সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

কিশোর সাহিত্যঃ যাদুকর ও একগুচ্ছ চাবি

আমার স্কুলটি ছিল আমার স্বপ্নের মত। সেই স্কুলের কথা ভাবতেই আমার বেশ ভাল লাগে। তার কথা শুনা মাত্রই আমার চোখে যেন কোনো এক প্রকার স্বপ্ন জেগে উঠে। আর আমি যেন খুব আপন হয়ে সেই স্বপ্নের গভীরে ডুব দেই। মানুষ যেমন পানিতে ডুব দিয়ে অনেক সুখ পায়; আমিও ঠিক তেমনি আমার সেই স্বপ্নের গভীরে ডুব দিয়ে সুখ পাই। স্কুল শুরু হওয়ার অনেক আগেই আমি ক্লাস রুমে পৌঁছে যেতাম। আমার বন্ধুদের থেকে আমি অনেক আগেই ক্লাস রুমে পৌঁছে গেছি, এমনটা হয়েছে অনেকবার। আমার স্কুলের সব ক্লাস রুম যে সব সময় খোলা থাকতো তা কিন্তু নয়। ক্লাস শুরু হওয়ার আগে একজন সমস্ত স্কুলের দরজাগুলো খুলে দিতেন। আবার, যখন আমাদের ক্লাস শেষ হতো তিনি আবার সেই ক্লাসরুমগুলো আপন মনে বন্ধ করে দিতেন। যিনি এই দায়িত্ব পালন করতেন তাকে আমার কাছে এক স্বপ্নের যাদুকর মনে হতো। দীর্ঘকায় লোক ছিলেন তিনি। সব সময় সাদা পোশাক পড়ে থাকতেন। মাথার চুলগুলো ছিল একটু বড় আর কোঁকড়ানো। ঠিক কবি নজরুলের চুলের মতো। মুখে সব সময় হাসি লেগে থাকতো। তাকে দেখলে আমার মনে হত পৃথিবীতে দুঃখ বলে কোনো শব্দ নেই।  আর মুখে পুরে নিতেন খিলি পান। ঠোঁট দুটি লাল টুকটুকে হয়ে ফুটে উঠতো। মুখে পান ভর্তি থাকার কারণে খুব বেশি কথা বলার সুযোগ পেতেন না। আমার মনে হতো, আমার দেশের সমস্ত পান যেন তিনি একাই খেয়ে ফেলবেন। তিনি পান ছাড়া অন্য কিছু যে খেতে পারেন, তা আমি ভাবতে পারি না। দিনে কতটা পান লাগে, তা কি আমি জিজ্ঞাসা করবো ? না, তা জিজ্ঞাসা করতে আমার ভাল লাগে না। আমি অবাক হয়ে তার হাতের দিকে তাকিয়ে থাকতাম। হাতের দিকে তাকিয়ে থাকতে মানে, হাতের মধ্যে গুচ্ছ-গুচ্ছ চাবির থোকার দিকে। এতোগুলো চাবি একজন মানুষের কিভাবে হয়? তাহলে কি তিনি আমাদের স্কুলের মালিক। মালিকের কাছে যেমন তার সমস্ত চাবি জমা থাকে। তার কাছে তো আমার স্কুলের সমস্ত চাবি রয়েছে। তাহলে তো অবশ্যই তিনি আমার স্কুলের মালিক। হেড স্যারের কাছেও এতোগুলো চাবি নেই। আমি আরো বেশি অবাক হতাম, তিনি কিভাবে বুঝতেন কোন তালার কোন চাবি। মানুষ তো একটি, দুটি বা তিনটি চাবির কথা মনে রাখতে পারে। কিন্তু কোন মানুষ কি আছে যিনি এতোগুলো চাবি আর সেই তালার কথা মনে রাখবে? সমস্ত বারান্দা ঘুরে-ঘুরে, মৃদু পায়ে তিনি এগিয়ে যাচ্ছেন আর কয়েক মুহূর্তে ক্লাস রুমের তালাগুলো খুলে দিচ্ছেন। তার তালা খোলার দৃশ্য দেখলে আমার মনে হতো, তিনি মনে হয় চাবি দিয়ে তালা খুলছেন না; হাতের স্পর্শ দিয়ে যাদুকরের মত এক-একটি তালা খুলে দিচ্ছেন। আর আমি যেন সেই যাদুকরের যাদু দেখার জন্য তার পিছনে-পিছনে হেঁটে যাচ্ছি। যেন হারিয়ে যাচ্ছি কোন এক গভীর সৌন্দর্যের মধ্যে। আমি যেন হেঁটে যাচ্ছি এক মহাস্বপ্নের দিকে। যেখানে হাত থেকেও, চোখ অনেক বেশি সজাগ হয়ে দেখা দেয়। অনেকদিন নিজের কাছে