সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

কবিতাঃ অতন্দ্রীলা, ভুলিনি তোমায়


                 জ্যোতির্ময় চাঁদ আর মেঘের দিকে মুখ রেখে আজও তোমায় খুজি অতন্দ্রীলা,
সেই সন্ধ্যায় আমরাইতো বেঁচে ছিলাম আমাদের মতো ক’রে নির্মম অগ্নিতে  
বসন্তের হাওয়ায় আমরা ভালোবাসলাম পরস্পরকে ভাবনার শাশ্বত আকাশে,
জ্যোতির্ময় তোমার মুগ্ধময় রূপ, আমার বুক আজও কাঁপে তার গভীর শূন্যতায়;  
রক্তাক্ত ক্ষতের চিহ্ন, সুধার তৃষ্ণায় রূপান্তরিত করলে তুমি নীলিমার আলিঙ্গনে;
নিস্তব্ধ মনের কোণে রোপণ করলে একশো একটি লাল গোলাপ আর শুভ্রতা
শিরায়-শিরায় ঝ’রে পড়লো আমাদের মিলিত সঙ্গীত উদ্দীপ্ত কোমল ইন্দ্রিয়ে,  

আশ্চার্য শরীরে গেঁথে দিলে শুভ্র দ্যুতি, নিবিড় স্তব্ধ রাত্রি, শিল্পীর তুলির স্পর্শে;
অপূর্ব মাধুর্যময় সেই সঙ্গীতের সুর, যা কেঁপে উ’ঠে হৃদয়ের উদ্দীপ্ত মর্মের ঠোঁটে  
গভীর ভালোবাসায় আমরা হারিয়ে গেলাম নীল রক্তস্রোতে কেঁপে উঠা মুহূর্তে
আদিম অন্ধকারে প’ড়ে রইলো আমাদের অর্থহীন মুখচ্ছবি স্তব্ধ স্মৃতির আড়ালে
মেঘমালার পুঞ্জ-পুঞ্জ শিশিরে ছুঁয়ে গেল কোমল সৌরভ, আঁখির দুর্ভেদ্য নিশীথে;
গ’লে-গ’লে ঝ’রে পড়লো দু’চোখের অশ্রুবিন্দু, তৃষ্ণাতো শরীরে বৃষ্টির ছোঁয়ায়
অলৌকিক কণ্ঠস্বরে ম্লান হ’লো আমাদের প্রস্ফুটিত স্বরমালা বসন্তের নিরুদ্দেশে

সবুজ জ্যোৎস্নার নিঃসঙ্গ আঙ্গুলের ছোঁয়ায় তুমি ভুলে গেলে তোমার দীর্ঘ অতীত,
প্রবাহিত বর্তমান আর উজ্জ্বল ভবিষাৎ, পবিত্র শরীরে নিঃশব্দে মুহূর্তে অন্তরালে
নিসর্গ সন্ধ্যায় নক্ষত্রের ছুঁয়ে যাওয়া অঝোর বৃষ্টির ফোঁটায় নীরব ভালোবাসায়
                হারিয়ে গেলাম ইন্দ্রিয়ের অপরূপ লাবণ্যের মাঝে গভীর অরণ্যেয় নিবিড় নিমগ্নে;
                যেখানে সম্পর্কের চেয়ে অনেক বেশি ফু’টে উ’ঠে সংগীতের স্পর্শময় সুমধুর
অন্ধ ভালোবাসায় ছুঁয়ে যাওয়া প্রাণে, ঢেউয়ের গভীর থেকে শব্দের সুরে-সুরে
                ভেসে আসা স্বপ্নে, প্রোজ্জ্বল ঝলোমলো ঠোঁটের কোণে মেঘের অপরূপ শরীরে,  

অতন্দ্রীলা, তোমাকে গেঁথে রাখি কবিতার পংক্তিতে, স্বপ্ন ও দুঃস্বপ্নের চোখে;
     

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

প্রবন্ধঃ বিষ্ণু দে : ‘উর্বশী ও আর্টেমিস’ থেকে ‘চোরাবালি’

বিষ্ণু দে , তিরিশি কবিদের অন্যতম । কবিতা রচনাই যাঁর কাছে এক এবং অদ্বিতীয় হ ’ য়ে দেখা দেয় । কাব্যে সংখ্যার দিক থেকে অতিক্রম করেছেন সতীর্থদের । বিষ্ণু দে , যাঁর কবিতা রচনার সূচনা পর্বটিও শুরু হয় খুব দ্রুততম সময়ে । কবিতা সৃষ্টির পর্বটি অব্যাহত রেখেছেন সর্বদা । পঁচিশটি কবিতা নিয়ে ‘ উর্বশী ও আর্টেমিস ’- এ নিজেকে প্রকাশ করেন স্ব - মহিমায় । যে কবিতাগুলা বিস্ময়বিমুগ্ধ ক ’ রে অন্যেদেরকেও । ওই কবিতা শুধু বিষ্ণু দে ’ কে নয় , বরং নতুনতর হ ’ য়ে দেখা দেয় বাঙলা কবিতা । বিষ্ণু দে ’ র ‘ উর্বশী ও আর্টেমিস ’ রবীন্দ্রনাথকে পড়তে হয়েছিল দু ’ বার । ‘ উর্বশী ও আর্টেমিস ’- এর কবিতাগুলির রচনাকালের ব্যাপ্তি দেওয়া আছে ( ১৯২৮ - ১৯৩৩ ) সময়ের মধ্যে , এবং গ্রন্থকারে প্রকাশ পায় ওই একই বছরে অর্থাৎ , ১৯৩৩ - এ । কিন্তু রচনাকালের ব্যাপ্তি ১৯২৮ দেওয়া থাকলেও প্রকৃত পক্ষে এ সকল কবিতাগুলো রচনা পর্ব শুরু হয় আরো দু ’ বছর পূর্বে অর্থাৎ , ১৯২৬ - এ । যখন কবি হিশেবে বিষ্ণু দে একেবারেই নতুন এবং নবীন । ১৯৩৩ - এ ...

