সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

কাদম্বরী দেবীর মৃত্যুরহস্য

 


কাদম্বরী দেবীর মৃত্যু বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে এক অনির্বচনীয় অন্ধকার, এমন এক রহস্য যার সূক্ষ্ম পরতে পরতে লুকিয়ে আছে ঠাকুরবাড়ির অভ্যন্তরীণ সমাজব্যবস্থা, নারীবিদ্বেষী যুগের নিঃশব্দ প্রতিধ্বনি, সম্পর্কের অপ্রকাশ্য জটিল মানসিক বিন্যাস, এবং এক প্রতিভাময় নারীর জীবনের গভীর নিঃসঙ্গতার ছায়া; ১৮৫৯ সালে জন্ম নেওয়া কাদম্বরী খুব অল্প বয়সেই প্রবেশ করেছিলেন জোড়াসাঁকোর অন্দরমহলে, যেখানে রীতি-নীতি, আভিজাত্য, সাহিত্যচর্চা, কৌলীন্য, পারিবারিক রাজনীতি, অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব,সব মিলিয়ে চলত এক জটিল সামাজিক দৃশ্যপট, যার মধ্যে কাদম্বরী হয়তো আলো হ’য়ে এসেছিলেন, কিন্তু সময়ের প্রবাহে সেই আলো নিভে যেতে যেতে পরিণত হয়েছিল অসহ্য অন্ধকারে; ঠাকুরবাড়ির ইতিহাসে এমন নারী খুব কমই আছেন যাঁরা কাদম্বরীর মতো একইসঙ্গে প্রভাবশালী, অন্তর্মুখী, বুদ্ধিমতী, সৃজনশীল এবং অগ্নিমেয়; তাঁর স্বামী জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন সংস্কৃতিমনস্ক, শিল্পমনস্ক, বহুমুখী প্রতিভাধর, কিন্তু সংসারের কাছে তিনি যেমন অনুপস্থিত থাকতেন, ঠিক তেমনই স্ত্রী কাদম্বরীর জটিল অন্তর্জগত বুঝে ওঠার অবকাশ তার ছিল না; আবার জোড়াসাঁকোর মতো বিশাল পরিবারে, যেখানে অনেকে একই ছাদের নিচে থাকতেও ভিন্ন ভিন্ন আবেগে বাস করত, সেখানে ব্যক্তিগত সম্পর্কের অনুভূতি প্রায়ই চেপে রাখা হতো সামাজিক শৃঙ্খলার কাছে; এই পরিবেশে কাদম্বরীর সবচেয়ে বড় সঙ্গী হ’য়ে ওঠেন অল্পবয়সী রবীন্দ্রনাথ, যিনি তখনও কিশোর কবি, সৃষ্টিশীলতার উৎস খুঁজে পাওয়া এক নবজাগরণমানস, আর তাঁর সেই সৃজনযাত্রার প্রথম শ্রোতা, প্রথম সমালোচক, প্রথম উচ্ছ্বাসদাত্রী ছিলেন কাদম্বরী; তাঁদের সম্পর্ককে আজকের দৃষ্টিতে যেভাবে ব্যাখ্যা করা হয়, তা পুরোপুরি সঠিক নাও হতে পারে, কারণ সে যুগে আবেগ প্রকাশের ভাষা, সামাজিক কাঠামো এবং পারিবারিক সম্পর্কের সংজ্ঞা ছিল ভিন্ন; তবে এটুকু নিশ্চিত যে কাদম্বরী রবীন্দ্রনাথের সৃজনীজগতের ওপর গভীর প্রভাব ফেলেছিলেন,তিনি কবিতার পঙ্‌ক্তি সংশোধন করতেন, লেখাগুলো শুনে মতামত দিতেন, তাঁর সৃষ্টির ভেতর থাকা দ্বিধা কাটাতে সাহস জোগাতেন; রবীন্দ্রনাথও বহুদিন পরে স্মৃতিতে বলেছেন,যে স্নেহ, যে উৎসাহ কাদম্বরীর কাছ থেকে পেয়েছিলেন তা তাঁর প্রথম জীবনে ছিল একমাত্র আলো; ভানুসিংহের পদাবলী কাদম্বরী প্রথম শুনেছিলেন, এবং তাঁর প্রশংসায় রবীন্দ্রনাথ আত্মবিশ্বাস পেয়েছিলেন সেই কাব্য প্রকাশ করার; কিন্তু এই আন্তরিকতার পেছনে যে নীরব আবেগ, যে আত্মিক নির্ভরতা, যে মানসিক টানাপোড়েন জমে উঠছিল, তা কেউ প্রকাশ করতে পারেননি, আর ঠাকুরবাড়িও চাইনি তা প্রকাশ পায়; তাদের সম্পর্ক হয়তো পবিত্র, নিখাদ, সহচরীর মতো