তাঁর পিতা অবিনাশ চন্দ্র দে ছিলেন একজন অ্যাটর্নী। বিষ্ণু দে কলকাতার মিত্র ইনস্টিটিউট এবং সংস্কৃত কলিজিয়েট স্কুলে পড়াশোনা করেন। ১৯২৭ সালে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করার পর বঙ্গবাসী কলেজে আইএ পড়তে যান। তিনি সাম্মানিক ইংরাজি বিষয়ে স্নাতক হন সেন্ট পল্স কলেজ থেকে। এরপর তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরাজিতে এম এ করেন। ১৯৩৫ সালে তিনি রিপন কলেজে যোগদান করেন। এরপর তিনি ১৯৪৪ থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত প্রেসিডেন্সি কলেজে এবং ১৯৪৭ থেকে ১৯৬৯ সাল পর্যন্ত তিনি মৌলানা আজাদ কলেজে পড়ান। এরপর তিনি কৃষ্ণনগর কলেজেও পড়িয়েছিলেন। ১৯২৩ সালে কল্লোল পত্রিকা প্রকাশের মাধ্যমে যে সাহিত্য আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল কবি বিষ্ণু দে তার একজন দিশারী। ১৯৩০ সালে কল্লোলের প্রকাশনা বন্ধ হলে তিনি সুধীন্দ্রনাথ দত্তের 'পরিচয়' পত্রিকায় যোগদান করেন এবং সেখানে একজন সম্পাদক হিসাবে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত কাজ করেন। ১৯৪৮ সালে চঞ্চল কুমার চট্টোপাধ্যায়ের সহায়তায় তিনি সাহিত্য পত্র প্রকাশ করেন। তিনি 'নিরুক্তা' নামের একটি পত্রিকাও সম্পাদনা করেছিলেন। কবি টি এস এলিয়টের কায়দা এবং ভাবনা দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন। তিনি 'ছড়ানো ...
বাংলা কবিতায় রাজনীতির প্রবেশ মূলত একটি সভ্যতার দীর্ঘ বিবর্তনের অংশ; যেখানে মানুষের ভাষা, ইতিহাস, দুঃখ, বঞ্চনা, আত্মপরিচয় ও প্রতিরোধের আকাঙ্ক্ষা পরস্পর মিশে গ’ড়ে তুলেছে এমন এক কাব্যিক ভূগোল যার ভেতরে সমাজব্যবস্থার প্রতিটি স্তর, রাজনৈতিক ক্ষমতার প্রতিটি পরিবর্তন, রাষ্ট্রের প্রতিটি রূপান্তর এবং জনগণের প্রতিটি সংগ্রাম এক অদৃশ্য সুতায় গাঁথা হ’য়ে আছে। তাই বাংলা কবিতায় রাজনীতির আগমন কোনো বহিরাগত ঘটনা নয়, বরং মানবসভ্যতার গভীরে থাকা সেই প্রাচীন সম্পর্কেরই পুনর্বিন্যাস। যেখানে ভাষা শুধু যোগাযোগের মাধ্যম নয়, বরং শোষণ ও কর্তৃত্বের বিরুদ্ধে সংগ্রামের সবচেয়ে ধারালো অস্ত্রও। যখন মানুষ গানের ভেতর নিজের কষ্টকে রেখেছিল, তখনই রাজনীতি সেখানে জন্ম নিয়েছিল, কারণ কষ্টের উৎস ছিল ক্ষমতা, শাসন, বৈষম্য, ধর্মীয় দমন এবং সামাজিক শ্রেণিভাগ, আর তাই প্রথম থেকেই বাংলা কবিতার ভেতরে রাজনীতি রূপকের মতো লুকিয়ে থেকেও সর্বদা জেগে উঠেছে। মধ্যযুগের মঙ্গলকাব্য বা পীর-দরবেশদের গানে জীবনের জটিলতা, শোষণের বিরুদ্ধে গোপন অভিযোজন, সামন্ততান্ত্রিক অত্যাচারের প্রতি বিদ্রূপ,এসবই ছিল আদিম রাজনৈতিক কণ্ঠস্বর, যদিও তা ধর্মীয় বা আধ্যাত্মিক র...