সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

কবিতাঃ রূপান্তরের চিহ্ন


               বিস্তৃত স্বপ্নলোকে সবুজ উদ্যান, অরণ্য আর জেগে উঠা একফালি চাঁদ-
               যার সৌন্দর্যে কবির বু’কে রচিত হ’লো শতাব্দীর অমরকাব্য;
               বিষাদ আর প্রেমময় সেই কবিতায় বলা হ’লো তোমারই কিংবদন্তীর কথা,  
               দীপ্তিমান, আশ্চর্য আর উজ্জ্বল সেই প্রেমময় শ্লোক, স্বপ্নবেগে নির্ঝরের বু’কে,  
               যেখানে তোমার বন্দনাই গাওয়া হ’লো অনেক বেশী অশ্রুভেজা চোখে-
               নিরিবিলি জলের প্রবাহিত ধারায় নিজেকে উৎসর্গ করলাম নিঃশব্দে  
               রূপসীর অমল বাহুতে, লাবণ্য ছুঁয়ে গেল শ্রাবণ জলের ঢেউয়ে,
               আমার নষ্ট শরীরে গেঁথে নিলাম শিশিরের শুভ্রতা, ভরা পূর্ণিমায়
               হারিয়ে গেল আমার মধ্যেযৌবন, আশ্চর্যজনক রূপান্তরিত শিল্পের অস্তিত্বে;
প্রাজ্ঞ উপলব্ধি ধারণ করলাম নিবিড় বু’কে, তীব্র প্রেমের স্মৃতিতে-
কেঁপে উঠি ধীরে-ধীরে, ঘাসের শিশিরে স্তব্ধ চোখের নীলাকাশে,
গভীর অন্ধকারে ডুবে ছিলাম জ্যোতির্ময় শরীরে, পাখির ডাক, রোদের ঝিলিক,                   
স্বরহীন কণ্ঠ, জলের গভীর শব্দ, স্নিগ্ধ শিশির, শ্রাবণের বৃষ্টির ফোঁটা-  
কিছুই চেনা ছিল না আমার অস্পষ্ট স্বপ্নাতীত পবিত্র পৃথিবীতে    
               নিশীথের কোমল বাতাসে কেটে গেল একটি বসন্তের রাত ব্যর্থ প্রলাপে,               
               আবার তার সাথে মিশে যাই দ্রুতিময় সম্পর্কে, নদীর বু’কে ঝ’রে বৃষ্টির
               ফোঁটা বিরামহীন হারানো দিনের শেষে বিচ্ছেদের নিবিড় আলিঙ্গনে;
               অচেনা কণ্ঠও আমাকে ব্যাকুল ক’রে নিটোল উজ্জ্বল প্রেমময় গাঢ় সন্ধ্যায়
               সেই ছুঁয়ে যাওয়া টলোমলো সুখে, সমতল ভূমিতে আমি নেমে পড়ি,
               মায়াময় সরোবরের কথা ভুলে, শতাব্দীর নীল হাওয়া খেলা ক’রে
               কালো মেঘের বিস্ময়কর অবিন্যস্ত সৌন্দর্যে, শূন্যেয় মিশিয়ে দিলাম
               রক্তঝরা আমার বিবর্ণতা, বিতৃষ্ণা অলৌকিক বিশ্বাসে, উজ্জ্বল আর বিকশিত
               ধারায় এ-বুকে জন্ম নেয় অজস্র জলধারা, বাতাসে প্রতিধ্বনি, আমার নিবিড়
               পল্লবে গুঞ্জন ছড়ায় সংগীতের শূন্য সুর, মায়াময় দ্বীপপুঞ্জ ভ’রে উ’ঠে
               আদিম উল্লাসে, রূপান্তরের চিহ্ন মিশে থাক শুভ্র নিঃসঙ্গতায়, পবিত্র শরীরে।   



মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

প্রবন্ধঃ বুদ্ধদেব বসু ও ‘কঙ্কাবতী’

বুদ্ধদেব বসু প্রেমের অজস্র কবিতা রচনা করেছেন । অন্য অনেকের মতো তিনিও বেছে নেন একজন প্রেমিকাকে , যে হ ’ য়ে উঠে বুদ্ধদেবের অতুল্য প্রেমিকা হিশেবে । ‘ কঙ্কাবতী ’ অনিন্দ্য প্রেমিকা হ ’ য়ে বুদ্ধদেবের কাব্যতে বিচরণ ক ’ রে স্বচ্ছন্দে । স্থির হয়ে বসে পড়ে কঙ্কাবতী ’ কাব্যগ্রন্থে । যে কাব্যগ্রন্থে ‘ কঙ্কাবতী ’ দেখা দেয় অনৈসর্গিক হয়ে । ‘ কঙ্কাবতী ’ কাব্য রচনার পূর্বে ‘ কঙ্কাবতীকে ’ দেখা দেয় অনৈসর্গিক হয়ে । ‘ কঙ্কাবতী ’ কাব্য রচনার পূর্বে কঙ্কাবতীকে আমরা দেখতে পাই অন্য কোনো কবিতায় । যেখানে সে প্রেমিকার কাছে হয়ে ওঠে কুৎসিত কঙ্কাল ব্যতীত অন্য কিছু নয় । প্রগাঢ় ভাবে প্রাপ্তির জন্যে সমস্ত কবিতা জুঁড়ে দেখতে পাই কবির অপরিবর্তনীয় আবেদন । কঙ্কাবতী , যাঁর সাথে কিছু বাক্য বিনিময়ের জন্যে রক্তের হিমবাহে দেখা দেয় চঞ্চলতা । সুপ্রিয়া প্রেমিকা মুখ তোলা মাত্র কবি হাঁরিয়ে ফেলেন ওই সৌন্দর্যময় বাক্যগুলো , যা বলার জন্যে অপেক্ষায় ছিলেন কবি দীর্ঘদিন । প্রেমিকা যখন খুব কাছাকাছি হয়ে এগিয়ে আসেন , ওই ব্যর্থ ...