ছিল, আবার হয়তো তাকে বলা যায় এক কথাহীন আবেগের প্রবাহ,যা সমাজ তখন গ্রহণ করতে পারত না; এই অনিশ্চয়তাই কাদম্বরীর চরিত্র-বিবেচনায় এক রহস্যময় দীপ্তি তৈরি করেছে। কাদম্বরী ছিলেন অত্যন্ত সংবেদনশীল এবং মানসিকভাবে গভীর; তিনি লেখাপড়ায় আগ্রহী ছিলেন, সাহিত্যিক সঙ্গ চেয়েছিলেন, জীবনের একঘেয়েমি ভাঙতে চেয়েছিলেন; কিন্তু ঠাকুরবাড়ির ভেতরকার নারীদের সীমাবদ্ধ দায়িত্ব, পর্দাব্যবস্থা, সামাজিক নিষেধ,এসব তাকে ক্রমাগত সংকুচিত করেছে; জ্যোতিরিন্দ্রনাথ, যতই মহৎ হোন, সংসারজীবনে হয়তো তাকে সঙ্গ দিতে পারেননি,কারণ তাঁর প্রিয় জগৎ ছিল নাটক, সঙ্গীতচর্চা, সাহিত্যপত্র সম্পাদনা, বন্ধুমন্ডলীদের আড্ডা; এমন এক ব্যস্ততার ভেতর কাদম্বরী প্রায়ই নিজেকে নিঃসঙ্গ অনুভব করতেন, যদিও বাড়ির বাইরে যাওয়ার স্বাধীনতাও ছিল না; নিজের সৃজনশীল সত্তাকে প্রকাশের জায়গাও তেমন ছিল না; এমন পরিবেশে রবীন্দ্রনাথ হ’য়ে উঠলেন তার মানসিক অবলম্বন; কিন্তু এই সঙ্গ যে পরিণামে তাকে মানসিক নিরাপত্তা দেবে, এমন নিশ্চয়তা ছিল না,বরং বাস্তব জীবনে দূরত্ব হয়তো আরও বেড়েছিল যখন রবীন্দ্রনাথের বিয়ে হয় ১৮৮৩ সালের শেষ দিকে মৃণালিনী দেবীর সঙ্গে; এই বিয়েটি অনেকের মতে কাদম্বরীর মনে এক ধরনের দহন সৃষ্টি করে, কারণ তিনি বুঝতে পারেন,যে মানুষটি এতদিন তাঁর সৃজনসঙ্গী ছিল, তাঁর জীবনের প্রতিদিনের উৎসাহদাতা ছিল, সে এখন অন্য সম্পর্কে আবদ্ধ; যদিও এটি প্রকাশ্যে কোনও বড় ঘটনার জন্ম দেয়নি, কিন্তু কাদম্বরীর নীরব বিষণ্ণতা এ সময় আরও তীব্র হয়েছিল বলে বহু গবেষক মনে করেন। এরপর আসে সেই ভয়ংকর ২১ এপ্রিল ১৮৮৪; বিকেলের নিস্তব্ধতার ভেতর আফিমের খালি বোতল, কাদম্বরী তাঁর নিজ ঘরে পতিত; জানা যায় তিনি আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন, যা সফল হয়; কিন্তু এই মৃত্যুর কারণ কোনোদিন নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি; আত্মহত্যার ব্যাখ্যা সবচেয়ে বেশি গ্রহণযোগ্য হলেও পরিবার এটি প্রকাশ্যে আলোচনা করেনি; ঠাকুরবাড়ির সম্মান রক্ষার জন্য বিষয়টি গোপন রাখা হয়েছিল,যুগের প্রথা ছিল এমন ঘটনাকে চেপে রাখা; অনেকেই বলেন কাদম্বরীর ডিপ্রেশন, মানসিক নিঃসঙ্গতা, জটিল পারিবারিক পরিবেশ এবং ব্যক্তিগত ভেতরকার অন্ধকারই তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়; আবার কেউ বলেন তিনি সম্ভবত অসহ্য অবদমনের বিরুদ্ধে এক প্রতীকী প্রতিবাদ করেছিলেন,কারণ ঠাকুরবাড়ি তখনও এক পুরুষকেন্দ্রিক পরিবার, যেখানে নারীর স্বাধীনতা সামাজিকভাবে স্বীকৃত ছিল না; আবার কেউ কেউ ধারণা করেন,কাদম্বরী নিজের জীবনের অর্থ খুঁজে পাচ্ছিলেন না; তাঁর সৃজনশীল মন ক্ষুধার্ত ছিল, কিন্তু চারপাশে শুধু দায়িত্ব, নিয়ম, নিষেধ,এসবই ছিল বাঁধা। তাঁর মৃত্যুর পরে ঠাকুরবাড়িতে নেমে আসে নীরবতা; রবীন্দ্রনাথ গভীরভাবে ভেঙে পড়েন; তিনি দিনকে দিন নিঃস্তব্ধ হ’য়ে যান, এমনকি