সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

কবিতাঃ মেঘে মেঘে স্বপ্ন ভাসে


মেঘে-মেঘে স্বপ্ন ভাসে আমার নিশীথের আড়ালে; হলুদ বনে বাতাসের কোমল সুরে,
মিশে থাকি আরও গাঢ় হ’য়ে, আকাশের কানে কানে; গন্ধ মিশে যায় চাঁদের রুপালী
আলোয়; আমার চেতনায় লাল হ’য়ে, কথা বলি আপন মনে স্বপ্নের সাথে, ঝ’রে যায়
শিশিরে আঁধারের স্পর্শে, খোলা হাওয়ায় উড়িয়ে দিই আমার সকল ভাবনা তার গন্ধে;
স্পর্শে ছুঁয়ে যায় তার বাহুতে কেঁপে-কেঁপে, ভেঙে প’ড়ে সকল সম্পর্ক আশ্চার্য শরীরে,  
বসন্তের উৎসবে মেতে উঠি কঠিন চুম্বনে; তাঁদের চুলে গেঁথে থাকে আমার ব্যর্থ স্বপ্ন
লাল আগুনের মতো, গাঢ় অন্ধকারে দিক্বিদিক খুঁজে বেড়াই জীবনের ঐশ্বর্যময় সম্পর্ক
অদৃশ্য ছায়ায়, সকল মহিমা ম্লান হ’য়ে যায় মুহূর্তে, নিবিড় চোখের কল্পনায় জ্যোতির্ময়
নীল বুকে, মেঘের ছায়ায়, কুয়াশায় মিশে থাকে বৃষ্টির কঠিন শব্দে, বুকের মধ্যে সুরে
সুরে রাত্রির বিচ্ছেদে, চৈত্রের হাওয়ায় আমিও মিশে থাকি আনন্দের প্রবাহিত ঢেউয়ের

বিবর্ণ ছড়ানো রঙে, রক্তের হিম পল্লবে ঝ’রে প’ড়ে সন্ধ্যাতারা মুহূর্তের পরম সৌন্দর্যে,
তাঁদেরকে হৃদয়ের গভীরে লুকিয়ে রাখি মুগ্ধ উজ্জ্বল আলোয়; রাত্রির গভীর অন্ধকারে
হারিয়ে ফেলি উম্মিলীত নিবিড় লগ্নে, স্তব্ধ পরস্পরে মেঘপুঞ্জের আড়ালে পবিত্র প্রেমে;
আমার সম্পর্ক লুপ্ত হ’য়ে যায় আলো-আঁধারের রহস্যময় অন্ধকারে; সুরের মূর্ছনায় তা
ভুলে যাই বিষাদের আঁখিপাতে, স্নিগ্ধ আমার কঠিন প্রেম, দীর্ঘজীবী হও শাদা মেঘের
ঢেউয়ের বু’কে সুগভীর প্রতিধ্বনিতে, সবুজ পল্লবে তাঁদের রেখে দিই চাঁদের আলোয়
ছড়িয়ে প’ড়ে দিগন্তের জলের স্রোতে, ব্যর্থ আমার রচিত সকল সুর, নিবেদিত প্রাণে
বেঁধে রাখি ফাল্গুনের হাওয়ায়; আশ্চার্য সৌন্দর্য ফু’টে উ’ঠে শুভ্র আগুনের মত আমার
বু’কে উত্তাল সমুদ্রের ঢেউয়ে; স্পর্শ আর ভালোবাসায় তাঁদের ডাকি না নিবিড় সুরে;
ছুঁয়ে যাওয়া আঙুলে গেঁথে থাকে সকল ভাঙা সম্পর্ক আমার মেঘ আর স্বপ্নের সাথে;    


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

প্রবন্ধঃ বুদ্ধদেব বসু ও ‘কঙ্কাবতী’

বুদ্ধদেব বসু প্রেমের অজস্র কবিতা রচনা করেছেন । অন্য অনেকের মতো তিনিও বেছে নেন একজন প্রেমিকাকে , যে হ ’ য়ে উঠে বুদ্ধদেবের অতুল্য প্রেমিকা হিশেবে । ‘ কঙ্কাবতী ’ অনিন্দ্য প্রেমিকা হ ’ য়ে বুদ্ধদেবের কাব্যতে বিচরণ ক ’ রে স্বচ্ছন্দে । স্থির হয়ে বসে পড়ে কঙ্কাবতী ’ কাব্যগ্রন্থে । যে কাব্যগ্রন্থে ‘ কঙ্কাবতী ’ দেখা দেয় অনৈসর্গিক হয়ে । ‘ কঙ্কাবতী ’ কাব্য রচনার পূর্বে ‘ কঙ্কাবতীকে ’ দেখা দেয় অনৈসর্গিক হয়ে । ‘ কঙ্কাবতী ’ কাব্য রচনার পূর্বে কঙ্কাবতীকে আমরা দেখতে পাই অন্য কোনো কবিতায় । যেখানে সে প্রেমিকার কাছে হয়ে ওঠে কুৎসিত কঙ্কাল ব্যতীত অন্য কিছু নয় । প্রগাঢ় ভাবে প্রাপ্তির জন্যে সমস্ত কবিতা জুঁড়ে দেখতে পাই কবির অপরিবর্তনীয় আবেদন । কঙ্কাবতী , যাঁর সাথে কিছু বাক্য বিনিময়ের জন্যে রক্তের হিমবাহে দেখা দেয় চঞ্চলতা । সুপ্রিয়া প্রেমিকা মুখ তোলা মাত্র কবি হাঁরিয়ে ফেলেন ওই সৌন্দর্যময় বাক্যগুলো , যা বলার জন্যে অপেক্ষায় ছিলেন কবি দীর্ঘদিন । প্রেমিকা যখন খুব কাছাকাছি হয়ে এগিয়ে আসেন , ওই ব্যর্থ ...

