সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

কবিতাঃ একটু দাঁড়াবো, অতঃপর চলে যাবো


একটু দাঁড়াবো, অতঃপর চলে যাবো তোমার ছায়া থেকে অনেক দূরে,
রুপালী স্বপ্নের আঁখিপাতে, কিছু বলবো না তোমাকে; কখনোও যা বলিনি,
প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির কোন কিছুই নেই আমার গৌরব করার মত;
যেখানে থাকতে পারে শূন্যয় ভেঙে পড়া মানবিক সম্পর্কের নীল চিহ্ন  
সমুদ্রের ছায়ায়, জ্যোৎস্নার ভিতরে মিশে থাকে কঠিন রুপ রক্তের হিমে
আশ্বিনের বাতাসে উ’ড়ে যায় আমার সকল চেতনা তার আপন লক্ষে,
শিশিরের জলে, ছুঁয়ে যাওয়া নিঃশব্দ প’ড়ে থাকে হৃদয়ের সকল
গোপনীয়তার ঠোঁটে; অন্ধ ও নিশীথ আঁখিকোণে কাপা আঙ্গুলের সুরে
প্রস্ফুটিত কোমলে ঝ’ড়ে প’ড়ে বিক্ষিপ্ত জ্যোতির্ময় অমল আলোকে;
নান্দনিকতা যেন ছুঁয়ে যায় সৌন্দর্যের অমল ঠোঁটে শিশিরের ফোঁটায়,
রক্তলাল হৃদপিণ্ডে গেঁথে থাকে ঝকঝকে নীল আলো শ্রাবণের ধারায়
আপন শরীরে, ব্যর্থতার স্পর্শহীন সম্পর্ক মসৃণ ক’রে তোলে নিসর্গ বনে;
আমার জ্যোৎস্নাময় পবিত্র দুই ঠোঁট কেঁপে কেঁপে বেজে যায় নিরবধি,
মায়াবী আঙুলের নীলছোঁয়ায় মৃত্তিকা নেই পদতলে স্বপ্নের গভীরে
তোমার একফোঁটা চোখের জলে দাঁড়িয়ে থাকে আমার বেড়ে উঠা স্বপ্ন
শতাব্দীর সূর্যকরোজ্জ্ব্ল মধ্যেদিনে, দীপাবলির জ্বেলে উঠা আলোয়
জলপাই রঙের সৌন্দর্যে মিশে থাকে আমার সকল শূন্যতা জ্যোৎস্নার
নির্জনে, বিচ্ছেদে মিশে থাকে লাল-নীল নিসর্গ প্রদীপ মায়াময় বাহুতে;
অনিন্দ্য ছায়া আমাকে নিয়ে যায় তোমার রক্তলাল হৃদপিণ্ডে;
মেঘের গভীরে জ’মে থাকে অলৌকিক রুপ তার স্নিগ্ধ হলুদ বনে;
দ্বীপপুঞ্জে গভীরে বেড়ে উঠি সম্পর্কহীন ভালোবাসায়; শিশিরের সবুজে  
নিসর্গ নীলিমায় শাদা নক্ষত্রের বু’কে জমে থাকে ভেজা চোখের মতো,
মৌলিক ভাবনার সৌন্দর্য আমার চতুর্দিকে, প্রস্ফুটি অনন্যতা তার তুলনাহীন
প্রস্তরভূমিতে বেড়ে উঠে আমাদের সম্পর্ক মিশে থাকে অবিচ্ছিন্নতা,
বৈচিত্র্য সৌন্দর্য গ’ড়ে উ’ঠে বিকশিত ভাবনার মর্মরে; পুঞ্জ মেঘে জমে থাকে
হারানো সুর আমার অলৌকিক ইন্দ্রিয়ে; নরম, মসৃণ ব্যর্থহীন জীবনে,
তুমি দাঁড়িয়ে থাকো আমার স্বপ্নের গভীরে রূপান্তরিত চেতনায়;
একটু দাঁড়াবো, অতঃপর চলে যাবো; তোমার ছায়া থেকে অনেকদুরে;
চন্দ্রমল্লিকার শুভ্রতা ছড়িয়ে যায় আমার ইন্দ্রিয়ে বস্তুপুঞ্জের তীব্র স্তরে।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

প্রবন্ধঃ বুদ্ধদেব বসু ও ‘কঙ্কাবতী’

বুদ্ধদেব বসু প্রেমের অজস্র কবিতা রচনা করেছেন । অন্য অনেকের মতো তিনিও বেছে নেন একজন প্রেমিকাকে , যে হ ’ য়ে উঠে বুদ্ধদেবের অতুল্য প্রেমিকা হিশেবে । ‘ কঙ্কাবতী ’ অনিন্দ্য প্রেমিকা হ ’ য়ে বুদ্ধদেবের কাব্যতে বিচরণ ক ’ রে স্বচ্ছন্দে । স্থির হয়ে বসে পড়ে কঙ্কাবতী ’ কাব্যগ্রন্থে । যে কাব্যগ্রন্থে ‘ কঙ্কাবতী ’ দেখা দেয় অনৈসর্গিক হয়ে । ‘ কঙ্কাবতী ’ কাব্য রচনার পূর্বে ‘ কঙ্কাবতীকে ’ দেখা দেয় অনৈসর্গিক হয়ে । ‘ কঙ্কাবতী ’ কাব্য রচনার পূর্বে কঙ্কাবতীকে আমরা দেখতে পাই অন্য কোনো কবিতায় । যেখানে সে প্রেমিকার কাছে হয়ে ওঠে কুৎসিত কঙ্কাল ব্যতীত অন্য কিছু নয় । প্রগাঢ় ভাবে প্রাপ্তির জন্যে সমস্ত কবিতা জুঁড়ে দেখতে পাই কবির অপরিবর্তনীয় আবেদন । কঙ্কাবতী , যাঁর সাথে কিছু বাক্য বিনিময়ের জন্যে রক্তের হিমবাহে দেখা দেয় চঞ্চলতা । সুপ্রিয়া প্রেমিকা মুখ তোলা মাত্র কবি হাঁরিয়ে ফেলেন ওই সৌন্দর্যময় বাক্যগুলো , যা বলার জন্যে অপেক্ষায় ছিলেন কবি দীর্ঘদিন । প্রেমিকা যখন খুব কাছাকাছি হয়ে এগিয়ে আসেন , ওই ব্যর্থ ...