প্রবন্ধঃ অমিয় চক্রবর্তী : ‘বৃষ্টি’ নিয়ে তিনটি কবিতা

রবীন্দ্রনাথ, মেঘ-বরষা বৃষ্টি নিয়ে এতো সংখ্যক কবিতা লিখেছেন যে তাঁর সমান বা সমসংখ্যক কবিতা বাঙলায় কেউ লিখেনি। রবীন্দ্রনাথ, যাঁর কবিতায় বার বার এবং বহুবার ফিরে ফিরে এসেছে মেঘ, বরষা, বৃষ্টি। বৃষ্টি নামটি নিলেই মনে পড়ে কৈশোর পেড়িয়ে আসা রবীন্দ্রনাথের ওই কবিতাটির কথা। ‘দিনের আলো নিবে এল সূর্য্যি ডোবে ডোবে আকাশ ঘিরে মেঘ জুটেছে চাঁদের লোভে লোভে।’ বৃষ্টি নিয়ে কবিতা পড়ার কথা মনে পড়লে এটাই চলে আসে আমার মনে। অমিয় চক্রবর্তী বৃষ্টি নিয়ে লিখেছেন বেশ কিছু কবিতা। বাঙলায় বৃষ্টি নিয়ে কবিতা লিখেনি এমন কবির সংখ্যা খুব কম বা নেই বললেই চলে। অমিয় চক্রবর্তী, যাঁর কবিতায় পাই ‘বৃষ্টি’ নামক কিছু সৌন্দর্যময় কবিতা। যে কবিতাগুলো আমাকে বিস্ময় বিমুগ্ধ ক’রে। ওই কবিদের কারো কারো কবিতা দ্রুত নিঃশ্বাসে পড়া সম্ভবপর হয়ে উঠে না। বৃষ্টি নামক প্রথম কবিতাটি পাওয়া যাবে অমিয় চক্রবর্তীর ‘একমুঠোতে’। উন্নিশটি কবিতা নিয়ে গ’ড়ে উঠে ‘একমুঠো’ নামক কাব্য গ্রন্থটি। যেখান থেকে শ্রেষ্ঠ কবিতায় তুলে নেওয়া হয় চারটি কবিতা। আমার আরো ভালোলাগে ‘বৃষ্টি’ কবিতাটি ওই তালিকায় উঠে আসে। শ্রেষ্ঠ কবিতায় না আসলে আমার যে খুব খারাপ লাগতে তা-ও নয়। ওই কবিতা...

প্রবন্ধঃ সুধীন্দ্রনাথ দত্তের প্রবন্ধ সংগ্রহ

সুধীন্দ্রনাথ , সাতটি কাব্যগ্রন্থের মতো সাতটি প্রবন্ধের গ্রন্থ লিখলে খারাপ হতো না , বেশ ভালোই হতো । সুধীন্দ্রনাথের প্রবন্ধগুলো হালকা মানের নয় , যদিও তাঁর কোন রচনাই হালকা নয় । সাহিত্যে বিচারে তা অনেক উঁচুমানের । তার উপর ভাষার ব্যাপারটি তো রয়েছেই । সুধীন্দ্রনাথ মাত্র দুটি প্রবন্ধ গ্রন্থ রচনা করেছেন । গ্রন্থ দুটো ‘ স্বগত ’ ( ১৩৪৫ ঃ ১৯৩৮ ), অপরটি ‘ কুলায় ও কালপুরুষ ’ ( ১৩৬৪ : ১৯৫৭ ) । ‘ স্বগত ’- তে রয়েছে ষোলটি প্রবন্ধ । গ্রন্থ দুটি তিনি রচনা করেছেন দু ’ ভাগে । লরেন্স বা এলিয়ট এর প্রবন্ধ যেমন পাওয়া যাবে না ‘ কুলায় ও কালপুরুষ ’- এ ; তেমনি রবীন্দ্র সম্পর্কিত প্রবন্ধ নেওয়া হয়নি ‘ স্বগত ’- এ । প্রকাশ কাল অনুযায়ী ‘ স্বগত ’- এর প্রবন্ধসমূহ : ‘ কাব্যের মুক্তি ’ ( ১৯৩০ ); ‘ ধ্রুপদ পদ - খেয়াল ’ ( ১৯৩২ ), ‘ ফরাসীর হাদ্য পরিবর্তন ’ ( ১৯৩২ ), ‘ লিটনস্ট্রেচি ’ ( ১৯৩২ ), ‘ লরেন্স ও ভার্জনিয়া উল্ফ্ ’ ( ১৯৩২ ), ‘ উপন্যাস তত্ত্ব ও তথ্য ’ ( ১৯৩৩ ), ‘ উইলিয়ম ফকনর ’ ( ১৯৩৪ ), ‘ ঐতিহ্য ও টি , এস , এলিয়ট ’ ( ১৯৩৪ ), ...