সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

কবিতাঃ নক্ষত্রবীথি


নক্ষত্রবীথি, ভাবনার মহাশূন্যতা; নিঃসীমশূন্য তার অন্তরীক্ষ সুরলোক; চিত্তের
সপ্তলোকে অজবীথি; সন্ধ্যাতারায় মিশে যায় উত্তরফাল্গুনী জ্যোতির্ময় নক্ষত্রপুঞ্জ;
আকাশতল মিশে রয় স্মৃতির দিগন্তরেখায়; ধনবতী তার নক্ষত্রখচিত চন্দ্রিমায়,  
সুধাময় ঘনবীথি; অনলশিলা দিকে দিকে; শীতময়ুখ আবর্তন কৃত্রিম স্রোতস্বতী,   
নির্ঝরিণী, তরঙ্গিণী ছুঁয়ে যায় দিব্যনদী; জলতরঙ্গে ঊর্মিল পুঞ্জমেঘে স্বৈর মেঘমগ্ন

বৃষ্টিরধারা হ’য়ে উ’ঠে শিশিরকণায় অঝোর রাত্রিজলে হিমাচ্ছন্ন প্রবালদ্বীপে মুগ্ধ;  
রুপান্তরিত শিলা ব’য়ে যায় পর্বতশৃঙ্গ দীপালোকে, প্রদীপ্ত আলোকে দ্যুতির স্ফূর্তি
বিচ্ছুরিত, বিকীর্ণ সূর্যালোকে, প্রোজ্জ্বল সমুজ্জলে; মেধার হিমবাহে নির্জীব প্রান্তর;
জ্যোৎস্নায় ভেসে যায় আমার হারানো অমানিশি; নীলকমলের শ্বেতপদ্মে অশ্রুসিক্ত
হারানো দিনের বিষাদগ্রস্ত, আবার ফিরে আসে গাম্ভীর্যময় সৌন্দর্যে, ব্যাকুল স্লিগ্ধ 

অমল শরীরে; নিশিকান্ত ছুঁয়ে যায় আমার ভরা পূর্ণিমা তার মাধুর্যে টলমলে জলে;
তরঙ্গিণীর সব ধারা ব’য়ে চ’লে অকূলপাথারে, সন্ধ্যা নদী ব’য়ে দিই নির্ঝরে মেঘে,
বৃষ্টির ফোঁটায় ভ’রে উ’ঠে অমল আঁখিকোণ অম্লান হিমবাহে; প্রজ্জলিত ভাবনার
তুষারে, হিমাচ্ছন্ন দ্বীপপুঞ্জে রূপান্তরিত শিলায় গেঁথে রাখি পবিত্র শ্লোক স্ফুটের  
স্বরে আলোকোজ্জ্বল দীপাবলি নিভে আসে রৌদ্রালোকে জ্যোতির্ময় দ্যুতির রশ্মি;

পরিস্ফুট চেতনা সৌন্দর্যের রঙে জ্যোৎস্নালোকে ফু’টে রয় সবুজ উদ্ভিদ দীর্ঘ কুঞ্জে  
নবপল্লবে রৌদ্রহীন ছায়াস্নিগ্ধ স্বর্ণলতা তার বাহুতে, সন্ধ্যামালতী ঝ’রে প’ড়ে দেহে,
নিদ্রাহীন আমি শিশিরের জলে, অতীন্দ্রিয় অনুভুতিতে নৈশব্দ্য বেজে যায় শ্রুতিময়
সুরে; সুগন্ধ ছড়িয়ে প’ড়ে রৌদ্রকরোজ্জ্বল মধ্যেদিনে শূন্যতার নিঃশব্দে; ধ্বংসস্তুপে
বিলীন হয় রচিত কালস্রোতের শাশ্বত পৌরাণিক কাহিনি নিশীথিনীর গোপন ঘরে;





মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

প্রবন্ধঃ বুদ্ধদেব বসু ও ‘কঙ্কাবতী’

বুদ্ধদেব বসু প্রেমের অজস্র কবিতা রচনা করেছেন । অন্য অনেকের মতো তিনিও বেছে নেন একজন প্রেমিকাকে , যে হ ’ য়ে উঠে বুদ্ধদেবের অতুল্য প্রেমিকা হিশেবে । ‘ কঙ্কাবতী ’ অনিন্দ্য প্রেমিকা হ ’ য়ে বুদ্ধদেবের কাব্যতে বিচরণ ক ’ রে স্বচ্ছন্দে । স্থির হয়ে বসে পড়ে কঙ্কাবতী ’ কাব্যগ্রন্থে । যে কাব্যগ্রন্থে ‘ কঙ্কাবতী ’ দেখা দেয় অনৈসর্গিক হয়ে । ‘ কঙ্কাবতী ’ কাব্য রচনার পূর্বে ‘ কঙ্কাবতীকে ’ দেখা দেয় অনৈসর্গিক হয়ে । ‘ কঙ্কাবতী ’ কাব্য রচনার পূর্বে কঙ্কাবতীকে আমরা দেখতে পাই অন্য কোনো কবিতায় । যেখানে সে প্রেমিকার কাছে হয়ে ওঠে কুৎসিত কঙ্কাল ব্যতীত অন্য কিছু নয় । প্রগাঢ় ভাবে প্রাপ্তির জন্যে সমস্ত কবিতা জুঁড়ে দেখতে পাই কবির অপরিবর্তনীয় আবেদন । কঙ্কাবতী , যাঁর সাথে কিছু বাক্য বিনিময়ের জন্যে রক্তের হিমবাহে দেখা দেয় চঞ্চলতা । সুপ্রিয়া প্রেমিকা মুখ তোলা মাত্র কবি হাঁরিয়ে ফেলেন ওই সৌন্দর্যময় বাক্যগুলো , যা বলার জন্যে অপেক্ষায় ছিলেন কবি দীর্ঘদিন । প্রেমিকা যখন খুব কাছাকাছি হয়ে এগিয়ে আসেন , ওই ব্যর্থ ...

