সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

কবিতাঃ কবিদের স্মৃতিতে

                     
                     তোমরা গেয়ে উঠলে গান একই সুরে, ভেসে আসা শূন্যতার
                     মুখোমুখি, উজ্জ্বল আলোর প্রতিক্ষণে মসৃণ আর স্নিগ্ধ বেহালার সুরে;
                     কোমল আর তীব্র অভিমানী কেউ কেউ, শিশিরের জলে মুখ লুকালে
                     হৃদয়ের গভীর থেকে, নদীর জলে প’ড়ে রইলো হারিয়ে যাওয়া ব্যথিত
                     অতীত, আলো আর আঁধারে দাঁড়িয়ে থাকা শ্রাবণ বাতাসে অমল
                   
                     পুণ্যময়তায়, যারা ভুলে গেল ভাবনার মৌনতা; শুভ্রতা মিশে থাকে
                     নির্ঝর পদ্মজলে; প্রোজ্জ্বল গাঢ় অর্থময় পৃথিবীর পথ থেকে নিরুদ্দেশে
                     ম্রিয়মান নক্ষত্রের বিশাল আকাশে কুয়াশার নিবিড় গভীরে জীবনের
                     টুকরো টুকরো স্বপ্ন হারিয়ে গেল কোনো এক মাঘের দুপুরে; আমিও
                     হৃদয়ের গভীরে নিসর্গমালায় হারিয়ে যাই স্মৃতি আর চাঁদকে বু’কে নিয়ে
                   
                     দাঁড়িয়ে থাকি একাকী ও নিঃসঙ্গতায় ভরা জ্যোৎস্নার ঝ’রে পড়া সবুজ
                     অরণ্যেয় ভাবনার জলাধারে, পথে পথে সর্বত্র শুনেছি ব্যর্থবিলাপ ব’য়ে
                     যাওয়া বিশাল নীলবীথি তাদের হৃদপিণ্ডে; বিস্ময়ে সরোবরের কোমলতায়
                     অমল পুণ্যময় জলে; শ্রদ্ধা আর স্পর্শের ভাষা প্রীতিময় হ’য়ে উ’ঠে একান্ত
                     আলিঙ্গনের সোনালী স্বপ্নে; নদী উপত্যকা পর্বত সবই বিকশিত মর্মর
                   
                     পল্লবের শিখরে, অন্তহীন অন্তরঙ্গতায় নিষ্ফল আমার বিষাদমাখা কাব্য;
                     বিস্মৃত গাঢ় দুঃখের গভীরে সুনিশ্চিত পুঞ্জীভূত পরিত্যক্ত আমার কণ্ঠস্বর
                     অমল আর গীতিময় সৌরভ শ্রুতিতে ভেসে আসে প্রার্থনার আকুল আহ্বানে;  
                     শোকার্ত আজ তাদের জন্য যারা অতীত হয়েছে গভীর স্বপ্নের মধ্যে রুপালী
                     দিনে; কিঞ্চিত ভাবনার প্রাজ্ঞতায় নক্ষত্রের সব আলো সীমাহীন নিরন্তর ফেলে
                   
                     আসা আমার পরিত্যক্ত দুর্ভেদ্য বিলাপ, অদৃশ্য ঘনিষ্ঠতা তাদের নিয়ে গেল সত্তার
                     মিশ্রিত অন্তঃসত্ত্বার সমতলে; অনির্বচনীয় আমি, একা পড়ে রই শব্দমালার গহীনে
                     রচিত কাব্যের ভেতর নিঃশব্দে কোমল সন্ধ্যাবেলায়, বাতাসে ভেসে বেড়ায় সুগন্ধ,  
                     যারা ভ’রে তোলে আমার ইন্দ্রিয়কে হৃদয়ের স্পন্দনে, বিপুল বিস্ময়ে আমি
                            দাঁড়িতে থাকি সীমানার বাইরে নির্বাসিত মননে, বৃষ্টিরধারা ঝ’রে যায় চতুর্দিকে।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

প্রবন্ধঃ বিষ্ণু দে : ‘উর্বশী ও আর্টেমিস’ থেকে ‘চোরাবালি’

বিষ্ণু দে , তিরিশি কবিদের অন্যতম । কবিতা রচনাই যাঁর কাছে এক এবং অদ্বিতীয় হ ’ য়ে দেখা দেয় । কাব্যে সংখ্যার দিক থেকে অতিক্রম করেছেন সতীর্থদের । বিষ্ণু দে , যাঁর কবিতা রচনার সূচনা পর্বটিও শুরু হয় খুব দ্রুততম সময়ে । কবিতা সৃষ্টির পর্বটি অব্যাহত রেখেছেন সর্বদা । পঁচিশটি কবিতা নিয়ে ‘ উর্বশী ও আর্টেমিস ’- এ নিজেকে প্রকাশ করেন স্ব - মহিমায় । যে কবিতাগুলা বিস্ময়বিমুগ্ধ ক ’ রে অন্যেদেরকেও । ওই কবিতা শুধু বিষ্ণু দে ’ কে নয় , বরং নতুনতর হ ’ য়ে দেখা দেয় বাঙলা কবিতা । বিষ্ণু দে ’ র ‘ উর্বশী ও আর্টেমিস ’ রবীন্দ্রনাথকে পড়তে হয়েছিল দু ’ বার । ‘ উর্বশী ও আর্টেমিস ’- এর কবিতাগুলির রচনাকালের ব্যাপ্তি দেওয়া আছে ( ১৯২৮ - ১৯৩৩ ) সময়ের মধ্যে , এবং গ্রন্থকারে প্রকাশ পায় ওই একই বছরে অর্থাৎ , ১৯৩৩ - এ । কিন্তু রচনাকালের ব্যাপ্তি ১৯২৮ দেওয়া থাকলেও প্রকৃত পক্ষে এ সকল কবিতাগুলো রচনা পর্ব শুরু হয় আরো দু ’ বছর পূর্বে অর্থাৎ , ১৯২৬ - এ । যখন কবি হিশেবে বিষ্ণু দে একেবারেই নতুন এবং নবীন । ১৯৩৩ - এ ...