প্রশ্ন করেছি, একজন মানুষ কীভাবে মনে রাখতে পারে কোন তালার ঠিক কোন চাবিটি। তা ছাড়াও কোন চাবিতে কোন নাম্বার দেওয়া থাকতো না। এ-কথা ভেবে, আমি তার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকতাম। মানুষ কিভাবে এটা মনে রাখতে পারে। আমি কি এটা মনে রাখতে পারবো ? আমাকে বুঝিয়ে বা দেখিয়ে দেওয়ার পরেও ! তার পিছে-পিছে আমি হাঁটতে থাকি। হাঁটতে থাকি পুব থেকে পশ্চিমে, উত্তর থেকে দক্ষিণে। এক বারান্দা থেকে অন্য বারান্দায়, উপর তলা থেকে নিচ তলা পর্যন্ত। স্বপ্ন থেকে স্বপ্নের গভীরে। অল্পকিছু সময়ের মধ্যে সমস্ত বন্ধ স্কুলটি, চোখের নিমিষেই খুলে দিলেন তিনি। যেন প্রতিটি দরজায় গিয়ে হাত দিয়ে স্পর্শ করছেন তালাগুলোয়। আর তার হাতের স্পর্শ পেয়ে তালাগুলো যেন খুলে যাচ্ছে। এই তালাগুলো খোলার জন্য তার যেন কোন চাবি-ই লাগে না। হাতের স্পর্শ টুকুই যেন যথেষ্ট। তার হাতে যেন খেলা করে যাচ্ছে কোন এক স্বপ্নের যাদুকরের ছোঁয়া। আমি মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকি, সেই হাতের দিকে, দরজার দিকে আর সেই মুগ্ধকর যাদুকরের দিকে। যে মুহূর্তের মধ্যেই যেন আমাকে দেখিয়ে দিচ্ছে কিভাবে মুগ্ধতা ছড়াতে হয়। তার হাতে যেন কোন এক অলৌকিক যাদু খেলে যাচ্ছে, স্বপ্নে নয়, বাস্তবতায়। চাবি আর দরজায়। যা আমি দেখতে পাচ্ছি আমার সামনেই। প্রতিটি স্কুলের দরজা যেন, তার হাতের ছোঁয়ার অপেক্ষায় থাকে। তালাগুলোকে এসে স্পর্শ করে যাবে; তারা খুলে যাবে মুহূর্তেই আর আমরা প্রবেশ করবো সেই রুমে। তিনি যেন আমার স্বপ্নের কোনো এক অলৌকিক যাদুকরে রূপান্তরিত হচ্ছেন। আমার কাছে মনে হতে থাকে তিনি যেন সেই হ্যামিলিয়নের বাঁশিওয়ালা, যার সুর শুনে সবাই তার পিছু নিয়েছিল। আমি কি তাকে বলব, আপনি কিভাবে এতগুলো তালা চোখের নিমিষেই খুলতে পারেন। আপনার তালা খোলার দৃশ্য দেখে আমার মনে হচ্ছে, আপনাকে চোখ বন্ধ করে দিলেও আপনি সমস্ত তালাগুলো খুলতে পারবেন। প্রত্যেকটা তালা খুলে যাচ্ছেন একপ্রকার মায়াবী ছোঁয়ায়। একটু স্পর্শ করলেই যেন তালা গুলো খুলে যাচ্ছে। আমি কি বলবো, আপনি কি যাদুকর, যে যাদু দেখিয়ে কিশোরদের বোকার স্বর্গে নিয়ে যায়। তাহলে কী তিনিও আমাকে, নিয়ে যাবেন স্বপ্নের কোন এক অজানা গন্তব্যেয়। নাকি, আমি হারিয়ে যাব অজানা কোন এক মেঘের রাজ্যেয়। তিনি যখন তালা গুলো খুলছেন, একপ্রকার মৃদু শব্দ হচ্ছে, যেন কোনো এক সঙ্গীতের কোমল সুর বেজে উঠছে আমার কানে। একটার পর একটা তালা খোলার শব্দ যেন এক-এক প্রকার সুরের ঐকতান। শব্দটি শুনতে আমার বেশ ভাল লাগে। আমি আবার যেন সেই সুর শূনতে চাই। শুনার জন্য কানটাও অনেক এগিয়ে দেই। মাঝে-মাঝে তালা খোলার সময়, মৃদু একপ্রকার বাতাস যেন খেলে যায় দরজা জুড়ে। সেই হাওয়া অনেকটা আমার শরীরকে কোমল করে তুলে। আমি আবার ভাবতে থাকি, যাদুকরের কাছে তো একটা চাবি থাকে, কিন্ত তাঁর কাছে একটা নয়, একগুচ্ছ  চাবি