প্রবন্ধঃ অমিয় চক্রবর্তী : ‘বৃষ্টি’ নিয়ে তিনটি কবিতা

রবীন্দ্রনাথ, মেঘ-বরষা বৃষ্টি নিয়ে এতো সংখ্যক কবিতা লিখেছেন যে তাঁর সমান বা সমসংখ্যক কবিতা বাঙলায় কেউ লিখেনি। রবীন্দ্রনাথ, যাঁর কবিতায় বার বার এবং বহুবার ফিরে ফিরে এসেছে মেঘ, বরষা, বৃষ্টি। বৃষ্টি নামটি নিলেই মনে পড়ে কৈশোর পেড়িয়ে আসা রবীন্দ্রনাথের ওই কবিতাটির কথা। ‘দিনের আলো নিবে এল সূর্য্যি ডোবে ডোবে আকাশ ঘিরে মেঘ জুটেছে চাঁদের লোভে লোভে।’ বৃষ্টি নিয়ে কবিতা পড়ার কথা মনে পড়লে এটাই চলে আসে আমার মনে। অমিয় চক্রবর্তী বৃষ্টি নিয়ে লিখেছেন বেশ কিছু কবিতা। বাঙলায় বৃষ্টি নিয়ে কবিতা লিখেনি এমন কবির সংখ্যা খুব কম বা নেই বললেই চলে। অমিয় চক্রবর্তী, যাঁর কবিতায় পাই ‘বৃষ্টি’ নামক কিছু সৌন্দর্যময় কবিতা। যে কবিতাগুলো আমাকে বিস্ময় বিমুগ্ধ ক’রে। ওই কবিদের কারো কারো কবিতা দ্রুত নিঃশ্বাসে পড়া সম্ভবপর হয়ে উঠে না। বৃষ্টি নামক প্রথম কবিতাটি পাওয়া যাবে অমিয় চক্রবর্তীর ‘একমুঠোতে’। উন্নিশটি কবিতা নিয়ে গ’ড়ে উঠে ‘একমুঠো’ নামক কাব্য গ্রন্থটি। যেখান থেকে শ্রেষ্ঠ কবিতায় তুলে নেওয়া হয় চারটি কবিতা। আমার আরো ভালোলাগে ‘বৃষ্টি’ কবিতাটি ওই তালিকায় উঠে আসে। শ্রেষ্ঠ কবিতায় না আসলে আমার যে খুব খারাপ লাগতে তা-ও নয়। ওই কবিতা...

প্রবন্ধঃ বুদ্ধদেব বসু ও ‘কঙ্কাবতী’

বুদ্ধদেব বসু প্রেমের অজস্র কবিতা রচনা করেছেন । অন্য অনেকের মতো তিনিও বেছে নেন একজন প্রেমিকাকে , যে হ ’ য়ে উঠে বুদ্ধদেবের অতুল্য প্রেমিকা হিশেবে । ‘ কঙ্কাবতী ’ অনিন্দ্য প্রেমিকা হ ’ য়ে বুদ্ধদেবের কাব্যতে বিচরণ ক ’ রে স্বচ্ছন্দে । স্থির হয়ে বসে পড়ে কঙ্কাবতী ’ কাব্যগ্রন্থে । যে কাব্যগ্রন্থে ‘ কঙ্কাবতী ’ দেখা দেয় অনৈসর্গিক হয়ে । ‘ কঙ্কাবতী ’ কাব্য রচনার পূর্বে ‘ কঙ্কাবতীকে ’ দেখা দেয় অনৈসর্গিক হয়ে । ‘ কঙ্কাবতী ’ কাব্য রচনার পূর্বে কঙ্কাবতীকে আমরা দেখতে পাই অন্য কোনো কবিতায় । যেখানে সে প্রেমিকার কাছে হয়ে ওঠে কুৎসিত কঙ্কাল ব্যতীত অন্য কিছু নয় । প্রগাঢ় ভাবে প্রাপ্তির জন্যে সমস্ত কবিতা জুঁড়ে দেখতে পাই কবির অপরিবর্তনীয় আবেদন । কঙ্কাবতী , যাঁর সাথে কিছু বাক্য বিনিময়ের জন্যে রক্তের হিমবাহে দেখা দেয় চঞ্চলতা । সুপ্রিয়া প্রেমিকা মুখ তোলা মাত্র কবি হাঁরিয়ে ফেলেন ওই সৌন্দর্যময় বাক্যগুলো , যা বলার জন্যে অপেক্ষায় ছিলেন কবি দীর্ঘদিন । প্রেমিকা যখন খুব কাছাকাছি হয়ে এগিয়ে আসেন , ওই ব্যর্থ ...