সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

বুকের ভেতর কিছু স্মৃতি

স্মৃতিগুলো বড় করুন আর দীর্ঘ হ’তে থাকে আমার তীব্র ভালোবাসার আবেগে; তাদেরকে আমি চিনি না, যাদের সাথে কথা বলি মনে-মনে, কোমল স্বরে নির্মলে সকাল কিংবা মধ্যে দুপুরে; কোনো কিছুই শূন্যতা ও নিরর্থক ছাড়া আর কিছুই না;   তারপরও নিঃসঙ্গ হ’য়ে মিশে যাই প্রোজ্জ্বলিত সেই আলোর সাথে কেঁপে-কেঁপে;   স্মৃতিকাতর ভাবনাগুলো সুগভীর হ’তে থাকে শিশিরের ফোঁটায়, হলুদ বনে নিরন্তর ঝ’রে পড়া নষ্ট শরীরে, সৌন্দর্যের সব কিছুই যেন হৃদপিণ্ডে গেঁথে থাকে মৃদু হ’য়ে; শিউলির বোঁটায় ছুঁয়ে যায় শিল্পের নির্মল স্পর্শ, বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকি কোনো এক ছায়ার দিকে, যে আমারই হ’য়ে কথা ব’লে অন্যর সাথে; সুস্থির সেই পথগুলো যা অনেকটা আমার অচেনা, অনিশ্চিত দিনে অদ্ভুত ডানায় উ’ড়ে যায় সাদা মেঘ;   আমার দু’ঠোঁটে কে এঁকে যায় চিত্রকল্পের খোঁদাই করা কঠিন সৌন্দর্য নিটোল ছোঁয়ায় মনের স্তরে-স্তরে, প্রার্থনার সকল অর্থ যেন বাস্তব হ’য়ে ফুটে উঠে নির্ভয়ে; উজ্জ্বল জ্যোতির্ময় দিনে সব কিছু যেন মুহূর্তে হারিয়ে যায় আমার গভীর শূন্যতায়    হারিয়ে ফেলি প্রাজ্ঞ উপলব্ধি, কোনো এক ভাবনার অতলে, রোদের ঝিলিক ছুঁয়ে যায় আমার বাড়ন্ত শরীরে,...

মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় : জীবন ও সাহিত্যের রূপরেখা

মাত্র ২৮ বছরের শিল্পী জীবনে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাহিত্যকর্ম সংখ্যায় বিপুল। উপন্যাস, ছোটগল্প, প্রবন্ধ, নাটক ও সর্বোপরি রয়েছে বেশ কিছু কবিতা। সাহিত্য রচনার সমান্তরালে যে জীবনও তিনি রচনা করেছিলেন এই সত্য সর্বদা স্মরণযোগ্য। তার প্রকৃত নাম প্রবোধকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় (১৯০৮-১৯৫৬) তার সাহিত্যিক নাম। পূর্ববাংলা সাধারণ চিত্র তার চোখে গেঁথে রয়েছে সৌন্দর্য নিয়ে । অল্পকালের মধ্যে তিনি কলকাতার আধুনিক গোষ্ঠীর প্রধান লেখকে পরিণত হলেন। বস্তুত, মানব সম্পর্ক নিয়ে তার লেখার সাথে আমাদের পরিচয়। তার রচিত সমস্ত চরিত্রেই একটি ধাঁচ আছে, যার চিত্র আমরা দেখতে পাই সমস্ত সাহিত্য জুড়ে। সাধারণ মানুষের মন, মৌলিকভাবে যদি বা কখনো সরল থেকেই থাকে, পারিপার্শ্বিকতা তাকে হয়তো বা তার অজান্তেই আরও জটিল-কুটিল ও বঙ্কিম করে তুলবে। এই জটিলতা বা ব্যক্তির ইচ্ছা নিরপেক্ষ চিন্তা ও কর্মপরস্পরা নিয়ন্ত্রিত হয় বহু উপাদানের মিশ্রণে। যার চিত্র আমরা সুস্পষ্ট দেখতে পাই তার উপন্যাস ও ছোটগল্পে। এখানে একটি কথা স্পষ্ট করে বলতে পারি যে, ব্যক্তিমানুষের মনোজগতে যে দুর্জ্ঞেয় অপার রহস্য তিনি ছড়িয়ে দিলেন তার অজস্র কাহিনি পরস্...

তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়: জীবন ও সাহিত্যচিন্তা

তারাশঙ্কর যখন জন্ম নিলেন ১৮৯৮ সালে বীরভূমের লাভপুর গ্রামে, তার সাত পূর্বে প্রয়াত হয়েছেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যা সাগর, চার বছর পূর্বে প্রয়াণ ঘটেছে বঙ্কিমচন্দ্রের এবং রবীন্দ্রনাথ তখন সাহিত্য ও খ্যাতির চুড়ায়। বাংলার রেনেসাঁর স্পর্শ বাধা সত্ত্বেও ঠিক পৌঁছে গেছে তার পূর্ণতায়। ভারতের জাতীয় কংগ্রেস প্রতিষ্ঠিত হয়েছে মাত্র তের বছর হলো। জাতীয় জীবনে উনিশ শতক তখন বিরাজ করছে অন্তিম প্রহরে। প্রথম জীবনে কবিতা ও নানা ধরনের কিছু নাটক লিখলেও তার প্রতিভার স্পষ্ট চিহ্ন রয়েছে গল্প ও উপন্যাসে, তা আর নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। রবীন্দ্রনাথ যেমন তাঁর সম্পর্কে বলেছিলেন, ‘তোমার কলমে বাস্তবতা সত্য হয়েই দেখা দেয় তাতে বাস্তবতার কোমর-বাঁধা ভান নেই, গল্প লিখতে বসে গল্প না লেখাটাকেই যারা বাহাদুরি মনে করেন তুমি যে তাদের দলে নাম লেখাওনি এতে খুশি হয়েছি। লেখায় অকৃত্রিমতাই সবচেয়ে দুরহ।’     তারাশঙ্কর আজ আমাদের মধ্যে বেঁচে না থাকলেও, বেঁচে রয়েছেন তাঁর সমস্ত সৃষ্টির মধ্যে দিয়ে। যে সকল সৃষ্টি আজ শুধু তার হয়েই দেখা দেয় না, বরং স্বচিত্রে বিরাজ করছে সমস্ত বাংলা সাহিত্যেয়। উত্তর-শরৎচন্দ্রের যুগের তিনি যে সর্বশ্রেষ্ঠ সাহ...

কবিতাঃ অনেক দিন তাঁদেরকে দেখি না

  অনেক দিন তাঁদেরকে দেখি না, যাঁদেরকে চোখের কোণে লুকিয়ে রেখেছি শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে; অশ্রুকোণে তারা লুকিয়ে থাকে গভীর স্মৃতির অন্তরালে আমার নিরর্থক দিনগুলি বেড়ে উ’ঠে দুঃস্বপ্নে, অতীত স্মৃতি খেলা ক’রে ভাবনার শরীরে নিঃশব্দে, জলের উপর দীর্ঘ ঢেউ ফেলে-ফেলে তারাও হারিয়ে যায় আমার শূন্য বুক থেকে; টলোমলো চোখের ভেতর নেমে আসে কোনো এক বিষাদের চিহ্ন কয়েক মুহূর্তে দীর্ঘ হ’য়ে শুভ্র জ্যোৎস্নার সৌন্দর্যও যেন হারিয়ে যায় নীল বুক থেকে মাঘের কোমল বাতাসে তীব্রভাবে                                      আবেগের সমস্ত কিছু যেন ধুয়ে-মুছে গেছে হৃদয়ের সজীব কোণ থেকে মায়াবী শূন্যলোকে   প্রোজ্জ্বলিত দিনের শেষে নেমে আসে গাঢ় রাত্রি নিভৃত বু’কে, শাশ্বত ভাবনার মহাবিশ্বে একাকী চাঁদও ভুলে যায় আলো-আঁধারের সমস্ত স্মৃতির কথা বিবর্ণ ধারায় নিঃশব্দে; সমস্ত দুঃস্বপ্ন যেন জড়ো হয় আমার চতুর্দিকে, হারানো স্মৃতির ফেলে আসা উজ্জ্ব...

কবিতাঃ কবির বাস্তবতা

                      বাস্তবের সাথে মিশে থাকি, চিন্তা-ভাবনায় জড়ো করি এক গভীর উপলব্ধি                     কাব্যেয় রূপ দেই ঐশ্বর্যময় প্রোজ্জ্বলিত শব্দের; চৈতন্যলোকে টেনে আনি                     বিচ্ছিন্ন চিত্রকল্পনা, ছুঁয়ে যাওয়া স্বপ্নহীন বিবর্ণতায় একে দিই মহাকবির                     অমর বাণী কয়েক মুহূর্তে, মৃদু স্বরে বেজে উ’ঠে কোনো হারানো সুর বু’কের                     মধ্যে থেকে, নিঃসঙ্গ ও গাঢ় অন্ধকারে মিশে যায় পূর্ণ অভিজ্ঞতার অনেক কিছু;                    ...

কবিতাঃ নিঃসঙ্গতা ও একটি নীল জ্যোৎস্না

                     মনে প’ড়ে না তোমার কথা, খুব বেশী যে চেষ্টা করেছি তাও নয়-                    ভাবনার সাথে মিশে থাকি একান্ত হ’য়ে, গভীর বু’কে জ’মে থাকে অনেক                    আবর্জনা শতাব্দীর অমল শিশিরে, সান্ত্বনা দিয়ে তাদের ঘুমিয়ে রাখি                    আলতো ক’রে মনের কোণে; নিসর্গ সন্ধ্যায় ঝ’রে প’ড়ে নীল জ্যোৎস্না আমার                    বারান্দায়, রক্তজবা তার ডাল বিছিয়ে দেয় কোমল হাতের নিবিড় স্পর্শে;                        হা...

কবিতাঃ ঠিক পৌঁছে যাব

                         ঠিক পৌঁছে যাব আমি, দেখে নিও তুমি সেই সময়ের মধ্যে                      যা তুমি আমাকে বেঁধে দিয়েছ, তোমার ফ্রেমে বাঁধা সময় থেকে,                        ভুলে যাইনি আমি সেই সময়ের কথা আমার বিস্তৃত মন থেকে,                      যা তুমি আমাকে বার-বার স্মরণ ক’রে দিয়েছিলে বুধবার সন্ধ্যায়,                         হ য়তো আমি হারিয়ে যাব গভীর অন্ধকারে, দু’চোখে গেঁথে থাকবে               ...