তাঁর কিছু লেখায় মৃত্যু ও শূন্যতার যে ছায়া দেখা যায়, তার মূল উৎস ছিল কাদম্বরীর প্রস্থান; চিত্রাঙ্গদা, চিত্রা, স্মরণ, বিরহ, অভিলাষ, মালঞ্চ, মালিনী,এসব লেখায় কাদম্বরীর অব্যক্ত ছায়া বহু গবেষক খুঁজে পান; রবীন্দ্রনাথ একবার লিখেছিলেন, “আমার জীবনে এ প্রথম মৃত্যুর ছায়া আমাকে স্পর্শ করল”,এই মৃত্যুই তাঁর ভেতর চিরস্থায়ী এক শূন্যতা রেখে যায়; তিনি কখনো প্রকাশ্যে কাদম্বরীর নাম নিয়ে কিছু বলেননি, কিন্তু তাঁর কবিতায় বারবার যে ‘অলভ্য নারী’, ‘নিঃশব্দ ছায়া’, ‘হারানো সঙ্গিনী’, ‘অপ্রকাশ্য দুঃখ’, ‘বিচ্ছেদের আলো’, ‘অম্লান স্মৃতি’,এই সব প্রতীকি নারীমূর্তি দেখা যায়, তা এক ধরনের নীরব শ্রদ্ধা, অপরাধবোধ, অনন্ত বেদনারই ইঙ্গিত দেয়। কাদম্বরীর মৃত্যু শুধু ব্যক্তিগত নয়,এটি সময়ের সমাজব্যবস্থার গভীরতম অসুখের প্রতিফলন; নারীর স্বাধীনতা, মানসিক স্বাস্থ্য, সৃজনশীলতার অধিকার,এসব তখনকার সমাজে ছিল প্রায় অনুপস্থিত; একজন প্রতিভাবান, শিক্ষিত, রুচিশীল, সৃজনশীল নারীকে বাঁচিয়ে রাখার মতো সামাজিক সহানুভূতি ছিল না; তাঁর আত্মাকে আলো দেওয়ার মতো পরিবেশ ছিল না; ফলে তিনি ক্রমাগত ভেতরে জমিয়ে রেখেছিলেন এক বিশাল দীর্ঘশ্বাস; হয়তো সেই দীর্ঘশ্বাসই একদিন গুলির শব্দ হ’য়ে বেরিয়ে আসে; হয়তো তাঁর মৃত্যু ছিল ঘরের চার দেওয়ালের প্রতিটি অদৃশ্য অত্যাচারের বিরুদ্ধে এক বাক্হীন প্রতিবাদ; আবার এও বলা হয়,তাঁর ব্যক্তিত্ব ছিল এমন যে তিনি নিঃসঙ্গতা সইতে পারতেন না; চারপাশের জীবনের অসাড়তা তাঁর সৃজনশীল মানসকে ক্লান্ত ক’রে তুলেছিল। আজ এত বছর পরে দাঁড়িয়ে ইতিহাস, মনস্তত্ত্ব, সাহিত্য, সমাজ,সব মিলিয়ে দেখা যায় কাদম্বরী দেবীর মৃত্যু একক কোনো ঘটনার ফল নয়, বরং বহু স্তরের সামাজিক ও মানসিক সংকটের সমষ্টি; তিনি ছিলেন এক অবদমিত প্রতিভা, এক মননশীল আত্মা, এক অব্যক্ত যন্ত্রণাভরা নারী, যাকে তার সময়ের সমাজ বুঝতে পারেনি; তাঁর জীবনের আলো নিভে গেলেও সেই নিভে যাওয়া আলো আজও সাহিত্যচর্চার ইতিহাসে এক অমোচনীয় প্রশ্নচিহ্ন হ’য়ে জ্বলে আছে,একজন নারী কতটা নিঃশব্দে, কতটা চাপা যন্ত্রণায়, কতটা অসহনীয় সামাজিক ও মানসিক অন্ধকারে ডুবে গেলে নিজের হাতেই নিজের জীবনের ইতি টানতে বাধ্য হন? আর সেই প্রশ্নের উত্তর আমরা আজও পুরোপুরি পাই না; কেবল জানি,কাদম্বরী দেবী শুধু মৃত্যুর মধ্যেই শেষ হ’য়ে যাননি, বরং তিনি এক দীর্ঘ ইতিহাসের নীরব প্রতীক হ’য়ে রয়েছেন, যে ইতিহাস নারীর যন্ত্রণাকে যতটাই গোপন করেছে, ততটাই তাঁর বেদনার প্রতিধ্বনি আজও ছড়িয়ে আছে বাংলা সাহিত্যের পাতায়, রবীন্দ্রনাথের নীরবতায়, এবং প্রতিটি প্রশ্নে যেখানে একটি অব্যক্ত ব্যথা জিজ্ঞেস করে,যদি তাকে বুঝতে কেউ পারত, যদি তার কথা শোনার কেউ থাকত, যদি তার সৃজনশীলতার জন্য একটু মুক্তি দেওয়া হতো, তবে কি ২১ এপ্রিলের সেই অন্ধকার ঘরের শূন্য আফিমের বোতল আজও এত রহস্যময় হ’য়ে বেজে উঠত?