রয়েছে। যাদুকরের কাছে কি এত চাবি থাকে ? আমি কার কাছে জিজ্ঞাসা করব ! কেউ কী আমার এই প্রশ্নের উত্তর দিবে, না আমার একা খুজে বের করে নিতে হবে। তাঁর হাত আর চাবিকে আমার মনে হচ্ছে, সেই কবে যেন পড়েছিলাম সোনার কাঠি আর রুপার কাঠির গল্পের মত। একটি না হলে যেমন অপরটি চলে না। তদ্রুপ হাত আর গুচ্ছ চাবি যেন একই ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আমি এক মহাবিস্ময় নিয়ে তাঁর পিছনে হাটতে থাকি। আমার বেশ ভাল লাগে। আমি কি তাকে বলবো, আপনি যেভাবে হাতের নিমিষে মুগ্ধতা বিছিয়ে তালা খোলেন আমাকে একটু শিখিয়ে দিবেন? তিনি কী আমাকে শিখিয়ে দিবেন, না- অনেক বেশী রাগ করে উঠবেন আমার উপর। কিন্তু তাকে দেখলে আমার মনে হয়, রাগ কি জিনিস তা তিনি জানেনই না। তিনি যে বেশ কোমল আর ঠাণ্ডা মেজাজের মানুষ তা তাকে দেখলেই বোঝা যায়। স্কুলে কী কেউ তালা খোলা শিখতে আসে, না পড়া-লেখার জন্য আসে, আমি মনে মনে ভাবতে থাকি। আর হাসতে থাকি। আমার এই ভাল লাগার ব্যাপারটি আমি অন্য কাউকে বলিনি। এই জন্য বলিনি যে, অনেক তুচ্ছ জিনিস আমার অনেক ভাল লাগে। আবার অনেক সময় দেখা যায়, অনেক বড় জিনিস বা ব্যাপার আমার হয়তো ভাল লাগে না। তুচ্ছ জিনিসের মধ্যে আমি অনেকক্ষণ ডুব দিয়ে থাকতে পারি। তাকে নিয়ে ভাবতে থাকি। হয়তো ভাবতে-ভাবতে অনেক রাত কেটে যায়। অন্যর কাছে এই সব জিনিস হয়তো পাত্তাই পাবে না। তাই আমি কাউকে কিছু বলি না। আমার মত আমি চুপ   করে থাকি। সামনে গ্রীষ্মকালের ছুটি। স্কুল অনেকদিন বন্ধ থাকবে। আমাকে আর স্কুলে আসতে হবে না। কিংবা সেই মুগ্ধ হয়ে তালা খোলার দৃশ্য দেখার জন্য যাদুকরের পিছনে ছুটতে হবে না। মনটা অনেক খারাপ হয়ে যাচ্ছে। অনেক-অনেক খারাপ। ভীষণ খারাপ। কিভাবে আমার সময় কাটবে। অনেক পড়াশুনা করতে হবে এই ছুটিতে। পরীক্ষার পূর্বে সম্পূর্ণ সিলেবাসটা শেষ করতে হবে। কিন্তু তারপর, তারপর কি হবে ! আমি, আমার মধ্যে ভাবতে থাকি।  আজ আঠার দিন পর স্কুল খুলল। অন্যদিনের মত আমি অনেক আগে স্কুলে চলে আসি। স্কুলের অনেকগুলো দরজা খোলা দেখি, আবার অনেকগুলো দরজা বন্ধ দেখি। আমি খুঁজতে থাকি সেই লম্বা চুলওয়ালা যাদুকরকে। আমার পা চলতে থাকে এক দরজা থেকে অপর দরজায়। আমার চোখ খুঁজতে থাকে তাকে। এক বিস্ময় নিয়ে আমি খুঁজতে থাকি। যেন আমি কোন জিনিস হারিয়ে ফেলেছি। হারানো জিনিস যেমন মানুষ খুঁজতে থাকে ঠিক সেই ভাবে খুঁজতে থাকি। কোথাও তাকে দেখতে পাই না। আমার মনটা হা-হা কার করে উঠে। সম্পূর্ণ স্কুল জুড়ে খুঁজতে থাকি। কোন ছায়া পর্যন্ত আমি দেখতে পাই না। চুপ করে থাকি, অনেকক্ষণ চুপ করে থাকি। আমার পা যেন আর সামনের দিকে এগোতে চায় না। পরে জানতে পারি তিনি আমাদের স্কুল ছেড়ে চলে গেছেন। আর কোনদিন আসবেন না। তাকে আর কোনদিন দেখতে পাব না। যাদুকরের মত তিনিও যেন হারিয়ে গেলেন আমার চোখের কোণ থেকে। কিন্তু আমার মনে তিনি গেঁথে আছেন, থাকবেন।               