প্রবন্ধঃ অমিয় চক্রবর্তী : ‘বৃষ্টি’ নিয়ে তিনটি কবিতা

রবীন্দ্রনাথ, মেঘ-বরষা বৃষ্টি নিয়ে এতো সংখ্যক কবিতা লিখেছেন যে তাঁর সমান বা সমসংখ্যক কবিতা বাঙলায় কেউ লিখেনি। রবীন্দ্রনাথ, যাঁর কবিতায় বার বার এবং বহুবার ফিরে ফিরে এসেছে মেঘ, বরষা, বৃষ্টি। বৃষ্টি নামটি নিলেই মনে পড়ে কৈশোর পেড়িয়ে আসা রবীন্দ্রনাথের ওই কবিতাটির কথা। ‘দিনের আলো নিবে এল সূর্য্যি ডোবে ডোবে আকাশ ঘিরে মেঘ জুটেছে চাঁদের লোভে লোভে।’ বৃষ্টি নিয়ে কবিতা পড়ার কথা মনে পড়লে এটাই চলে আসে আমার মনে। অমিয় চক্রবর্তী বৃষ্টি নিয়ে লিখেছেন বেশ কিছু কবিতা। বাঙলায় বৃষ্টি নিয়ে কবিতা লিখেনি এমন কবির সংখ্যা খুব কম বা নেই বললেই চলে। অমিয় চক্রবর্তী, যাঁর কবিতায় পাই ‘বৃষ্টি’ নামক কিছু সৌন্দর্যময় কবিতা। যে কবিতাগুলো আমাকে বিস্ময় বিমুগ্ধ ক’রে। ওই কবিদের কারো কারো কবিতা দ্রুত নিঃশ্বাসে পড়া সম্ভবপর হয়ে উঠে না। বৃষ্টি নামক প্রথম কবিতাটি পাওয়া যাবে অমিয় চক্রবর্তীর ‘একমুঠোতে’। উন্নিশটি কবিতা নিয়ে গ’ড়ে উঠে ‘একমুঠো’ নামক কাব্য গ্রন্থটি। যেখান থেকে শ্রেষ্ঠ কবিতায় তুলে নেওয়া হয় চারটি কবিতা। আমার আরো ভালোলাগে ‘বৃষ্টি’ কবিতাটি ওই তালিকায় উঠে আসে। শ্রেষ্ঠ কবিতায় না আসলে আমার যে খুব খারাপ লাগতে তা-ও নয়। ওই কবিতা...

প্রবন্ধঃ সুধীন্দ্রনাথ দত্তের প্রবন্ধ সংগ্রহ

সুধীন্দ্রনাথ , সাতটি কাব্যগ্রন্থের মতো সাতটি প্রবন্ধের গ্রন্থ লিখলে খারাপ হতো না , বেশ ভালোই হতো । সুধীন্দ্রনাথের প্রবন্ধগুলো হালকা মানের নয় , যদিও তাঁর কোন রচনাই হালকা নয় । সাহিত্যে বিচারে তা অনেক উঁচুমানের । তার উপর ভাষার ব্যাপারটি তো রয়েছেই । সুধীন্দ্রনাথ মাত্র দুটি প্রবন্ধ গ্রন্থ রচনা করেছেন । গ্রন্থ দুটো ‘ স্বগত ’ ( ১৩৪৫ ঃ ১৯৩৮ ), অপরটি ‘ কুলায় ও কালপুরুষ ’ ( ১৩৬৪ : ১৯৫৭ ) । ‘ স্বগত ’- তে রয়েছে ষোলটি প্রবন্ধ । গ্রন্থ দুটি তিনি রচনা করেছেন দু ’ ভাগে । লরেন্স বা এলিয়ট এর প্রবন্ধ যেমন পাওয়া যাবে না ‘ কুলায় ও কালপুরুষ ’- এ ; তেমনি রবীন্দ্র সম্পর্কিত প্রবন্ধ নেওয়া হয়নি ‘ স্বগত ’- এ । প্রকাশ কাল অনুযায়ী ‘ স্বগত ’- এর প্রবন্ধসমূহ : ‘ কাব্যের মুক্তি ’ ( ১৯৩০ ); ‘ ধ্রুপদ পদ - খেয়াল ’ ( ১৯৩২ ), ‘ ফরাসীর হাদ্য পরিবর্তন ’ ( ১৯৩২ ), ‘ লিটনস্ট্রেচি ’ ( ১৯৩২ ), ‘ লরেন্স ও ভার্জনিয়া উল্ফ্ ’ ( ১৯৩২ ), ‘ উপন্যাস তত্ত্ব ও তথ্য ’ ( ১৯৩৩ ), ‘ উইলিয়ম ফকনর ’ ( ১৯৩৪ ), ‘ ঐতিহ্য ও টি , এস , এলিয়ট ’ ( ১৯৩৪ ), ...