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

প্রবন্ধঃ বিষ্ণু দে : ‘উর্বশী ও আর্টেমিস’ থেকে ‘চোরাবালি’

বিষ্ণু দে , তিরিশি কবিদের অন্যতম । কবিতা রচনাই যাঁর কাছে এক এবং অদ্বিতীয় হ ’ য়ে দেখা দেয় । কাব্যে সংখ্যার দিক থেকে অতিক্রম করেছেন সতীর্থদের । বিষ্ণু দে , যাঁর কবিতা রচনার সূচনা পর্বটিও শুরু হয় খুব দ্রুততম সময়ে । কবিতা সৃষ্টির পর্বটি অব্যাহত রেখেছেন সর্বদা । পঁচিশটি কবিতা নিয়ে ‘ উর্বশী ও আর্টেমিস ’- এ নিজেকে প্রকাশ করেন স্ব - মহিমায় । যে কবিতাগুলা বিস্ময়বিমুগ্ধ ক ’ রে অন্যেদেরকেও । ওই কবিতা শুধু বিষ্ণু দে ’ কে নয় , বরং নতুনতর হ ’ য়ে দেখা দেয় বাঙলা কবিতা । বিষ্ণু দে ’ র ‘ উর্বশী ও আর্টেমিস ’ রবীন্দ্রনাথকে পড়তে হয়েছিল দু ’ বার । ‘ উর্বশী ও আর্টেমিস ’- এর কবিতাগুলির রচনাকালের ব্যাপ্তি দেওয়া আছে ( ১৯২৮ - ১৯৩৩ ) সময়ের মধ্যে , এবং গ্রন্থকারে প্রকাশ পায় ওই একই বছরে অর্থাৎ , ১৯৩৩ - এ । কিন্তু রচনাকালের ব্যাপ্তি ১৯২৮ দেওয়া থাকলেও প্রকৃত পক্ষে এ সকল কবিতাগুলো রচনা পর্ব শুরু হয় আরো দু ’ বছর পূর্বে অর্থাৎ , ১৯২৬ - এ । যখন কবি হিশেবে বিষ্ণু দে একেবারেই নতুন এবং নবীন । ১৯৩৩ - এ ...