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

প্রবন্ধঃ বুদ্ধদেব বসু ও ‘কঙ্কাবতী’

বুদ্ধদেব বসু প্রেমের অজস্র কবিতা রচনা করেছেন । অন্য অনেকের মতো তিনিও বেছে নেন একজন প্রেমিকাকে , যে হ ’ য়ে উঠে বুদ্ধদেবের অতুল্য প্রেমিকা হিশেবে । ‘ কঙ্কাবতী ’ অনিন্দ্য প্রেমিকা হ ’ য়ে বুদ্ধদেবের কাব্যতে বিচরণ ক ’ রে স্বচ্ছন্দে । স্থির হয়ে বসে পড়ে কঙ্কাবতী ’ কাব্যগ্রন্থে । যে কাব্যগ্রন্থে ‘ কঙ্কাবতী ’ দেখা দেয় অনৈসর্গিক হয়ে । ‘ কঙ্কাবতী ’ কাব্য রচনার পূর্বে ‘ কঙ্কাবতীকে ’ দেখা দেয় অনৈসর্গিক হয়ে । ‘ কঙ্কাবতী ’ কাব্য রচনার পূর্বে কঙ্কাবতীকে আমরা দেখতে পাই অন্য কোনো কবিতায় । যেখানে সে প্রেমিকার কাছে হয়ে ওঠে কুৎসিত কঙ্কাল ব্যতীত অন্য কিছু নয় । প্রগাঢ় ভাবে প্রাপ্তির জন্যে সমস্ত কবিতা জুঁড়ে দেখতে পাই কবির অপরিবর্তনীয় আবেদন । কঙ্কাবতী , যাঁর সাথে কিছু বাক্য বিনিময়ের জন্যে রক্তের হিমবাহে দেখা দেয় চঞ্চলতা । সুপ্রিয়া প্রেমিকা মুখ তোলা মাত্র কবি হাঁরিয়ে ফেলেন ওই সৌন্দর্যময় বাক্যগুলো , যা বলার জন্যে অপেক্ষায় ছিলেন কবি দীর্ঘদিন । প্রেমিকা যখন খুব কাছাকাছি হয়ে এগিয়ে আসেন , ওই ব্যর্থ ...

