একটু ছোঁয়া দাও, আমার নষ্ট-আবর্জনাময় শরীরে, যে বড় প্রত্যাশী, অনেকদিন আমি উপলব্ধি করিনি, কী তার স্বাদ, আরক্ত শিশিরে, ঠোঁটের কোণে, কিভাবে ঢেউ খেলে যায় শরীর থেকে শরীরে, ধীরে-ধীরে আলিঙ্গনের পর কতক্ষণ কাঁপতে থাকে আমাদের অভ্যন্তরে ভেজা রক্তপদ্মে; অমল জ্যোৎস্নায় ছুঁয়ে দেখছ তা-কখনও, কেঁপে-কেঁপে স্বপ্নের গভীরে সব ভুলে গেছি রূপান্তরের স্বপ্নলোকে; আঙুলের কোমল ছোঁয়ায়-গ্রীবায়, তোমার অপার্থিব হীরকখচিত স্বর্ণের শরীর, ঢেউ খেলানো মসৃণ চুল আর ঝর্ণাস্রোতে ব’য়ে যাওয়া গোলাপী আভা, যেন ছিটিয়ে-ছিটিয়ে দেখানো পথে স্বর্ণ ছড়াচ্ছ ইস্পাতমিশ্রিত কঠিন শরীরে-পদ্ম আর জ্যোতির্ময় চোখের কোণে; আমি হেঁটে যাচ্ছি মধুমতী, শৈলদাহ, বারাসিয়া আর ঘাঘর নদীর পাড় ধ’রে; চাঁদ আর জ্যোৎস্নার সাথে কথা বলে-বলে নিসর্গপ্রদীপে, আশ্বিনের বাতাসে মুহূর্তে ছুঁয়ে যাও, ঠোঁটের কোমল স্পর্শে, কেঁপে উঠা আঙুলের শ্রাবণ জলে, তোমার সাম্রাজ্যেয় তুমি সম্রাজ্ঞী, মাতাল আমি বিবর্ণ মধ্যেদিনে-বিস্তৃত ভূমিতে যদি চোখ রাখি...
মামুনুর রহমান, সমকালীন বাংলা সাহিত্যের এক অদ্বিতীয় সংবেদনশীল কণ্ঠ। তাঁর লেখায় জীবনের সাধারণ মুহূর্তগুলোও নতুন এক আলোর আভায় ফু’টে ওঠে। তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন, কবিতা কেবল শব্দের খেলায় সীমাবদ্ধ নয়; এটি সেই নীরব ভাষা, যা অন্তরের গভীরে বাস ক’রে, পাঠকের অভ্যন্তরীণ অনুভূতির সঙ্গে মিশে এক অনন্য প্রতিধ্বনি সৃষ্টি ক’রে। তেমনি তাঁর গদ্য রচনা পাঠককে শুধু ভাবায় না, বরং অনুভব করায়, জীবনের ক্ষুদ্রতম ছোঁয়ায়ও গভীর মানসিক ধ্বনিতে স্পন্দিত ক’রে। তিনি খেয়াল রাখেন পাঠকের মন ও মননশীল দিকটি।