প্রবন্ধঃ অমিয় চক্রবর্তী : ‘বৃষ্টি’ নিয়ে তিনটি কবিতা

রবীন্দ্রনাথ, মেঘ-বরষা বৃষ্টি নিয়ে এতো সংখ্যক কবিতা লিখেছেন যে তাঁর সমান বা সমসংখ্যক কবিতা বাঙলায় কেউ লিখেনি। রবীন্দ্রনাথ, যাঁর কবিতায় বার বার এবং বহুবার ফিরে ফিরে এসেছে মেঘ, বরষা, বৃষ্টি। বৃষ্টি নামটি নিলেই মনে পড়ে কৈশোর পেড়িয়ে আসা রবীন্দ্রনাথের ওই কবিতাটির কথা। ‘দিনের আলো নিবে এল সূর্য্যি ডোবে ডোবে আকাশ ঘিরে মেঘ জুটেছে চাঁদের লোভে লোভে।’ বৃষ্টি নিয়ে কবিতা পড়ার কথা মনে পড়লে এটাই চলে আসে আমার মনে। অমিয় চক্রবর্তী বৃষ্টি নিয়ে লিখেছেন বেশ কিছু কবিতা। বাঙলায় বৃষ্টি নিয়ে কবিতা লিখেনি এমন কবির সংখ্যা খুব কম বা নেই বললেই চলে। অমিয় চক্রবর্তী, যাঁর কবিতায় পাই ‘বৃষ্টি’ নামক কিছু সৌন্দর্যময় কবিতা। যে কবিতাগুলো আমাকে বিস্ময় বিমুগ্ধ ক’রে। ওই কবিদের কারো কারো কবিতা দ্রুত নিঃশ্বাসে পড়া সম্ভবপর হয়ে উঠে না। বৃষ্টি নামক প্রথম কবিতাটি পাওয়া যাবে অমিয় চক্রবর্তীর ‘একমুঠোতে’। উন্নিশটি কবিতা নিয়ে গ’ড়ে উঠে ‘একমুঠো’ নামক কাব্য গ্রন্থটি। যেখান থেকে শ্রেষ্ঠ কবিতায় তুলে নেওয়া হয় চারটি কবিতা। আমার আরো ভালোলাগে ‘বৃষ্টি’ কবিতাটি ওই তালিকায় উঠে আসে। শ্রেষ্ঠ কবিতায় না আসলে আমার যে খুব খারাপ লাগতে তা-ও নয়। ওই কবিতা...

প্রবন্ধঃ বুদ্ধদেব বসু ও ‘কঙ্কাবতী’

বুদ্ধদেব বসু প্রেমের অজস্র কবিতা রচনা করেছেন । অন্য অনেকের মতো তিনিও বেছে নেন একজন প্রেমিকাকে , যে হ ’ য়ে উঠে বুদ্ধদেবের অতুল্য প্রেমিকা হিশেবে । ‘ কঙ্কাবতী ’ অনিন্দ্য প্রেমিকা হ ’ য়ে বুদ্ধদেবের কাব্যতে বিচরণ ক ’ রে স্বচ্ছন্দে । স্থির হয়ে বসে পড়ে কঙ্কাবতী ’ কাব্যগ্রন্থে । যে কাব্যগ্রন্থে ‘ কঙ্কাবতী ’ দেখা দেয় অনৈসর্গিক হয়ে । ‘ কঙ্কাবতী ’ কাব্য রচনার পূর্বে ‘ কঙ্কাবতীকে ’ দেখা দেয় অনৈসর্গিক হয়ে । ‘ কঙ্কাবতী ’ কাব্য রচনার পূর্বে কঙ্কাবতীকে আমরা দেখতে পাই অন্য কোনো কবিতায় । যেখানে সে প্রেমিকার কাছে হয়ে ওঠে কুৎসিত কঙ্কাল ব্যতীত অন্য কিছু নয় । প্রগাঢ় ভাবে প্রাপ্তির জন্যে সমস্ত কবিতা জুঁড়ে দেখতে পাই কবির অপরিবর্তনীয় আবেদন । কঙ্কাবতী , যাঁর সাথে কিছু বাক্য বিনিময়ের জন্যে রক্তের হিমবাহে দেখা দেয় চঞ্চলতা । সুপ্রিয়া প্রেমিকা মুখ তোলা মাত্র কবি হাঁরিয়ে ফেলেন ওই সৌন্দর্যময় বাক্যগুলো , যা বলার জন্যে অপেক্ষায় ছিলেন কবি দীর্ঘদিন । প্রেমিকা যখন খুব কাছাকাছি হয়ে এগিয়ে আসেন , ওই ব্যর্থ ...