টি নিয়ে কবিতা লিখেনি এমন কবির সংখ্যা খুব কম বা নেই বললেই চলে। অমিয় চক্রবর্তী, যাঁর কবিতায় পাই ‘বৃষ্টি’ নামক কিছু সৌন্দর্যময় কবিতা। যে কবিতাগুলো আমাকে বিস্ময় বিমুগ্ধ ক’রে। ওই কবিদের কারো কারো কবিতা দ্রুত নিঃশ্বাসে পড়া সম্ভবপর হয়ে উঠে না। বৃষ্টি নামক প্রথম কবিতাটি পাওয়া যাবে অমিয় চক্রবর্তীর ‘একমুঠোতে’। উন্নিশটি কবিতা নিয়ে গ’ড়ে উঠে ‘একমুঠো’ নামক কাব্য গ্রন্থটি। যেখান থেকে শ্রেষ্ঠ কবিতায় তুলে নেওয়া হয় চারটি কবিতা। আমার আরো ভালোলাগে ‘বৃষ্টি’ কবিতাটি ওই তালিকায় উঠে আসে। শ্রেষ্ঠ কবিতায় না আসলে আমার যে খুব খারাপ লাগতে তা-ও নয়। ওই কবিতা...

প্রবন্ধঃ বুদ্ধদেব বসু ও ‘কঙ্কাবতী’

বুদ্ধদেব বসু প্রেমের অজস্র কবিতা রচনা করেছেন । অন্য অনেকের মতো তিনিও বেছে নেন একজন প্রেমিকাকে , যে হ ’ য়ে উঠে বুদ্ধদেবের অতুল্য প্রেমিকা হিশেবে । ‘ কঙ্কাবতী ’ অনিন্দ্য প্রেমিকা হ ’ য়ে বুদ্ধদেবের কাব্যতে বিচরণ ক ’ রে স্বচ্ছন্দে । স্থির হয়ে বসে পড়ে কঙ্কাবতী ’ কাব্যগ্রন্থে । যে কাব্যগ্রন্থে ‘ কঙ্কাবতী ’ দেখা দেয় অনৈসর্গিক হয়ে । ‘ কঙ্কাবতী ’ কাব্য রচনার পূর্বে ‘ কঙ্কাবতীকে ’ দেখা দেয় অনৈসর্গিক হয়ে । ‘ কঙ্কাবতী ’ কাব্য রচনার পূর্বে কঙ্কাবতীকে আমরা দেখতে পাই অন্য কোনো কবিতায় । যেখানে সে প্রেমিকার কাছে হয়ে ওঠে কুৎসিত কঙ্কাল ব্যতীত অন্য কিছু নয় । প্রগাঢ় ভাবে প্রাপ্তির জন্যে সমস্ত কবিতা জুঁড়ে দেখতে পাই কবির অপরিবর্তনীয় আবেদন । কঙ্কাবতী , যাঁর সাথে কিছু বাক্য বিনিময়ের জন্যে রক্তের হিমবাহে দেখা দেয় চঞ্চলতা । সুপ্রিয়া প্রেমিকা মুখ তোলা মাত্র কবি হাঁরিয়ে ফেলেন ওই সৌন্দর্যময় বাক্যগুলো , যা বলার জন্যে অপেক্ষায় ছিলেন কবি দীর্ঘদিন । প্রেমিকা যখন খুব কাছাকাছি হয়ে এগিয়ে আসেন , ওই ব্যর্থ ...