প্রবন্ধঃ অমিয় চক্রবর্তী : ‘বৃষ্টি’ নিয়ে তিনটি কবিতা

রবীন্দ্রনাথ, মেঘ-বরষা বৃষ্টি নিয়ে এতো সংখ্যক কবিতা লিখেছেন যে তাঁর সমান বা সমসংখ্যক কবিতা বাঙলায় কেউ লিখেনি। রবীন্দ্রনাথ, যাঁর কবিতায় বার বার এবং বহুবার ফিরে ফিরে এসেছে মেঘ, বরষা, বৃষ্টি। বৃষ্টি নামটি নিলেই মনে পড়ে কৈশোর পেড়িয়ে আসা রবীন্দ্রনাথের ওই কবিতাটির কথা। ‘দিনের আলো নিবে এল সূর্য্যি ডোবে ডোবে আকাশ ঘিরে মেঘ জুটেছে চাঁদের লোভে লোভে।’ বৃষ্টি নিয়ে কবিতা পড়ার কথা মনে পড়লে এটাই চলে আসে আমার মনে। অমিয় চক্রবর্তী বৃষ্টি নিয়ে লিখেছেন বেশ কিছু কবিতা। বাঙলায় বৃষ্টি নিয়ে কবিতা লিখেনি এমন কবির সংখ্যা খুব কম বা নেই বললেই চলে। অমিয় চক্রবর্তী, যাঁর কবিতায় পাই ‘বৃষ্টি’ নামক কিছু সৌন্দর্যময় কবিতা। যে কবিতাগুলো আমাকে বিস্ময় বিমুগ্ধ ক’রে। ওই কবিদের কারো কারো কবিতা দ্রুত নিঃশ্বাসে পড়া সম্ভবপর হয়ে উঠে না। বৃষ্টি নামক প্রথম কবিতাটি পাওয়া যাবে অমিয় চক্রবর্তীর ‘একমুঠোতে’। উন্নিশটি কবিতা নিয়ে গ’ড়ে উঠে ‘একমুঠো’ নামক কাব্য গ্রন্থটি। যেখান থেকে শ্রেষ্ঠ কবিতায় তুলে নেওয়া হয় চারটি কবিতা। আমার আরো ভালোলাগে ‘বৃষ্টি’ কবিতাটি ওই তালিকায় উঠে আসে। শ্রেষ্ঠ কবিতায় না আসলে আমার যে খুব খারাপ লাগতে তা-ও নয়। ওই কবিতা...

প্রবন্ধঃ সুধীন্দ্রনাথ দত্তের প্রবন্ধ সংগ্রহ

সুধীন্দ্রনাথ , সাতটি কাব্যগ্রন্থের মতো সাতটি প্রবন্ধের গ্রন্থ লিখলে খারাপ হতো না , বেশ ভালোই হতো । সুধীন্দ্রনাথের প্রবন্ধগুলো হালকা মানের নয় , যদিও তাঁর কোন রচনাই হালকা নয় । সাহিত্যে বিচারে তা অনেক উঁচুমানের । তার উপর ভাষার ব্যাপারটি তো রয়েছেই । সুধীন্দ্রনাথ মাত্র দুটি প্রবন্ধ গ্রন্থ রচনা করেছেন । গ্রন্থ দুটো ‘ স্বগত ’ ( ১৩৪৫ ঃ ১৯৩৮ ), অপরটি ‘ কুলায় ও কালপুরুষ ’ ( ১৩৬৪ : ১৯৫৭ ) । ‘ স্বগত ’- তে রয়েছে ষোলটি প্রবন্ধ । গ্রন্থ দুটি তিনি রচনা করেছেন দু ’ ভাগে । লরেন্স বা এলিয়ট এর প্রবন্ধ যেমন পাওয়া যাবে না ‘ কুলায় ও কালপুরুষ ’- এ ; তেমনি রবীন্দ্র সম্পর্কিত প্রবন্ধ নেওয়া হয়নি ‘ স্বগত ’- এ । প্রকাশ কাল অনুযায়ী ‘ স্বগত ’- এর প্রবন্ধসমূহ : ‘ কাব্যের মুক্তি ’ ( ১৯৩০ ); ‘ ধ্রুপদ পদ - খেয়াল ’ ( ১৯৩২ ), ‘ ফরাসীর হাদ্য পরিবর্তন ’ ( ১৯৩২ ), ‘ লিটনস্ট্রেচি ’ ( ১৯৩২ ), ‘ লরেন্স ও ভার্জনিয়া উল্ফ্ ’ ( ১৯৩২ ), ‘ উপন্যাস তত্ত্ব ও তথ্য ’ ( ১৯৩৩ ), ‘ উইলিয়ম ফকনর ’ ( ১৯৩৪ ), ‘ ঐতিহ্য ও টি , এস , এলিয়ট ’ ( ১৯৩৪ ), ...