প্রবন্ধঃ অমিয় চক্রবর্তী : ‘বৃষ্টি’ নিয়ে তিনটি কবিতা

রবীন্দ্রনাথ, মেঘ-বরষা বৃষ্টি নিয়ে এতো সংখ্যক কবিতা লিখেছেন যে তাঁর সমান বা সমসংখ্যক কবিতা বাঙলায় কেউ লিখেনি। রবীন্দ্রনাথ, যাঁর কবিতায় বার বার এবং বহুবার ফিরে ফিরে এসেছে মেঘ, বরষা, বৃষ্টি। বৃষ্টি নামটি নিলেই মনে পড়ে কৈশোর পেড়িয়ে আসা রবীন্দ্রনাথের ওই কবিতাটির কথা। ‘দিনের আলো নিবে এল সূর্য্যি ডোবে ডোবে আকাশ ঘিরে মেঘ জুটেছে চাঁদের লোভে লোভে।’ বৃষ্টি নিয়ে কবিতা পড়ার কথা মনে পড়লে এটাই চলে আসে আমার মনে। অমিয় চক্রবর্তী বৃষ্টি নিয়ে লিখেছেন বেশ কিছু কবিতা। বাঙলায় বৃষ্টি নিয়ে কবিতা লিখেনি এমন কবির সংখ্যা খুব কম বা নেই বললেই চলে। অমিয় চক্রবর্তী, যাঁর কবিতায় পাই ‘বৃষ্টি’ নামক কিছু সৌন্দর্যময় কবিতা। যে কবিতাগুলো আমাকে বিস্ময় বিমুগ্ধ ক’রে। ওই কবিদের কারো কারো কবিতা দ্রুত নিঃশ্বাসে পড়া সম্ভবপর হয়ে উঠে না। বৃষ্টি নামক প্রথম কবিতাটি পাওয়া যাবে অমিয় চক্রবর্তীর ‘একমুঠোতে’। উন্নিশটি কবিতা নিয়ে গ’ড়ে উঠে ‘একমুঠো’ নামক কাব্য গ্রন্থটি। যেখান থেকে শ্রেষ্ঠ কবিতায় তুলে নেওয়া হয় চারটি কবিতা। আমার আরো ভালোলাগে ‘বৃষ্টি’ কবিতাটি ওই তালিকায় উঠে আসে। শ্রেষ্ঠ কবিতায় না আসলে আমার যে খুব খারাপ লাগতে তা-ও নয়। ওই কবিতা...

প্রবন্ধঃ বুদ্ধদেব বসু ও ‘কঙ্কাবতী’

বুদ্ধদেব বসু প্রেমের অজস্র কবিতা রচনা করেছেন । অন্য অনেকের মতো তিনিও বেছে নেন একজন প্রেমিকাকে , যে হ ’ য়ে উঠে বুদ্ধদেবের অতুল্য প্রেমিকা হিশেবে । ‘ কঙ্কাবতী ’ অনিন্দ্য প্রেমিকা হ ’ য়ে বুদ্ধদেবের কাব্যতে বিচরণ ক ’ রে স্বচ্ছন্দে । স্থির হয়ে বসে পড়ে কঙ্কাবতী ’ কাব্যগ্রন্থে । যে কাব্যগ্রন্থে ‘ কঙ্কাবতী ’ দেখা দেয় অনৈসর্গিক হয়ে । ‘ কঙ্কাবতী ’ কাব্য রচনার পূর্বে ‘ কঙ্কাবতীকে ’ দেখা দেয় অনৈসর্গিক হয়ে । ‘ কঙ্কাবতী ’ কাব্য রচনার পূর্বে কঙ্কাবতীকে আমরা দেখতে পাই অন্য কোনো কবিতায় । যেখানে সে প্রেমিকার কাছে হয়ে ওঠে কুৎসিত কঙ্কাল ব্যতীত অন্য কিছু নয় । প্রগাঢ় ভাবে প্রাপ্তির জন্যে সমস্ত কবিতা জুঁড়ে দেখতে পাই কবির অপরিবর্তনীয় আবেদন । কঙ্কাবতী , যাঁর সাথে কিছু বাক্য বিনিময়ের জন্যে রক্তের হিমবাহে দেখা দেয় চঞ্চলতা । সুপ্রিয়া প্রেমিকা মুখ তোলা মাত্র কবি হাঁরিয়ে ফেলেন ওই সৌন্দর্যময় বাক্যগুলো , যা বলার জন্যে অপেক্ষায় ছিলেন কবি দীর্ঘদিন । প্রেমিকা যখন খুব কাছাকাছি হয়ে এগিয়ে আসেন , ওই ব্যর্থ ...