প্রবন্ধঃ অমিয় চক্রবর্তী : ‘বৃষ্টি’ নিয়ে তিনটি কবিতা

রবীন্দ্রনাথ, মেঘ-বরষা বৃষ্টি নিয়ে এতো সংখ্যক কবিতা লিখেছেন যে তাঁর সমান বা সমসংখ্যক কবিতা বাঙলায় কেউ লিখেনি। রবীন্দ্রনাথ, যাঁর কবিতায় বার বার এবং বহুবার ফিরে ফিরে এসেছে মেঘ, বরষা, বৃষ্টি। বৃষ্টি নামটি নিলেই মনে পড়ে কৈশোর পেড়িয়ে আসা রবীন্দ্রনাথের ওই কবিতাটির কথা। ‘দিনের আলো নিবে এল সূর্য্যি ডোবে ডোবে আকাশ ঘিরে মেঘ জুটেছে চাঁদের লোভে লোভে।’ বৃষ্টি নিয়ে কবিতা পড়ার কথা মনে পড়লে এটাই চলে আসে আমার মনে। অমিয় চক্রবর্তী বৃষ্টি নিয়ে লিখেছেন বেশ কিছু কবিতা। বাঙলায় বৃষ্টি নিয়ে কবিতা লিখেনি এমন কবির সংখ্যা খুব কম বা নেই বললেই চলে। অমিয় চক্রবর্তী, যাঁর কবিতায় পাই ‘বৃষ্টি’ নামক কিছু সৌন্দর্যময় কবিতা। যে কবিতাগুলো আমাকে বিস্ময় বিমুগ্ধ ক’রে। ওই কবিদের কারো কারো কবিতা দ্রুত নিঃশ্বাসে পড়া সম্ভবপর হয়ে উঠে না। বৃষ্টি নামক প্রথম কবিতাটি পাওয়া যাবে অমিয় চক্রবর্তীর ‘একমুঠোতে’। উন্নিশটি কবিতা নিয়ে গ’ড়ে উঠে ‘একমুঠো’ নামক কাব্য গ্রন্থটি। যেখান থেকে শ্রেষ্ঠ কবিতায় তুলে নেওয়া হয় চারটি কবিতা। আমার আরো ভালোলাগে ‘বৃষ্টি’ কবিতাটি ওই তালিকায় উঠে আসে। শ্রেষ্ঠ কবিতায় না আসলে আমার যে খুব খারাপ লাগতে তা-ও নয়। ওই কবিতা...

প্রবন্ধঃ সুধীন্দ্রনাথ দত্তের প্রবন্ধ সংগ্রহ

সুধীন্দ্রনাথ , সাতটি কাব্যগ্রন্থের মতো সাতটি প্রবন্ধের গ্রন্থ লিখলে খারাপ হতো না , বেশ ভালোই হতো । সুধীন্দ্রনাথের প্রবন্ধগুলো হালকা মানের নয় , যদিও তাঁর কোন রচনাই হালকা নয় । সাহিত্যে বিচারে তা অনেক উঁচুমানের । তার উপর ভাষার ব্যাপারটি তো রয়েছেই । সুধীন্দ্রনাথ মাত্র দুটি প্রবন্ধ গ্রন্থ রচনা করেছেন । গ্রন্থ দুটো ‘ স্বগত ’ ( ১৩৪৫ ঃ ১৯৩৮ ), অপরটি ‘ কুলায় ও কালপুরুষ ’ ( ১৩৬৪ : ১৯৫৭ ) । ‘ স্বগত ’- তে রয়েছে ষোলটি প্রবন্ধ । গ্রন্থ দুটি তিনি রচনা করেছেন দু ’ ভাগে । লরেন্স বা এলিয়ট এর প্রবন্ধ যেমন পাওয়া যাবে না ‘ কুলায় ও কালপুরুষ ’- এ ; তেমনি রবীন্দ্র সম্পর্কিত প্রবন্ধ নেওয়া হয়নি ‘ স্বগত ’- এ । প্রকাশ কাল অনুযায়ী ‘ স্বগত ’- এর প্রবন্ধসমূহ : ‘ কাব্যের মুক্তি ’ ( ১৯৩০ ); ‘ ধ্রুপদ পদ - খেয়াল ’ ( ১৯৩২ ), ‘ ফরাসীর হাদ্য পরিবর্তন ’ ( ১৯৩২ ), ‘ লিটনস্ট্রেচি ’ ( ১৯৩২ ), ‘ লরেন্স ও ভার্জনিয়া উল্ফ্ ’ ( ১৯৩২ ), ‘ উপন্যাস তত্ত্ব ও তথ্য ’ ( ১৯৩৩ ), ‘ উইলিয়ম ফকনর ’ ( ১৯৩৪ ), ‘ ঐতিহ্য ও টি , এস , এলিয়ট ’ ( ১৯৩৪ ), ...