প্রবন্ধঃ অমিয় চক্রবর্তী : ‘বৃষ্টি’ নিয়ে তিনটি কবিতা

রবীন্দ্রনাথ, মেঘ-বরষা বৃষ্টি নিয়ে এতো সংখ্যক কবিতা লিখেছেন যে তাঁর সমান বা সমসংখ্যক কবিতা বাঙলায় কেউ লিখেনি। রবীন্দ্রনাথ, যাঁর কবিতায় বার বার এবং বহুবার ফিরে ফিরে এসেছে মেঘ, বরষা, বৃষ্টি। বৃষ্টি নামটি নিলেই মনে পড়ে কৈশোর পেড়িয়ে আসা রবীন্দ্রনাথের ওই কবিতাটির কথা। ‘দিনের আলো নিবে এল সূর্য্যি ডোবে ডোবে আকাশ ঘিরে মেঘ জুটেছে চাঁদের লোভে লোভে।’ বৃষ্টি নিয়ে কবিতা পড়ার কথা মনে পড়লে এটাই চলে আসে আমার মনে। অমিয় চক্রবর্তী বৃষ্টি নিয়ে লিখেছেন বেশ কিছু কবিতা। বাঙলায় বৃষ্টি নিয়ে কবিতা লিখেনি এমন কবির সংখ্যা খুব কম বা নেই বললেই চলে। অমিয় চক্রবর্তী, যাঁর কবিতায় পাই ‘বৃষ্টি’ নামক কিছু সৌন্দর্যময় কবিতা। যে কবিতাগুলো আমাকে বিস্ময় বিমুগ্ধ ক’রে। ওই কবিদের কারো কারো কবিতা দ্রুত নিঃশ্বাসে পড়া সম্ভবপর হয়ে উঠে না। বৃষ্টি নামক প্রথম কবিতাটি পাওয়া যাবে অমিয় চক্রবর্তীর ‘একমুঠোতে’। উন্নিশটি কবিতা নিয়ে গ’ড়ে উঠে ‘একমুঠো’ নামক কাব্য গ্রন্থটি। যেখান থেকে শ্রেষ্ঠ কবিতায় তুলে নেওয়া হয় চারটি কবিতা। আমার আরো ভালোলাগে ‘বৃষ্টি’ কবিতাটি ওই তালিকায় উঠে আসে। শ্রেষ্ঠ কবিতায় না আসলে আমার যে খুব খারাপ লাগতে তা-ও নয়। ওই কবিতা...

প্রবন্ধঃ সুধীন্দ্রনাথ দত্তের প্রবন্ধ সংগ্রহ

সুধীন্দ্রনাথ , সাতটি কাব্যগ্রন্থের মতো সাতটি প্রবন্ধের গ্রন্থ লিখলে খারাপ হতো না , বেশ ভালোই হতো । সুধীন্দ্রনাথের প্রবন্ধগুলো হালকা মানের নয় , যদিও তাঁর কোন রচনাই হালকা নয় । সাহিত্যে বিচারে তা অনেক উঁচুমানের । তার উপর ভাষার ব্যাপারটি তো রয়েছেই । সুধীন্দ্রনাথ মাত্র দুটি প্রবন্ধ গ্রন্থ রচনা করেছেন । গ্রন্থ দুটো ‘ স্বগত ’ ( ১৩৪৫ ঃ ১৯৩৮ ), অপরটি ‘ কুলায় ও কালপুরুষ ’ ( ১৩৬৪ : ১৯৫৭ ) । ‘ স্বগত ’- তে রয়েছে ষোলটি প্রবন্ধ । গ্রন্থ দুটি তিনি রচনা করেছেন দু ’ ভাগে । লরেন্স বা এলিয়ট এর প্রবন্ধ যেমন পাওয়া যাবে না ‘ কুলায় ও কালপুরুষ ’- এ ; তেমনি রবীন্দ্র সম্পর্কিত প্রবন্ধ নেওয়া হয়নি ‘ স্বগত ’- এ । প্রকাশ কাল অনুযায়ী ‘ স্বগত ’- এর প্রবন্ধসমূহ : ‘ কাব্যের মুক্তি ’ ( ১৯৩০ ); ‘ ধ্রুপদ পদ - খেয়াল ’ ( ১৯৩২ ), ‘ ফরাসীর হাদ্য পরিবর্তন ’ ( ১৯৩২ ), ‘ লিটনস্ট্রেচি ’ ( ১৯৩২ ), ‘ লরেন্স ও ভার্জনিয়া উল্ফ্ ’ ( ১৯৩২ ), ‘ উপন্যাস তত্ত্ব ও তথ্য ’ ( ১৯৩৩ ), ‘ উইলিয়ম ফকনর ’ ( ১৯৩৪ ), ‘ ঐতিহ্য ও টি , এস , এলিয়ট ’ ( ১৯৩৪ ), ...